রাজ্যের নানা জায়গায় শাসক দলের দুষ্কৃতীদের ঠেকাতে গ্রামবাসীদের প্রতিরোধ দেখা গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এ বার দুষ্কৃতীদের ঠেকাতে নির্বাচন কমিশন যাতে আরও সক্রিয় হয়, সেই আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন গোসাবার চুনাখালি পঞ্চায়েতের ভোটাররা। সেখানে নির্বিঘ্নে ভোট করতে কমিশন কী ব্যবস্থা নিয়েছে এবং নিতে চলেছে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করার জন্য শুক্রবার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। মঙ্গলবার ওই রিপোর্ট দিতে হবে কমিশনকে।
এ বার শুরু থেকেই কমিশন আশ্বাস দিয়েছে, ভোট হবে ‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ’। তার জন্য ইতিমধ্যেই নানা কড়া পদক্ষেপ করেছে তারা। ভোটারদের ভয় কাটাতে এলাকায় রুটমার্চ করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু বাহিনী সব জায়গায় নিয়মিত টহল দিচ্ছে না এবং সেই সুযোগে শাসক দলের দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।
গোসাবা-সহ গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভোট আগামী ৩০ এপ্রিল। গোসাবার ওই পঞ্চায়েতে মোট ভোটার প্রায় ১৮ হাজার। মাস তিনেক ধরে দুষ্কৃতীদের হুমকিতে আতঙ্কিত ওই পঞ্চায়েতের ভোটাররা প্রথমে থানায় যান। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেনি। এর পরেই তাঁরা জনস্বার্থে মামলা করেন হাইকোর্টে।
অনেকেরই অভিযোগ, ভোটার কার্ড জমা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। কারও কারও থেকে তা কেড়েও নেওয়া হচ্ছে। ভোট দিতে গেলে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, ভোট-পর্ব মেটার পরে ‘বুঝে নেওয়া হবে’ বলে শাসানিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুক্রবার এই সব অভিযোগের কথাই হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সহিদুল্লা মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চের কাছে তুলে ধরেন মামলার আবেদনকারী অবিনাশ বৈরাগ্যর আইনজীবী সুপ্রিয় বসু এবং দেবজ্যোতি দেব। তাঁরা জানান, বাসন্তী থানার পুলিশ ভোটারদের অভিযোগ নিচ্ছে না। এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী বা রাজ্য পুলিশ টহল দিচ্ছে না।
নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী দীপায়ন চৌধুরী অবশ্য দাবি করেন, বাহিনী ওই এলাকায় নিয়মিত রুটমার্চ করছে। কমিশনের এই বক্তব্য শুনেই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ও কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার বিস্তারিত রিপোর্ট প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মঙ্গলবার পেশ করতে হবে। কারণ, জনস্বার্থ মামলার শুনানি ওই আদালতেই হয়। এ দিন প্রধান বিচারপতি অনুপস্থিত থাকায় বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানি গ্রহণের দায়িত্ব পায়।
গোসাবার ওই এলাকায় ভোটের মুখে ভয় দেখানোর অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। অভিযোগ, ২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় চুনাখালিতে বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়নই দাখিল করতে পারেনি। বুথ দখল করে ছাপ্পা-ভোট দিয়েছিল শাসক দলের ছেলেরা। চুনাখালির তিনটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ২১টি সংসদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যায় তৃণমূল। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে ওই পঞ্চায়েতের ২৩টি বুথে কোনও বিরোধী এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। ওই পঞ্চায়েত এলাকা থেকে তৃণমূল প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ভোট পায়।
এখন দেখার, এ বার ছবিটা পাল্টায় কি না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy