বিধানসভা পরে লোকসভা— জয়ের ব্যবধান ক্রমশ নেমেছে। তবুও জোটপ্রার্থী আশাবাদী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী বিধানসভা কেন্দ্র। জোটের ভোট বিন্যাস অনুযায়ী, নামেই জোট প্রার্থী। বাসন্তী বিধানসভায় সিপিএম ও কংগ্রেসের ভোটের হার শতাংশ না ভগ্নাংশ সেই বিষয়ে হিসেব করলে বিভ্রান্ত হবে যে কেউ-ই। জোট নয়। মূলত লড়াই আরএসপি বনাম তৃণমূল।
আরএসপি নেতাদের কথায়, ২০১১ প্রবল বিরোধী হাওয়ায় বাসন্তী আসন ধরে রেখেছিল আরএসপি। তারপর পঞ্চায়েত ও লোকসভায় শুধু ভোট লুঠ হয়েছে বলে দাবি করছেন আরএসপি নেতৃত্ব। গত লোকসভা নির্বাচনে আঠারোবাঁকি, চড়াবিদ্যা ও কাঁঠালবেড়িয়া এলাকায় ৪৪টি বুথ লুঠ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তারপরে ১৭০০ ভোটে পিছিয়ে গিয়েছেন জোট প্রার্থী সুভাষ নস্কর।
গত লোকসভা নির্বাচনের পরে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এ বার ভোটের ময়দানে শাসক ও জোটের লড়াই। ২০১১ সালে পালা বদলের পরে সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন বহু আরএসপি নেতা, কর্মী, সমর্থক। পালা বদলের পরে দলও পরিবর্তন করেছেন অনেকে। আরএসপি ছেড়ে তৃণমূলের যোগ দেওয়ার সংখ্যাও খারাপ নয়। গত লোকসভা নির্বাচনে ‘লাল তৃণমূল’-এর ভোট শাসক দলের ঝুলিতেই গিয়েছে বলে দাবি করছেন জোটপন্থীরা। তা সত্ত্বেও মাত্র ১৭০০ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন সুভাষবাবু।
বাসন্তী বিধানসভা কেন্দ্রে মূলত দ্বিমুখী লড়াই। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে পাল্লা ভারী তৃণমূলের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতি পুরনো মুখ গোবিন্দ নস্করকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বয়সের ভারে যথেষ্ট ক্লান্ত গোবিন্দবাবু। প্রায় ৯০ ছুঁইছুঁই গোবিন্দবাবুকে প্রার্থী করা হয়েছে। শাসক দলে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতেই গোবিন্দবাবুকে প্রার্থী করা হল বলে তৃণমূলের অন্দরে খবর।
বয়সের ভারে ক্লান্ত হলেও গোবিন্দবাবু ভোটের ময়দানে লড়াই দিচ্ছেন বলে দাবি করছেন তৃণমূল কর্মীরা। গোবিন্দবাবুর কথায়, ‘‘বাসন্তী উন্নয়নের জোয়ার থেকে বঞ্চিত। সে কারণেই আমি প্রার্থী হয়েছি। এ বার বাসন্তীতে উন্নয়ন হবে।’’
কিন্তু গোবিন্দবাবুর উন্নয়নের বার্তাকে নস্যাৎ করছেন জোট প্রার্থী সুভাষবাবু। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে রয়েছে। সেখানে সরকারি নানা পরিষেবার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গ্রামীণ উন্নয়ন তো এখন মূলত পঞ্চায়েতের অধীনেই। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে শোষণ করা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘একদিকে ভোট লুঠ করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। আর একদিকে সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’’
লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে শাসক দলের পাল্লা ভারী হলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিন্তু গোবিন্দবাবুর ভোট ম্যানেজারদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। আর রাজ্যে পালা বদলের পরে নানা চাপে পড়ে যে সব বামপন্থীরা তৃণমূলের ঝান্ডা ঘাড়ে তুলে নিয়েছিলেন, তাঁরা কোন খেলা খেলেন, তা নিয়েও চিন্তায় আছে তৃণমূল শিবিরের একাংশ।
তবে গোবিন্দবাবু বিচলিত নন। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বামফ্রন্টের বড় দাদা সিপিএমের অত্যাচার সহ্য করেছেন আরএসপি সমর্থকেরা। পালা বদলের পরে মুক্ত বাতাস পেতেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ওঁরা। মনে হয় কোনও সমস্যা হবে না।’’
গোবিন্দবাবু হয় তো ‘লাল তৃণমূল’ নিয়ে বিচলিত নন, কিন্তু ওই ‘লাল-তৃণমূল’-ই আরএসপির ভোট ম্যানেজারদের ভরসা। আরএসপির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমাদের সমর্থকরা নানা চাপে পড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। মাস ছ’য়েক আগে থেকেই তাঁরা আমাদের সঙ্গে ফের যোগাযোগ রাখতে শুরু করেছেন। আমরা আশাবাদী। খেলা এ বার জমবেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy