অপেক্ষা: এক হাতে ভোটার স্লিপ, অন্য হাতে গ্লাভস। ভোটের লাইনে এক প্রবীণ। শনিবার, বেহালায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
ভোট শুরু হয়েছে তখন ঘণ্টাখানেক। বেহালা পশ্চিমের পর্ণশ্রীর একটি ভোটকেন্দ্র থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বেরিয়ে এলেন সদ্য আঠারো পেরোনো তরুণী। প্রথম বারের ভোটার? বাবা-মা কি বলে দিয়েছিলেন, কাকে ভোট দিতে হবে? একগাল হাসিতেই প্রতিবাদী শুভশ্রী সরকার। বললেন, ‘‘ওঁদের সব কথাই শুনি। কিন্তু ভোট দিলাম নিজে ভেবেই। আমার ভবিষ্যৎ তো এতে জড়িয়ে।’’
হাতে কাঠের পুরনো লাঠি। নতুন শাড়িতে দুপুর বারোটার রোদে জেমস লং সরণি দিয়ে হাঁটছিলেন সত্তরের বৃদ্ধা। গন্তব্য, জনকল্যাণ এলাকার একটি বুথ। নির্বাচন কমিশন তো প্রবীণদের বাড়িতেই পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এত কষ্ট করছেন কেন তা হলে? উত্তর এল, ‘‘সেই কবে থেকে এ ভাবেই ভোট দিচ্ছি। অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। কষ্ট হলেও দেশের জন্য এইটুকু তো করতেই হয়।’’
এমনই বলছিলেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়। বিকেলে ফোনের ও-পারে আত্মবিশ্বাসী তিনি। বলছিলেন, ‘‘যতটা খবর পাচ্ছি, ভোটদানের হার অনেক। মানুষ নিশ্চিন্তে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন।’’ তবে তার কিছু ক্ষণ আগে ঠাকুরপুকুরের সজনেবেড়িয়ার মল্লিকপুরে কাচভাঙা গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ওই কেন্দ্রেরই বিজেপি প্রার্থী পায়েল সরকারের অভিযোগ, ‘‘এই এলাকার মানুষকে ভোটে বাধা দিতে সকাল থেকেই তৎপর শাসকদল। সকলে যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারেন, তা দেখতে বার বার এখানে আসছি। তাই আমার উপরে হামলা করা হল। মোটরবাইকে কয়েক জন এসে গাড়িতে ঢিল ছুড়ে যায়।’’ শুক্রবার রাত থেকে রামজীবনপুর এলাকায় বিজেপির কয়েক জন কর্মীর বাড়িতে হামলা করা হয় বলেও অভিযোগ করেন পায়েল। যা শুনে রত্না পাল্টা বলেন, ‘‘ওই এলাকা তৃণমূলের গড়। সেখানে ভোট বানচাল করতে পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করছে। আমার দলের কেউ জড়িত নন। কেউ কাউকে কোথাও বাধা দেননি। শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।’’
সকাল-সকালই মাকে সঙ্গে নিয়ে পর্ণশ্রীতে ভোট দিতে যান বেহালা পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। বুথ থেকে বেরিয়ে চেনা হাসিতে তিনি বলে যান, ‘‘গোলমালের খবর এখনও পায়নি। আশা করি, মানুষ আজ নির্ভয়ে নিজেদের ভোট দেবেন।’’ বেহালা পূর্বের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী সমিতা হর চৌধুরীর কথায়, ‘‘জোকার কাছে কয়েকটি জায়গায় আমাদের দলের কর্মীদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল। এক এজেন্টের বাড়িতে হামলাও হয়। কিন্তু সেই এজেন্ট এ দিন বুথে বসেছেন। মানুষ নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছেন। পুলিশ তৎপর ছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকাও সদর্থক।’’
চৌরাস্তার কাছে একটি স্কুলের বুথে দেখা ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের জওয়ান মুকেশের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘‘মানুষ যাতে নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারেন, সেটা দেখাই তো আমাদের কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy