Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

হিংসা রুখুন, জৈদীর হুঁশিয়ারি পেয়েই জেলায় বার্তা নবান্নের

ভোটের সময় প্রশাসন কার্যত নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে গেলেও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব কিন্তু সরকারেরই। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের এ ব্যাপারে তৎপর হতে বললেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৬ ০৪:১৯
Share: Save:

ভোটের সময় প্রশাসন কার্যত নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে গেলেও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব কিন্তু সরকারেরই। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের এ ব্যাপারে তৎপর হতে বললেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্স করে ডিএম-এসপি’দের এই বলে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে যে, ভোট পরিচালনার পাশাপাশি খুনোখুনি-মারামারি রুখতেও কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। তাতে বিন্দুমাত্র ঢিলেমি চলবে না। প্রসঙ্গত, দিন দুই আগে নির্বাচন কমিশন নবান্নকে সতর্ক করে বলেছিল, রাজ্যে খুনোখুনি বন্ধ করা সরকারেরই দায়িত্ব, তাই রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগের সুরাহা করতে সরকারকেই সচেষ্ট হতে হবে।

এ দিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র-সচিব ও পুলিশের ডিজি-সহ কর্তাব্যক্তিরা ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী-সহ কমিশনের ফুল বেঞ্চের মুখোমুখি হয়েছিলেন। নির্বাচন সদন তাঁদের পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাড়তি নজরদারি চালাতে হবে। কারণ, শাসকদলের তরফেও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও খুনোখুনির অভিযোগ পেশ হয়েছে। কী রকম?

কমিশনের বক্তব্য: বিরোধীরা প্রায় রোজই কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছে যে, ভোটের প্রচার করতে গেলে তাদের কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে। আবার ক’দিন আগে তৃণমূল নেতা ও সাংসদ মুকুল রায় অভিযোগ করেন, রাজ্যে ভোট ঘোষণার পর থেকে তাঁদের ছ’জন কর্মী খুন হয়েছেন। এর পরে পশ্চিম মেদিনীপুরে এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেছেন, তাঁদের আট জনের প্রাণ গিয়েছে। এ হেন প্রেক্ষাপটেই কমিশন রাজ্যকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আরও তৎপর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

এ দিকে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, অভিযোগ পেয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে নিহতদের নাম-ঠিকানা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ দিন পর্যন্ত দু’টির বেশি খুনের বিস্তারিত তথ্য দলীয় নেতারা সরকার বা কমিশনে জমা দিতে পারেননি।

তবু নবান্নের কর্তারা আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে শিথিলতা দেখাতে নারাজ। বিশেষত কমিশনের ‘পরামর্শের’ প্রেক্ষিতে। তাই এ দিন ডিএম-এসপিদের সঙ্গে আলাদা ভিডিও কনফারেন্স করেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র-সচিব এবং ডিজি। তাতে কী বলা হয়েছে? এক ডিএম জানান, ভি়ডিও-বৈঠকের শুরুতেই মুখ্যসচিব কমিশনের একটি নির্দেশিকা তাঁদের পড়ে শোনান। ‘‘এটা আমার কথা নয়। কমিশন লিখিত ভাবে নির্দেশটি দিয়েছে। তাই শুধু ভোটের কাজ করলে হবে না, সাধারণ আইন-শৃঙ্খলাও দেখতে হবে।’’— পরিষ্কার জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব। জেলাশাসকদের প্রতি তাঁর নির্দেশ— বিরোধীদের পাশাপাশি শাসকদলের পক্ষ থেকেও অভিযোগ উঠছে। এখনই ব্যবস্থা নিন।

নবান্নের খবর: এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তাদের কাছে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথাও জানতে চেয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। বাহিনীর তরফে বলা হয়েছে, পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা
নেই। ঠিক হয়েছে, প্রতি দফা ভোটের শেষে বাহিনী শুধু ট্রেনে চেপে অন্যত্র যাবে। জঙ্গলমহল ও উপকূলে আরও বেশি করে হেলিকপ্টার ব্যবহার হবে।

এ দিনের বৈঠকে পড়শি রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারাও হাজির ছিলেন। ভোটের আগে যাতে বাইরে থেকে কালো টাকা, মদ, হাতিয়ার বা অপরাধীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে না-পারে, সে জন্য সমস্ত রাজ্যকে সতর্ক করা হয়েছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় তল্লাশিও শুরু হয়েছে বলে জৈদীকে জানিয়েছেন সেখানকার অফিসারেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 nabanna law and order
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy