Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

মাঠে লোক বাড়ন্ত কি, তর্কে তৃণমূল

নিজের প্রচার-পর্বের দীর্ঘ সময় উত্তরবঙ্গে কাটিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এ বার এলেন তাঁর ভাইপো, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়া এবং জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে সভা করেন। দু’জায়গাতেই তাঁর আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল জোট।

মাটিগাড়ার সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

মাটিগাড়ার সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী ও অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি ও ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৬ ০২:২২
Share: Save:

নিজের প্রচার-পর্বের দীর্ঘ সময় উত্তরবঙ্গে কাটিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এ বার এলেন তাঁর ভাইপো, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়া এবং জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে সভা করেন। দু’জায়গাতেই তাঁর আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল জোট। তিনি বলেন যে, ‘‘মানুষের জোটের কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে ওরা। মানুষের ওই জোট মানুষই ফানুসের মতো উড়িয়ে দেবে।’’ তার পরে জোটের সঙ্গে কালসাপের তুলনা করে অভিষেকের বক্তব্য, ‘‘বাড়িতে কালসাপ ঢুকলে যা করেন, এদের সঙ্গেও তাই করুন।’’

অভিষেকের প্রথম সভা ছিল মাটিগাড়ার মায়াদেবী ক্লাবের মাঠে। তৃণমূলের একটি অংশের বক্তব্য, সভা শুরুর কথা ছিল বেলা ১টায়। কিন্তু মাইকে ঘোষণার পরেও অধিকাংশ চেয়ার খালিই ছিল তখন। তাই সভার শুরুর আগে আরও কিছুটা সময় নেওয়া হয়। সভার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয় দুপুর দুটোয়। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, খোলা মাঠে চড়া রোদের ফলে ভিড় জমতে সময় লাগছিল। তবে ঘোষণার পরে ধীরে ধীরে অটো এবং টোটোয় চেপে লোক আসা শুরু হয়। সওয়া ২টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেব বক্তব্য রাখতে উঠেই বলেন, ‘‘লোকজন সব মাঠের বাইরে। বলব কাকে! আসলে কড়া রোদ তো। আপনারা ভিতরে আসুন।’’

অভিষেক বক্তব্য রাখতে ওঠেন বেলা ৩টে নাগাদ। তিনি প্রথমেই বলেন, ‘‘সকলে যাঁরা এসেছেন, তাদের আমি ব্যক্তিগত ভাবে ধন্যবাদ জানাই। কাঠফাটা রোদে এ ভাবে আসার জন্য শুভেচ্ছা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আপনারাই আমাদের সম্পদ।’’

তৃণমূলেরই অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, তত ক্ষণে ধূপগুড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে। সেখানে ডাকবাংলো লাগোয়া মিলনী মাঠে সভা ছিল। মাটিগাড়ার সভার শেষে অভিষেক হেলিকপ্টারে চেপে ধূপগুড়ি যান। সেখানে ময়নাগুড়ি এবং ধূপগুড়ি, দুই বিধানসভা কেন্দ্রের কর্মী-সমর্থকেরা হাজির ছিলেন। যা দেখেশুনে বিরোধীদের বক্তব্য, ওই মাঠটা স্থানীয় তৃণমূল নেতারা বেছে নিয়েছিলেন একটাই কারণে। মাঠটা আয়তনে ছোট। তাঁদের আরও দাবি, এই মাঠ ভরাতেও ময়নাগুড়ি থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এসেছিলেন তৃণমূল নেতারা। মাঠটি ধূপগুড়ি শহরের লাগোয়া হলেও তা ভরায় ময়নাগুড়ির লোকজন। বিরোধীরা আরও বলছেন, শুধু তা-ই নয়, যে সভা বেলা দুটোয় শুরু হওয়ার কথা ছিল, তা বিকেল চারটের আগে শুরু হয়নি। তখনও মিছিল আসছে বলে মাইকে ঘোষণা করে তৃণমূল নেতারা সকলকে আরও অপেক্ষা করতে বলেন। এই যুক্তি দেখিয়ে বিরোধীদের দাবি, এর থেকেই স্পষ্ট, মাটিগাড়ায় তো লোক হয়ইনি, ধূপগুড়ির ভিড়ও স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না। বরং সেখানে ভিড় বাড়াতে ছোট মাঠে যৌথ সভা ডাকা হয়েছিল।

তৃণমূলের পাল্টা যুক্তি, মাটিগাড়ায় রোদের জন্য ভিড় হতে দেরি হয়েছে। সে জন্য মঞ্চ থেকে অভিষেক ধন্যবাদও জানিয়েছেন মানুষকে। ধূপগুড়ি আসতেই তো চারটে বেজে গিয়েছে তাঁর। তা হলে সেখানে দুটোয় সভা শুরু হবে কী করে? বিরোধীদের এই দাবি তাই চূড়ান্ত অবাস্তব। তাঁদের আরও বক্তব্য, ওই সময় লোক আসছিল বলেই সকলকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। অভিষেক যখন মাঠে পৌঁছন, তখনও তাই মাইক হাতে সভার উদ্যোক্তা জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আরও মিছিল হবে। ভিড় আরও বাড়বে। তাই একটু সময় নিচ্ছি।’’

দুই সভাতেই অভিষেকের আক্রমণ ছিল জোটকেন্দ্রিক। অশোক ভট্টাচার্যকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিঙে পা রাখার ক্ষমতা নেই, আবার বড়বড় কথা!’’ সারদা-নারদ প্রসঙ্গকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘২০১৪ সালে সারদা, ২০১৬ সালে নারদা। আর সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি— ছোড়দা, বড়দা এবং মেজদা। মানুষের জোট কিন্তু আমাদের সঙ্গে রয়েছে। এ সব কুৎসা করে কেউ কিছু করতে পারবেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy