প্রতীকী ছবি।
একই জোটে দু’রকম ছবি!
সিপিএমের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) রফার পথ পরিষ্কার হয়ে এলেও কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের টানাপড়েন এখনও কমছে না। কংগ্রেসের কাছে যে গোটাদশেক আসন দাবি করে আইএসএফ আলোচনা শুরু করেছিল, পরে তারা সেই চাহিদা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাড়তি তালিকা পেয়ে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতৃত্ব বলতে শুরু করেছেন, এমন হতে থাকলে জোটের নিষ্পত্তি কী ভাবে সম্ভব? পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত আসরে নামতে হয়েছে সিপিএমকেই। কংগ্রেস এবং আইএসএফের মধ্যে আপস-রফা বার করতে তৎপর হয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
এক রাতের আলোচনাতেই আইএসএফ-কে প্রায় ২২টি আসন দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে সিপিএম। আরও তিনটি আসনের দাবি তারা বিবেচনায় রেখেছে। যার ফলে, সিপিএমের মনোভাবে আব্বাসের দলের নেতৃত্বও ‘সন্তুষ্ট’। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে আইএসএফের আলোচনার গতি তুলনায় অনেক মন্থর। আইএসএফের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে কংগ্রেসের কাছে গোটাদশেক আসনের দাবি করেছিলেন। যার মধ্যে কংগ্রেসের গত বারের জেতা দু’টি আসন বাদ দিয়ে বাকি ৮-৯টি নিয়ে আব্বাসদের সঙ্গে কথা চালাচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। কিন্তু তার পরে আবার বৃহস্পতিবার বেশি রাতে ও শুক্রবার আইএসএফ
প্রায় ২৩টি আসনের তালিকা কংগ্রেসের কাছে পাঠিয়েছে। আইএসএফের তরফে এমন মনোভাবকে ‘বিশ্বাসভঙ্গ’ বলেই মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কংগ্রেসের কাছ থেকে আইএসএফের দাবির বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয়েছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। সূত্রের খবর, ফুরফুরা শরিফে যোগাযোগ করে সেলিম বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ‘অযৌক্তিক’ দাবি নিয়ে বসে থাকলে কোনও পক্ষেরই কোনও
লাভ নেই। আসনের তালিকা নিয়ে এ দিন এক প্রস্ত বৈঠক করেছেন কংগ্রেসের দুই নেতা মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্যও। কিন্তু তাতে বিশেষ কোনও সূত্র বেরোয়নি। শেষ পর্যন্ত রাতে ঠিক হয়েছে, আজ, শনিবার রাতে হুগলি জেলায় সিপিএমের একটি দফতরে সেলিমের সঙ্গে কথা বলতে আসবেন আইএসএফের নেতা নৌসাদ। সেখানে গিয়ে ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দেবেন মান্নান ও প্রদীপবাবু। গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে বহরমপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকেও।
আইএসএফের বক্তব্য, মুর্শিদাবাদ থেকে শুরু করে গোটা উত্তরবঙ্গে কংগ্রেস কোনও আসন তাদের ছাড়তে নারাজ হলে দক্ষিণবঙ্গে আসন দিয়ে রফা ‘পুষিয়ে’ দিতে হবে। তাদের পক্ষেই বা দাবি কত কমানো সম্ভব?
পক্ষান্তরে, প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘দু’মাসের একটা দল এত দাবি করবেই বা কেন? তা ছাড়া, জোটে আমরাই তো এখনও পেয়েছি ৯২টি আসন। বেশি আসন পেলে না হয় আইএসএফ-কে সেই অনুপাতে ছাড়ার কথা ভাবা যেত!’’
এই টানাপড়েনের মধ্যেই এ দিন আলিমুদ্দিনে বামফ্রন্টের বৈঠকে শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের কাছে আরও চার, আরএসপি-র কাছে দুই ও সিপিআইয়ের কাছে একটি আসন ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে সিপিএম। শরিক নেতৃত্ব বলেছেন, আসন-সংখ্য কমাতে তাঁরা তৈরিই আছেন। কিন্তু নির্দিষ্ট আসন ধরে চূড়ান্ত ফয়সালা না করলে বারবার সিদ্ধান্ত বদলানো সম্ভব নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy