Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
রাসবিহারী

কড়া নজরদারিতে ভোট শান্তিপূর্ণই

পঞ্চম দফার ভোটের ছায়াই ফের দেখা গেল শনিবারের ষষ্ঠ দফার ভোটে। পুলিশ-কেন্দ্রীয় বাহিনীর সক্রিয়তাকে যথারীতি বাড়াবাড়ি বলেই মনে করেছে শাসক দল, আর বিরোধীদের মতে ভোট হয়েছে ভাল মতোই।

সাক্ষী রবীন্দ্রনাথ। শনিবার, লর্ডসের মোড়ে। —নিজস্ব চিত্র।

সাক্ষী রবীন্দ্রনাথ। শনিবার, লর্ডসের মোড়ে। —নিজস্ব চিত্র।

দীক্ষা ভুঁইয়া ও মধুরিমা দত্ত
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ০১:০৪
Share: Save:

পঞ্চম দফার ভোটের ছায়াই ফের দেখা গেল শনিবারের ষষ্ঠ দফার ভোটে। পুলিশ-কেন্দ্রীয় বাহিনীর সক্রিয়তাকে যথারীতি বাড়াবাড়ি বলেই মনে করেছে শাসক দল, আর বিরোধীদের মতে ভোট হয়েছে ভাল মতোই। লেক থানা এলাকায় তিনটি তাজা বোমা উদ্ধার হওয়া ছাড়া রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট ছিল শান্তিপূর্ণই। বিভিন্ন বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি থাকলেও মাঠে নেমে ভোট-পর্ব নিয়ন্ত্রণ করতে হয়নি তাদের। সকাল থেকে বুথের আশপাশে দেখা মেলেনি ‘দাদাদেরও’।

শনিবার ভোট শুরুর ঘণ্টা তিনেকের মাথায় সকালে ৪৮৯ নম্বর কেয়াতলার সামনে রাস্তার ধারে তিনটি তাজা বোমা দেখতে পান স্থানীয়েরা। লেক থানার পুলিশ এসে উদ্ধার করে সেগুলি। বিকেলে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ইব্রাহিম রোডেও মেলে আরও চারটি বোমা। কিন্তু কে বা কারা ওই বোমাগুলি রেখেছিল, তা জানতে পারেনি পুলিশ। গ্রেফতারও হয়নি কেউ।

যদিও এলাকার বেশ কয়েকটি বহুতলে, বিশেষত গাঁজা পার্ক সংলগ্ন কয়েকটি আবাসনে শাসক দল ‘ঘাঁটি’ গড়েছে বলে অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল বিরোধীরা। বলা হয়েছিল, ওই বহুতলগুলিতে বাইরে থেকে লোক এনে রাখা হয়েছে। ভোটের দিন ‘ছাপ্পা’ দেওয়ার জন্য এঁদের ব্যবহার করতে পারে তৃণমূল। কিন্তু পুলিশের অতিরিক্ত নজরদারিতে এ দিন বিরোধীদের এই অভিযোগ কার্যত ধোপে টেকেনি। বুথ সংলগ্ন কোনও জায়গায় অশান্তি হয়নি। কিছু জায়গায় বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে জমায়েত দেখে সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে তা খালি করে দিতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর অতি সক্রিয়তাকে ভাল চোখে নেননি রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘আমার কেন্দ্রের অধিকাংশ বুথে আমাকেই ঢুকতে বাধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সিপিএম, কংগ্রেসকে কোনও দিন ভয় পাইনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর অত্যাচারে আমার ছেলেরা রীতিমতো নাকানি-চোবানি খেয়েছে।’’ আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই তৎপরতায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তৃণমূলের এই বর্ষীয়ান নেতা? এ কথা মানতে নারাজ শোভনদেববাবুর কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ‘‘দাদা যা কাজ করেছেন, তাতে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছে। আমাদের কোনও চাপ নেই। কিন্তু দাদা বুথে বুথে ভোট দেখতে গেলে তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।’’ বিভিন্ন বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁদের পোলিং এজেন্টদেরও বুথের বাইরে বেরোতে দিতে চায়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। প্রার্থীকেই বুথে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন রাসবিহারী কেন্দ্রের জোট প্রার্থী আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে আশুতোষের অভিযোগ, ‘‘আমাকে ঢুকতে বাধা দিলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী অনেক জায়গাতেই নিশ্চুপ থেকেছে। আমার কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথের ১০০ মিটারের মধ্যেই শাসকদলের লোক দল বেঁধে বসে ভোটারদের ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’

শাসক বিরোধী দু’পক্ষেরই অবশ্য ভরসা মানুষের রায় তাঁদের সঙ্গেই গিয়েছে। ‘‘সমস্ত বুথ ঘুরে মনে হয়েছে মানুষের জোট লুম্পেন শাসকদের এ বার রুখে দেবেই’’—দাবি কংগ্রেসের তরুণ তুর্কি আশুতোষের। আর প্রবীণ নেতা শোভনদেবের বিশ্বাস, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার উন্নয়নের জন্য তিনি যা করেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর অতি বাড়াবাড়িতেও তাতে ভাঁটা পড়ার নয়।

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy