ছত্তীসগঢ়ে বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচারের পর মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার ডিরেক্টর ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অভিযোগ, ‘মাওয়ার ফারমা প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে ওই সংস্থাটিই ওই দিন স্বাস্থ্য শিবিরে নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর (এফডিএ) দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থার ডিরেক্টর রমেশ মাওয়ার ও তাঁর ছেলে সুমিতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় (প্রতারণা) মামলা রুজু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই সংস্থায় তল্লাশি চালিয়ে সংস্থাটির ওষুধ প্রস্ততকারক বিভাগটি বন্ধ করে দেয় এফডিএ। ওই দিন অস্ত্রোপচারের পর যে ওষুধগুলি সরবরাহ করা হয়েছিল সেগুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। গত শনিবার ও রবিবার ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুর এবং পাশাপাশি দু’টি গ্রামে সরকারি উদ্যোগে নির্মিত বন্ধ্যাকরণ শিবিরে অস্ত্রোপচারের পর মৃত্যু হয় ১৩ জন মহিলার। অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। পর পর দু’দিনের এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তিন সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এ দিন গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে এক সদস্যের বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ছত্তীসগঢ় সরকার। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা ও দায়রা বিচারক (অবসরপ্রাপ্ত) অনিতা ঝাঁ।
রাজ্যের চিকিত্সা ব্যবস্থার গাফিলতির অভিযোগ তুলে এ দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অপসারণ চেয়ে সরব হয়েছেন বহুজন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো মায়াবতী। লখনউয়ের একটি সভায় তিনি বলেন, “গোটা ঘটনাটাই সরকারি শিবিরের মধ্যে হয়েছে। সেখানে চিকিত্সার উপযুক্ত ব্যবস্থা এবং সরঞ্জামই ছিল না। ভুল চিকিত্সার কারণে অনেক দলিত এবং আদিবাসী মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এটা সত্যিই খুব দুঃখজনক।”
এফডিএ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার তল্লাশি অভিযানের সময় ওই সংস্থার বাইরে বেশ কিছু পোড়া ওষুধ পাওয়া যায়। তবে এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি সংস্থার কর্তৃপক্ষ। ওই ওষুধের নমুনা-সহ পুরো বিষয়টি উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছে এফডিএ। পাশাপাশি, গোটা রাজ্যে ওই সংস্থার তৈরি ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করার জন্যও জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই দিন সন্ধ্যের দিকে বিলাসপুরের একটি ওষুধের দোকানে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এই সংস্থাটি থেকেও বন্ধ্যাকরণ শিবিরগুলিতে ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে এফডিএ। ইতিমধ্যেই বন্ধ্যাকরণের জন্য ব্যবহৃত ৬টি ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেছে ছত্তীসগঢ় সরকার।
বিলাসপুরের সরকারি উদ্যোগে নির্মিত বন্ধ্যাকরণ শিবিরে অস্ত্রোপচারের পর ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ১৩। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অনেকে। এরই পাশাপাশি, গত রবিবার বিলাসপুরের কাছে পেন্দ্রা ও মারওয়াহি গ্রামেও দু’টি শিবিরে একই অস্ত্রোপচারের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন। অভিযোগ ছিল, চিকিত্সকদের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে চার জন চিকিত্সককে। শনিবারের শিবিরের মুখ্য শল্য চিকিত্সক আর কে গুপ্তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই এফআইআর দায়ের করা হয়। সরকারি সূত্রে খবর, এক লক্ষেরও বেশি সফল বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচারের জন্য চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন পুরস্কৃত হন ৫৯ বছরের ওই চিকিত্সক। শনিবারের শিবিরের পর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মাত্র এক জন সহকারী নিয়ে পাঁচ ঘণ্টায় ৮৩ জনের অস্ত্রোপচার করেন তিনি। বিলাসপুরের ওই হাসপাতালে এক দিনে অতগুলি অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামোও নেই বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy