Advertisement
১৩ অক্টোবর ২০২৪

কাঁকড়ার কামড়েই গঙ্গা পেরিয়ে হাওড়া উত্তরে প্রার্থী রূপা

কাঁকড়ার কামড় খেয়ে গঙ্গা পার হয়ে হাওড়ায় যেতে হল রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে স্থির হল, বিধানসভা ভোটে রূপাকে প্রার্থী করা হবে হাওড়া উত্তরে। আনন্দবাজার ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু দিন আগে রূপা বলেছিলেন, তাঁর দল বিজেপি-তেও কাঁকড়া রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৬ ০৩:২৭
Share: Save:

কাঁকড়ার কামড় খেয়ে গঙ্গা পার হয়ে হাওড়ায় যেতে হল রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে স্থির হল, বিধানসভা ভোটে রূপাকে প্রার্থী করা হবে হাওড়া উত্তরে। আনন্দবাজার ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু দিন আগে রূপা বলেছিলেন, তাঁর দল বিজেপি-তেও কাঁকড়া রয়েছে। তার কামড়ও তিনি খেয়েছেন। যার অর্থ, দলেরই অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে সক্রিয়। বিজেপি-র একাংশের ব্যাখ্যা, সেই কাঁকড়ার কামড়েই নিজের পছন্দের আসনের বদলে হাওড়া উত্তরে দাঁড়াতে হচ্ছে রূপাকে। তৃণমূল প্রার্থী এবং স্বনামধন্য ক্রিকেটার লক্ষীরতন শুক্লর বিরুদ্ধে তাঁকে লড়তে হবে।

বিজেপি-র দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়েছে এ দিন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ প্রার্থী হচ্ছেন জোড়াসাঁকো থেকে। দুধকুমার মণ্ডল রামপুরহাটে, দলের যুব মোর্চার প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি অমিতাভ রায় ব্যারাকপুরে এবং অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় ইংরেজবাজারে প্রার্থী হচ্ছেন। কামারহাটিতে কৃশানু মিত্র এবং চৌরঙ্গিতে রীতেশ তিওয়ারি টিকিট পেয়েছেন। এর আগে বিধানসভা উপ নির্বাচনে চৌরঙ্গিতে লড়ে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলেন রীতেশ। চন্দননগর থেকে চন্দন মিত্রকে প্রার্থী করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, জয়ের সম্ভাবনা নেই বলে তিনি পিছিয়ে এসেছেন। ফলে চন্দননগরে প্রার্থী আজ ঘোষণা হয়নি।

বিজেপি-র প্রথম দফার তালিকায় ৫২ জনের নাম ছিল। আরও ১৯৪ জন প্রার্থীর নাম তারা এ দিন ঘোষণা করেছে। ৪৮টি কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা এখনও বাকি।

‘দলে কাঁকড়ার কামড় খেয়েছি, তবে মলমও রয়েছে’
সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন।

বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, রূপা তাঁর আসন নিয়ে খুব খুশি নন। দিল্লিতে এ দিন বৈঠকের পরেও রূপার জন্য হাওড়া উত্তর এবং সাতগাছিয়া, দু’টি আসন রাখা রয়েছিল। বৈঠকের পর পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ দিল্লি থেকে রূপাকে ফোন করেন। রূপা তখন আর হাওড়া উত্তরে অমত করেননি। কিন্তু দলের এক নেতা জানান, রূপা প্রথমে জোড়াসাঁকো কিংবা রাসবিহারীর মতো কলকাতার আসন চেয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলি তাঁকে দেওয়া হয়নি। রূপা ভেবেছিলেন, প্রথম তালিকা ঘোষণার আগেই তাঁকে তাঁর পছন্দের কয়েকটি আসন বেছে নিতে বলা হবে। তাঁকে সামনে রেখেই দল ভোটে লড়বে। কিন্তু তাঁর নাম একেবারে শেষে ঘোষণা করা হল। তা-ও প্রত্যাশামতো ঢাকঢোল না পিটিয়ে কিছুটা নিঃশব্দে। সব মিলিয়ে রূপা ঈষৎ আশাহত হয়েছেন। হাওড়া উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি কর্মীরাও সকলে রূপাকে প্রার্থী পেয়ে সন্তুষ্ট নন। তাঁদের একাংশ এ দিন নানা ভাবে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন।

রূপা অবশ্য আজ কাঁক়ড়ার কামড়ের বিষয়টি লঘু করে বলেন, ‘‘আমি রাজনীতিতে এসেছি মাত্র এক বছর আগে। বিজেপি একটি জাতীয় দল। ফলে দলের প্রবীণ নেতারাও আমাকে পরখ করে নিতে চাইবেন। দলের যোগ্য এবং সিনিয়র নেতারা যদি কোনও আসনে দাঁড়াতে চান, তা হলে তো আমার সরে দাঁড়ানোই উচিত।’’ অর্থাৎ, রাহুলবাবুর জোড়াসাঁকোয় প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে তিনি সেখান থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে রূপার দাবি। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, রাহুলবাবু এ বার বিধানসভা ভোটে লড়তেই রাজি ছিলেন না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চাপেই তিনি দাঁড়াচ্ছেন।

তখন তিনি জানান, দলের মতে এবং নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যখন লড়তে হচ্ছে, তখন জোড়াসাঁকো থেকেই লড়বেন। কারণ লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্রে তিনি এগিয়ে ছিলেন।

বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, জেলাগুলিতেও একটু ওজনদার প্রার্থীর প্রয়োজন আছে বুঝে রূপাকে হাওড়া উত্তর এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ময়ূরেশ্বরে পাঠানো হয়েছে। কার্গিলে লড়াই করা কর্নেল দীপ্তিমান চৌধুরীকে প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে আসানসোলে। আজ দিল্লিতে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

এখন কোনও জনমত সমীক্ষাই বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে ধর্তব্যের মধ্যে রাখছে না। এই পরিস্থিতিতে লক্ষীরতনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রূপা কতটা আত্মবিশ্বাসী রূপা? তিনি বলেন, ‘‘হারি-জিতি, আমি পাঁচ বছর এই কেন্দ্রের জন্য থাকব। আর লক্ষীরতন শুক্ল ভাল না মন্দ জানি না। কিন্তু আজকের তারিখে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি যদি প্রার্থী হন, তা হলে সন্দেহ তো তৈরি হয়ই।’’

শুধু রূপা নন, অন্য প্রার্থী নিয়েও বিজেপি-র অন্দরে অসন্তোষ আছে। কামারহাটিতে কৃশানুর বদলে মহম্মদ আলমকে প্রার্থী করার দাবিতে এ দিন বিজেপি-র রাজ্য দফতরে বিক্ষোভ দেখান দলের একাংশ।

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE