মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মনোহরলাল খট্টর। — ফাইল চিত্র।
জল্পনা সত্যি হল। লোকসভা নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মনোহরলাল খট্টর। আসন্ন ভোটে হরিয়ানাতে আসন বণ্টন নিয়ে বিজেপি এবং জননায়ক জনতা পার্টির (জেজেপি) মধ্যে বিবাদ চরমে উঠেছিল। সূত্রের খবর, সেই বিবাদের জেরেই ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন খট্টর।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আসন বণ্টন নিয়ে জেজেপি নেতা তথা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালার দাবি মানতে নারাজ বিজেপি। আর তার জেরেই মনোহরলালের সরকারের থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন দুষ্মন্ত। সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার সকালে নিজের দলের বিধায়কদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। শোনা যাচ্ছিল, সেই বৈঠকের পরেই পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করবে জেজেপি। এ হেন পরিস্থিতিতে খট্টরের ইস্তফা দেওয়া রাজ্য রাজনীতিতে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
অন্য দিকে, মঙ্গলবারই বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে নিজের বাসভবনে বৈঠক করেছেন খট্টর। সেই বৈঠকের পরই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন তিনি। শুধু একা তিনি নন, তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরাও ইস্তফা দেবেন বলেই খবর। সেই কারণেই বৈঠক শেষে ইস্তফাপত্র জমা দিতে রাজ্যের মন্ত্রীরা রাজভবনে যাচ্ছেন। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতেই নিজেদের ইস্তফাপত্র তুলে দেবেন তাঁরা।
খট্টর ইস্তফা দিতেই হরিয়ানাতে বিজেপি সরকারের অস্তিত্ব নিয়ে ঘোর সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে সূত্রের খবর, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মঙ্গলবারই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় পর্যবেক্ষকেরা ইতিমধ্যেই চণ্ডীগড়ে পৌঁছে গিয়েছেন। সেই দলে আছেন অর্জুন মুন্ডা, বিপ্লব দেব, তরুণ চুঘেরা। সূত্রের খবর, নির্দল বিধায়কদের সমর্থনে আবারও হরিয়ানাতে বিজেপি সরকার গঠনের চেষ্টা করবে।
৯০ বিধানসভা আসনের হরিয়ানাতে বিজেপির ৪১ জন বিধায়ক রয়েছে। এ ছাড়াও কংগ্রেসের ৩০ জন বিধায়ক এবং জেজেপির ১০ জন বিধায়ক আছেন। সাত জন নির্দল, এক জন করে বিধায়ক আছেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল এবং হরিয়ানা লোকহিত পার্টির (এইচএলপি)। এইচএলপি বিধায়ক গোপাল কান্ডা। হরিয়ানাতে সরকার গঠন করতে গেলে প্রয়োজন ৪৬ জন বিধায়কের সমর্থন। সূত্রের খবর, জেজেপি সমর্থন সরিয়ে নিলে নির্দল বিধায়কদের সমর্থনেই সরকার গড়বে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনে কোনও দলই একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে ভোটের পর ১০ জন বিধায়ক নিয়ে বিজেপিকে সমর্থন জানায় জেজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন খট্টর। উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয় দুষ্মন্তকে। তবে সরকারে থাকলেও খট্টর এবং দুষ্মন্তের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ লেগেই ছিল। সম্প্রতি, লোকসভা আসনে জেজেপি এবং বিজেপির মধ্যে বিবাদ বাধে। সূত্রের খবর, লোকসভাতে তিনটি আসন তাঁর দলকে ছাড়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন দুষ্মন্ত। কিন্তু বিজেপি সেই দাবি মানতে নারাজ। বিজেপি সূত্রে খবর, জেজেপিকে হরিয়ানাতে একটি আসন ছাড়তে রাজি পদ্মশিবির। তবে হিসার এবং ভিওয়ানি-মহেন্দ্রগড় লোকসভা আসন নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত। এই দুই আসনে প্রার্থী দিতে চায় জেজেপি। কিন্তু বিজেপি তা ছাড়তে চাইছে না। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে দুষ্মন্তের বৈঠকের পরেও সমাধান সূত্র বার হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy