গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজনৈতিক দলগুলির ‘গৌরী সেন’ কারা? তা এ বার প্রকাশ্যে আসতে চলেছে। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে ঠিক কত টাকা দিয়েছে, এ বার তা জানা যাবে। নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত রায়ে বৃহস্পতিবারের সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে, তাতে এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সে ক্ষেত্রে যে গোপনীয়তার শর্তে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থা তৈরি করেছিল, ধাক্কা খেল সেই মূল শর্তটিই।
পরিচয় এবং অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনী বন্ডে। সেই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। কথা ছিল, কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের অঙ্কের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবেন। সেই অর্থ ভাঙিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার। তবে একই সঙ্গে ওই বন্ডে দাতাদের পরিচয় এবং দানের অর্থের পরিমাণ গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল তারা।
বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। একই সঙ্গে এই ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘ক্ষতিকারক’ বলে আখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এসবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে যেন ওই বন্ড দেওয়া বন্ধ করে তারা। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে এসবিআইকে।
আদালত তার নির্দেশে বলেছে, ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যা যা তথ্য এসবিআইয়ের কাছে জমা পড়েছে, তা আগামী ৬ মার্চের মধ্যে জমা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনে। আর কমিশন এই অনুদান সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পর তা প্রকাশ্যেও আনা হবে।
কবে ওই সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ হবে, সে ব্যাপারে নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত রিপোর্ট পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচনী প্যানেল অনুদান সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করবে। অর্থাৎ ১৩ মার্চের মধ্যে এই বিষয়ে জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রণীত নির্বাচনী বন্ড দেওয়ার দায়িত্বে ছিল একমাত্র এসবিআই। ২০১৮ থেকে এই নির্বাচনী বন্ড চালু হয়। সাধারণত, ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের গুণিতকে এই বন্ড বিক্রি করত এসবিআই। কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিত। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারত। এই বন্ডের ফলে কর্পোরেট সংস্থার পাশাপাশি বিদেশিরাও টাকা দিতে পারতেন রাজনৈতিক দলগুলিকে। যার বিনিময়ে ব্যক্তি বা সংস্থা ১০০ শতাংশ কর ছাড় পেত। কিন্তু ব্যাঙ্ক বা রাজনৈতিক দল কেউই এই দাতার নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে আনত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy