Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে ভোট, সঙ্গে আবার সন্ত্রাসও

কেউ ভোট দিলেন শাসকের চোখরাঙানির প্রতিবাদে। কেউ ভোট দিলেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভোট দিলেন যিনি, তিনি ভোট দিয়ে বেরোনোর পরে আক্রান্ত হলেন ফের।

প্রহৃত প্রদীপ মাঝি।— নিজস্ব চিত্র

প্রহৃত প্রদীপ মাঝি।— নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাস
মধ্যমগ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০০:৪৩
Share: Save:

কেউ ভোট দিলেন শাসকের চোখরাঙানির প্রতিবাদে। কেউ ভোট দিলেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভোট দিলেন যিনি, তিনি ভোট দিয়ে বেরোনোর পরে আক্রান্ত হলেন ফের।

প্রতিবাদ এবং সন্ত্রাস—বিধানসভা ভোটে এই দুইয়েরই সাক্ষী রইল মধ্যমগ্রাম-বারাসত।

বামনগাছি এলাকায় জুয়া, মদের ঠেক চালানোর প্রতিবাদে খুন হতে হয়েছিল সেখানকার তরুণ সৌরভ চৌধুরীকে। সেই ঘটনায় শাসক দলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতী শ্যামল কর্মকার এবং তার শাগরেদদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ঘটনার বিচার শেষে শ্যামল-সহ আট জনকে ফাঁসির রায় দিয়েছে বারাসত আদালত। এ দিন বামনগাছি এলাকার একটি বুথে ভোট দিতে যাওয়ার আগে সৌরভের মা মিতাদেবী বলেন, ‘‘শাসকের চোখরাঙানির প্রতিবাদেই এই ভোট।’’

পাঁচ বছর ঘরছাড়া মধ্যমগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের খামারপাড়ার কৈপুলির বাসিন্দা প্রদীপ মাঝি। এলাকায় ফিরেছিলেন শুধু ভোটটা দিতে। পুলিশি সাহায্য চেয়েছিলেন। পেয়েছেন। পুলিশ-ই তাঁকে নিয়ে গিয়েছে বুথে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ভোট দিয়ে বেরোনোর পরেই দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন সিপিএম সমর্থক প্রদীপবাবু। অভিযোগ, শাসক দলের দুষ্কৃতীরা মাটিতে ফেলে বাঁশ, লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে তাঁকে।
দলের অন্য সমর্থকেরা প্রদীপবাবুকে উদ্ধার করে মধ্যমগ্রাম গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছে়ড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

খামারপাড়ার একাধিক বুথে শাসক দলের সন্ত্রাস-হুমকিতে এজেন্ট বসতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন মধ্যমগ্রামের কংগ্রেস প্রার্থী তাপস মজুমদার। তৃণমূল প্রার্থী রথীন ঘোষের অবশ্য পাল্টা দাবি, ‘‘ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।’’

ভোট চলার মধ্যেই বারাসত কেন্দ্রের পালপাকুড়িয়াতে সকেট বোমা উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ জানায়, সকাল ১১টা নাগাদ পালপাকুড়িয়ার একটি মাঠে ওই বোমা পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলা। পুলিশ এসে বোমা উদ্ধার করে। বোমা উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় জোট এবং শাসকদল একে অপরের দিকে অভিযোগ করেছে।

বারাসতের অশ্বিনীপল্লির বাসিন্দা প্রশান্ত বিশ্বাসের অভিযোগ, অশ্বিনীপল্লি হাইস্কুলে তিনি ভোট দিতে গিয়ে দেখেন, অন্য কেউ তাঁর ভোট দিয়ে দিয়েছেন। প্রশান্তবাবু জানান, তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। বারাসতের বিজেপি প্রার্থী বীথিকা মণ্ডলের অভিযোগ, শাসকদল ওই বুথে ছাপ্পা ভোট করেছে। প্রশাসন সব কিছু দেখেও কিছুই করেনি। বারাসতেরই ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, নবপল্লির বিভিন্ন বুথে তাঁদের এজেন্টদের বসতে বাধা দিয়েছে শাসকদল। এমনকী, নবপল্লির মধ্য বালুরিয়াতে দিলীপ সরকার নামে এক এজেন্টকে বুথের মধ্যে মারধর করা হয় বলে সঞ্জীববাবুর অভিযোগ। তৃণমূল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তবে মধ্যমগ্রামের পেয়ারাবাগানের বাসিন্দারা এ বার খুশি। গত পুরভোটে তাঁরা ভোট দিতে পারেননি। অভিযোগ, তৃণমূলের গুন্ডারা অস্ত্র দেখিয়ে মারধর করে, ভোট না দিতে দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছিল ওই বাসিন্দাদের।

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy