এই হাতেই পড়েছে বাঁশের ঘা।
কচি হাত দু’টো দশ ঘণ্টা পরেও দগদগে।
রবিবার রাতে মায়ের কোলে বসে দুধ খাচ্ছিল তিন বছরের সায়ন্তিকা। সপাট লাথিতে ছিটকে গিয়ে দেওয়ালে পড়ে দুধের বাটি। কচি চোখ দু’টোর সামনেই দাদু ও মাকে বাঁশ দিয়ে পেটাল ওরা। শিউরে উঠে মাকে জড়িয়ে ধরতে সায়ন্তিকার উপরও এসে পড়ল চড়-থাপ্পড়। তুলতুলে হাত দু’টোয় নেমে এল বাঁশের ঘা।
ভোট দেবেন বলেই দু’দিন আগে মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে এসেছিলেন দেবশ্রী। দেবশ্রীর বাবা টিটো সমাজপতি সিপিএম সমর্থক। শনিবার থেকেই চলছিল চোখরাঙানি— ‘ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই’। রবিবার শাসানি গড়ালো হামলাতে। অভিযোগ, জনা বারো তৃণমূল কর্মী রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ চড়াও হয়। বোমা ফাটিয়ে বাড়িতে ঢুকে শুরু হয় ভাঙচুর, মারধর।
ঘটনাটা জেনে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেননি ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী। সোমবার ভোটের সকালে নির্বাচনী দফতর ও পুলিশের একটি দল পৌঁছয় টিটোবাবুর বাড়িতে। ডান হাতের কনুইটা দেখিয়ে ছোট্ট সায়ন্তিকা বলে ওঠে, ‘‘এই তো, আমায় হাতের এখানে বাঁশ দিয়ে মেরেছে। আমার খাবার ফেলে দিয়েছে। মা, দাদু সব্বাইকে মেরেছে।’’
মার খেয়েই জেদ বেড়ে গিয়েছিল দেবশ্রীর। পুলিশ-প্রশাসনকে পাশে পেয়ে আরও ভরসা পান বছর তিরিশের যুবতী। তেড়েফুঁড়ে বলেন, ‘‘ ভোট দেবই, দরকার হলে আবার মার খাব।’’ দেবশ্রীর ভাই প্রদীপ অবশ্য তাও পা বাড়াননি। বলেছেন, ‘‘এলাকায় তো থাকতে হবে।’’
প্রদীপের এই ভয়কে কিন্তু হারিয়ে দিয়েছে দেবশ্রীর জেদ। মহিলা পুলিশকর্মীর কোলে চড়ে ভোটকেন্দ্রে ঢুকেছিল সায়ন্তিকাও। তাঁদের দেখাদেখি বেলা বারোটা নাগাদ ওই পাড়ার আরও তিরিশ জন বুথে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান। সেই দলে ছিলেন পার্থসারথি মিত্র। বললেন, ‘‘হুমকি শুনে ফিরে এসেছিলাম। দেবশ্রীকে দেখে ঠিক করলাম আবার যাব।’’
ভোট দিয়ে বেরনোর পরে দেবশ্রীর চোখে আগুন। বললেন, ‘‘রাজনীতির রোষেই আমার দাদু খুন হয়েছিলেন। হাঙ্গামা করলে ভয় পেয়ে যাওয়ার মতো দুর্বল আমরা নই।’’ বীজপুরের তৃণমূল প্রার্থী শুভ্রাংশু রায় অবশ্য বলছেন, হামলায় দলের কেউ জড়িত নয়। শিশুর পরিবারের পাশে আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy