ঘরে-বাইরে। সিউড়িতে দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
ভোটের আগে তৃণমূল নেত্রীর অনুগত অনুব্রত মণ্ডলকে কলকাতায় আসার অনুমতি দিল না নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনের কাছে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য শুক্রবার কলকাতায় যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। তৃণমূল সূত্রের খবর, ‘কেষ্টদা’ (অনুব্রতর ডাক-নাম) সে আবেদন করেন বৃহস্পতিবার। কিন্তু কমিশন তাঁকে জানিয়ে দেয়, আজ, শনিবার কলকাতার ভোট-প্রক্রিয়া না মেটা পর্যন্ত তিনি বীরভূম ছেড়ে নড়তে পারবেন না।
ঘটনাচক্রে ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে, এ দিন অনুব্রতর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানান ভবানীপুর কেন্দ্রের (এসএসকেএম হাসপাতাল এই বিধানসভাতেই পড়ে) জোট-প্রার্থী কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি। তাঁর দাবি, ভোট-লুঠ করতে বৃহস্পতিবারই ভবানীপুর কেন্দ্রে অনুব্রত তাঁর বাহিনী নিয়ে ঢুকেছিলেন। এলাকার বুথ দখল হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে কমিশনকে লেখা চিঠিতে দ্রুত পদক্ষেপ করার দাবি জানান দীপা। তবে অনুব্রত অনুগামীদের দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবার দাদা কলকাতায় যাননি।’’ আর এ দিন বিকেলে সিউড়িতে দলীয় কার্যালয়ে বসে অনুব্রত বলেছেন, ‘‘কোনও রকম বিতর্কে যেতে চাইছি না। শনিবার এখানেই থাকব।”
অনুব্রতর ‘গতিবিধি’ এবং ভোট করানোর ‘পদ্ধতি’ নিয়ে বিরোধীদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। ২০১৩-র পঞ্চায়েত, ২০১৪-র লোকসভা ভোটে তাঁর এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোদের দাপটের সাক্ষী বীরভূমবাসী। এ বার বিধানসভা ভোটের আগেও ‘গুড়-জল’ দিয়ে নরমে-গরমে ভোট করানোর দাওয়াই, ‘চড়াম-চড়াম’ করে ঢাক বাজানোর হুমকি, এমনকী, ভোটের দিন বিরোধী এজেন্ট, ভোটারদের ‘ভ্যানিশ’ করে দেওয়ার তত্ত্ব আউড়ে বাজার গরম করে দিয়েছিলেন এই তৃণমূল নেতা। বীরভূমে ভোটের আগে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি তোলেন বিরোধীরা। কমিশন তাঁকে ‘নজরবন্দি’ করে। কিন্তু তার পরেও বীরভূমে ভোটের আগের রাতে খিড়কি দরজা দিয়ে বেরিয়ে জেলায় ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছিলেন অনুব্রত। জেলার পাট মিটতে পরের দুই পর্বে— বীরভূম লাগোয়া বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদে লোক পাঠিয়ে ভোট করানোর অভিযোগও উঠেছে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতির বিরুদ্ধে।
কার্যালয়ের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। শুক্রবার।
প্রশাসন সূত্রের দাবি, এই প্রেক্ষিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকায় অনুব্রতর ছায়া যাতে না পড়ে — তা নিশ্চিত করার চেষ্টা হয়েছে। অনুব্রতর কথায়, ‘‘শরীর পরীক্ষা করাতে কলকাতার এসএসকেএম-এ যাওয়ার কথা ছিল। সে কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু কমিশন কলকাতার ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওখানে যেতে নিষেধ করে দিয়েছে।’’ নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২২ মে পর্যন্ত কমিশনের ‘নজরবন্দি’ থাকার কথা অনুব্রতর। এ দিনও তাঁর গতিবিধির উপরে নজর রেখেছেন এক
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট।
বীরভূমের রিটার্নিং অফিসার তথা জেলাশাসক পি মোহন
গাঁধী, এসডিও (বোলপুর) শম্পা হাজরা ফোন ধরেননি বা এসএমএস-এর জবাব দেননি। তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘ভদ্রলোককে (অনুব্রত) বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, উনি জেলায়
থাকলেই ভাল।’’
ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy