বিনা যুদ্ধে তারা যে আর জমি ছাড়বে না, ভোট এগিয়ে আসতেই তা ক্রমশ বুঝিয়ে দিচ্ছে সিপিএম।
এর আগে তাদের একের পর এক পার্টি অফিসে তালা পড়েছে। ঘরছাড়া হয়েছে বহু পরিবার। জেতা পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে বিনা যুদ্ধে, সদস্যেরা গিয়ে ভিড়েছেন শাসক দলের সঙ্গে।
বালির বাঁধটুকুও গড়া যায়নি।
কিন্তু রাজ্য জুড়ে জোটের হাওয়া উঠতেই খেলাটা বদলে গিয়েছে। এত দিন যাদের চোখরাঙানিতে সিঁটিয়ে থেকেছেন, এখন তাদেরই চোখে চোখ রেখে মাঠে নামছেন পার্টিকর্মীরা। গত দু’তিন সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের শরীরী ভাষাটাই পাল্টে গিয়েছে।
যে কারণে প্রায় সর্বত্র মনোনয়ন জমা দিতে এসে ‘চোর চোর’, ‘নারদ নারদ’ চিৎকারের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলের প্রার্থী এবং নেতাকর্মীদের। আগে হলে হয়তো রক্তচক্ষু দেখিয়ে দমিয়ে দেওয়া যেত। এখন ধমকাতে গেলে উড়ে আসছে ইট। দিন তিনেক আগেই রানাঘাটে মনোনয়নের সময়ে ইটবৃষ্টি আটকাতে পুলিশকে লাঠি পর্যন্ত চালাতে হয়েছে।
শুধু কি তা-ই? পাড়ায়-পাড়ায়, প্রচারের দৌড়েও টক্কর ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। টানা পাঁচ বছর ধরে যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ফ্লেক্স ছেঁড়া বা দেওয়াল দখলের অভিযোগ শুনে-শুনে জনতা ক্লান্ত, এখন তারাই উল্টে নালিশ জানাতে ছুটছে।
কীসের নালিশ? সিপিএম না কি জোড়াফুল আঁকা ফ্লেক্স ছিঁড়ে দিয়েছে।
সিপিএম না কি তৃণমূলের লেখা দেওয়ালে এক পোঁচ চুন মেরে কাস্তে-হাতুড়ি এঁকে দিয়েছে। কী দুঃসাহস!
এতেই দুঃসাহস? কথা বাড়ালে সিপিএম না কি ঠারেঠোরে হুমকিও দিচ্ছে। যেমন দিত আগে...।
শুনে প্রশাসনের কর্তাদেরই ভুরু কপালে। বলে কী? কেঁচো হয়ে যাওয়া সিপিএম আবার ফণা তুলছে না কি? তা যদি না-ই হবে, তৃণমূলই বা এত বিচলিত কেন? ভয় না পেলে কে-ই বা আর নালিশ করতে আসে?
দেওয়াল মুছে দেওয়ার অভিযোগ সদ্য উঠেছে নদিয়ার হরিণঘাটায়। সেই হরিণঘাটা, যেখানে বছর আড়াই আগে ১০টির মধ্যে ৮টি পঞ্চায়েতে জিতেছিল সিপিএম এবং পরে সদস্য ভাঙিয়ে সব পঞ্চায়েতই দখল করে নেয় তৃণমূল। সেখানেই, শাসক দলের খাসতালুক বলে পরিচিত নগরউখড়া বাজারে তাদের প্রার্থীর নাম লেখা দেওয়াল রাতারাতি চুনকাম করে দেওয়া হয়েছে। নগরউখড়া হাইস্কুলের সামনে তাদের ফ্লেক্সও ফালা-ফালা করে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে— বিডিও-র কাছে নালিশ ঠুকেছে তৃণমূল।
কারা এমন সর্নাশ করল?
হরিণঘাটার তৃণমূল নেতা চঞ্চল দেবনাথের দাবি, ‘‘সিপিএম এই সব করে উত্ত্যক্ত করতে চাইছে, যাতে আমাদের ছেলেরা ফাঁদে পা দেয়। কিন্তু আমরা রাজনৈতিক হিংসায় বিশ্বাস করি না।’’ গৌতম-বুদ্ধের দল অবশ্য এ সব ‘অহিংসার বাণী’তে কান দিচ্ছে না। প্রাক্তন বিধায়ক তথা মন্ত্রী বঙ্কিম ঘোষের হুঁশিয়ারি— ‘‘তৃণমূল যদি গোলমাল পাকানো থেকে নিরস্ত না হয়, আমাদেরও রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’’ এই ‘মোকাবিলা’ কথাটাই তো বহু দিন ভুলে গিয়েছিল লালঝান্ডা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy