ফাঁড়ির সামনে পড়ে রয়েছে ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। ঘটনার পরে এক ব্যাক্তিকে থানায় ধরে আনছেন এক পুলিশ কর্মী। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের উপর শাসকদলের আক্রমণ এ রাজ্যে নতুন নয়। থানায় ঢুকে রাজ্যে একের পর এক তাণ্ডবের ঘটনায় বারবারই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কিন্তু তার পরেও আইনের রক্ষক পুলিশের ভূমিকার যে কোনও পরিবর্তন হয়নি তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল রবিবার হুগলির চাঁপদানির ঘটনায়। অভিযোগ, এ দিন চাঁপদানি ফাঁড়িতে ঢুকে এক দল তৃণমূল সমর্থকদের তাণ্ডবের সামনে ঠুটো জগন্নাথের মতোই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল পুলিশকে।
সূত্রের খবর, ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশকে হুমকি, শাসানি দেওয়া থেকে শুরু করে ভাঙচুর— ওসির সামনেই রীতিমতো তাণ্ডব চলতে থাকে। পুলিশের তিনটি গাড়ি এবং আসবাবপত্র ভেঙে ফেলা হয়। আহত হন তিন পুলিশ কর্মী। অথচ পুলিশ ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়। পরে অবশ্য এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এই তাণ্ডবে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যে কাউন্সিলরের উপরে তাঁর খোঁজ মেলেনি বলেই পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন রুটিন তল্লাশি চালানোর সময় ৩নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম গুপ্তের এক বন্ধুর বাইক আটকানো হয়। পুলিশ ওই যুবকের কাছে বাইকের বৈধ কাগজপত্র দেখতে চায়। দেখাতে না পারলে বাইক-সহ ওই যুবকটিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। থানা থেকেই সরাসরি ফোন করে বন্ধু ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম গুপ্তকে। কিছু ক্ষণ পরেই কয়েক হাজার লোক নিয়ে ওই কাউন্সিলর থানায় চড়াও হন। চাঁপদানি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার জয়ন্ত পালের সঙ্গে বচসা বাধে তাঁর। অভিযোগ, ওসির ইউনিফর্মের কলার ধরে চড়থাপ্পড়, ঘুষি মারতে থাকেন বিক্রম। অন্য পুলিশ কর্মীরা বাধা দিলে কাউন্সিলরের দলবল থানায় হামলা চালায়। থানার আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে। বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা পুলিশের মোটরবাইক-সহ তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায় তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন শ্রীরামপুর, সিঙ্গুর, ভদ্রেশ্বর, চন্দননগর থানার পুলিশ কর্মীরা। হামলাকারীদের আক্রমণে ভদ্রেশ্বর থানার ওসি-সহ ৯জন পুলিশ কর্মী জখম হন। এক জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁর বাঁ চোখে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয় বলে অভিযোগ।
চাঁপদানি পুরসভার চেয়ারম্যানের কথায়, “ওসি ফোন করে ঘটনার কথা জানিয়ে সাহায্য চান। তারপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে যাই। ঝামেলায় যুক্ত কেউই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত নয়। তৃণমূলকে কলঙ্কিত করার জন্যই অন্য দল ফাঁড়িতে ঢুকে ঝামেলা করেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy