প্রকাশ উপাধ্যায়
ভোটে প্রার্থী নন তিনি। এমনকী, তাঁর দলও ওই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। তবু বেলেঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রে অনেকটা জল্পনা তাঁকে ঘিরেই। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের নেতা এবং ভোটারদের মধ্যেও আলোচনায় উঠে আসছেন তিনি। কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়। বেলেঘাটার নির্বাচনী লড়াইয়ে এ বার তিনি অন্য এক ‘রূপে’ প্রকাশিত।
উত্থান, ২০১৫-র কলকাতা পুরভোট। শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র ছিল ২৯ নম্বর ওয়ার্ড। সেই ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই এলাকায় আরও বড় সাফল্যের জল্পনা শুরু হয়ে যায় তাঁকে ঘিরে। রাজাবাজারে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওই এলাকায় প্রায় আনকোরা প্রার্থী হিসেবে বামেদের হারিয়ে ২০১০-এও কাউন্সিলর হন প্রকাশবাবু। পরবর্তী পাঁচ বছর পুর-অধিবেশনের ভিতরে-বাইরে নানা আন্দোলন করে অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়-শাসিত পুরবোর্ডকে। ত্রিফলা থেকে লেক মল কেলেঙ্কারি, লাগাতর আন্দোলনে সামিল হয়েছেন তিনি। একদল ছেলেমেয়ে নিয়ে কখনও মেয়রের ঘরের সামনে, কখনও মেয়রের গাড়ির পথ আটকে ব্যতিব্যস্ত করেছেন পুর-প্রশাসনকেও। গত পুরভোটে তাই প্রকাশকে হারাতে মরিয়া ছিলেন খোদ মেয়র শোভনবাবুও। তাঁর বিরুদ্ধে নামানো হয়েছিল পূর্ব কলকাতার জাঁদরেল বিধায়ক পরেশ পালকে। কিন্তু তাঁকে হারানো তো দূর অস্ত্, উল্টে ঘোর তৃণমূল জমানায় স্থানীয় বিধায়ককেও প্রায় আট হাজার ভোটে হারিয়ে এস এন ব্যানার্জির ছোট লালবাড়িতে ফের ঢুকে পড়েন প্রকাশ। সংখ্যালঘুদের ভোট রয়েছে তাঁর পাশেই, সেই তকমাও জুড়ে ফেলেন তাঁর নামের সঙ্গে।
পুরভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই স্থানীয়দের মুখে ছড়াতে থাকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রকাশ উপাধ্যায় প্রার্থী হলে জমে যাবে বেলেঘাটার লড়াই। আর তার আঁচ পেয়েই হয়তো তৃণমূল বিরোধী আন্দোলনে আরও বেশি উজ্জীবিত হয়েছেন তিনি। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজাবাজারে মোমিন হাইস্কুলের কাছে এক চায়ের দোকানে আড্ডা মারা জনা কয়েক যুবকের আলোচনাতেও সেই প্রকাশ। তাঁদের কথার সারবস্তু হল, ‘প্রকাশ প্রার্থী হলে লড়াইটা জমে যেত।’
মুখে মুখে সেই বার্তা তো পৌঁছে গিয়েছিল লালমোহন ভট্টাচার্য স্ট্রিটে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরেও। তখনও নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হয়নি। জোর প্রচেষ্টা চলছে বাম-কংগ্রেস জোটের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরোয়া বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছেন বেলেঘাটা কেন্দ্রে ফের প্রার্থী করা হবে পরেশ পালকে। তখন থেকেই প্রকাশ তৈরি ফের পরেশের মুখোমুখি হওয়ার। জোট ঘোষিত হওয়ার পরে পুরসভায় কংগ্রেস কাউন্সিলরদের জন্য বরাদ্দ ঘরে বসে প্রকাশ বলেছিলেন, ‘‘দলকে বলেছি আমাকে ওখানে প্রার্থী করা হোক, আসনটা ছিনিয়ে নেব।’’ হয়নি। তাতে প্রথমটা ধাক্কা লেগেছিল তাঁর বুকে। পরে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে সিপিএমের রাজীব বিশ্বাসের নাম ঘোষিত হলে তা ঠেকানোর চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। এমনকী, দিল্লিতে এআইসিসি-র সদর দফতরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু দল তাঁর আবেদন নামঞ্জুর করায় ফিরে এসে বাম প্রার্থীর হাতই ধরেছেন। আপাতত ‘ব্যথা’ অপ্রকাশ্য রেখেই বামেদের সঙ্গে যৌথ মিছিলে যোগ দিয়ে বলছেন, ‘‘পরেশ পালকে হারানোই প্রধান লক্ষ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy