এনএসজি-র ঘেরাটোপে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। পুরুলিয়ায় সুজিত মাহাতোর তোলা ছবি।
জঙ্গলমহলে প্রচারে এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগের জবাব দিলেন বিজেপি নেতা তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে গত ক’দিনে যে ক’টি সভা করেছেন মমতা, তার প্রতিটিতেই তিনি কেন্দ্রের রাজ্য সরকারের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ করেছেন। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে উন্নয়নের অনেক কাজ আটকে আছে বলেও দাবি করেন মমতা। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া, বান্দোয়ান ও রঘুনাথপুরে তিনটি সভা করে ওই অভিযোগ নস্যাৎ করেন রাজনাথ।
পুরুলিয়া রাস ময়দানের জনসভায় রাজনাথ জানান, রাজস্বের অর্থ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে রাজ্যগুলি আগে ৩২ শতাংশ পেত। সেটা বাড়িয়ে এখন ৪২ শতাংশ করা হয়েছে। তবু বঞ্চনার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আরও কত অর্থ চাই প্রশ্ন তুলে তিনি বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘ওই সব রাজ্যের দিকে তাকান। দেখুন, কী ভাবে সরকার চালাতে হয়। আমরা কৃষক, শ্রমিক-সহ সকলকেই দারিদ্র সীমার উপরে নিয়ে আসা চেষ্টা করছি। কেননা সমাজের কোনও অংশ দুর্বল থাকলে আমরা যে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি, তা সফল হবে না।’’ তাঁর দাবি, এ রাজ্যের সরকারকে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ দেওয়া হচ্ছে। তবু কেন উন্নত রাজ্যের তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ নেই তা পরিষ্কার নয়।
এই প্রসঙ্গেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উন্নয়ন প্রশ্নে সরাসরি আক্রমণ শানান মমতা নেতৃত্বাধীন গত পাঁচ বছরের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। বান্দোয়ান ও পুরুলিয়ার সভায় তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ৩৪ বছরের সিপিএম শাসনকে হটিয়ে তৃণমূলকে গদিতে বসিয়েছে। কিন্তু, তাঁরা আশাহত হয়েছেন। এই সরকার আগের সরকারের পদাঙ্কই অনুসরণ করেছে। এখানে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই। যোগ্য বেকার যুবকরা চাকরি পায় না।’’ তাঁর অভিযোগ, পরিবর্তনের পরে রাজ্যের মানুষ দেখলেন, বাম জমানায় গুন্ডারাজ, লাঠি, বোমা এ সব চলত। সেটাই চলছে তৃণমূলের রাজত্বেও।
বান্দোয়ানের ডব্লুডি মাঠের সভায় তিনি বিশেষ ভাবে তুলে এনেছেন আদিবাসী অনুন্নয়নের প্রসঙ্গ। বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ আদিবাসী রয়েছেন, এ কথা স্মরণ করিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা আদিবাসীদের ক্ষেত্র। ইতিহাসে আদিবাসী নেতাদের বীরত্বের কথা লেখা আছে। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় সিপিএম এবং তৃণমূল সরকারের আমলে আদিবাসীদের উন্নয়ন সেই অর্থে কিছুই হয়নি। সকলেই শহরের কথা ভেবেছেন গ্রামের কথা আদিবাসীদের কথা ভাবেননি।’’ এর পর তিনি হাত তুলে জনতার কাছে জানতে চান, গ্রামে পাকা সড়ক হয়েছে? স্কুল থাকলেও শিক্ষক আছে কি? হাসপাতালে ডাক্তার বা ওষুধ মেলে কি?
উপস্থিত জনতা না-এর পক্ষেই হাত তুলেছে।
জনতা অবশ্য তিনটি সভাতেই বিশেষ ছিল না। বান্দোয়ানে মেরেকেটে এক হাজার লোকের ভিড় হয়েছিল। তার চেয়ে অবস্থা কিছুটা ভাল রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বান্দা গ্রামের সভায়। সেখানে হাজার তিনকে মানুষ এসেছিলেন। পুরুলিয়াতেও সংখ্যাটা একই ছিল। তৃণমূল তাই রাজনাথের সভাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না। জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘বান্দোয়ান, পুরুলিয়া কিংবা রঘুনাথপুরে এর আগে আমাদের যে সভাগুলো হয়েছে, তার জনসমাগমের কাছে এ দিনের সভা পাত্তাই পাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy