Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Adoption Maternity Leave

অনুমতি পেয়েও দত্তক সন্তানের মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে বঞ্চিত শিক্ষিকা এবং মহিলা শিক্ষাকর্মীরা

২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে অর্থ দফতরের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি হয় যে, সরকারি, সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। এই অনুমোদন শিক্ষা দফতরে যাওয়ার পরে তা এত দিন ধরে কেন আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হল না।

সংগৃহীত চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ১৬:১০
Share: Save:

সাত বছর আগে দত্তক সন্তান পালনের ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটির অনুমতি পেলেও শিক্ষিকা এবং মহিলা শিক্ষাকর্মীদের ভাঁড়ার শূন্য। অর্থ দফতরের অনুমোদন পাওয়ার পরেও প্রাপ্য মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে দীর্ঘ দিন ধরে বঞ্চিত তাঁরা। কারণ, অর্থ দফতরের নোটিস আসার এত কাল বাদে ম্যাচিং অর্ডার দিল শিক্ষা দফতর।

হীরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর ইনস্টিটিউশনের প্রধানশিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য বলেন, “এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা যে, অনুমতি পাওয়ার এত বছর বাদে টনক নড়ল সরকারের। আধুনিক সমাজব্যবস্থায় দত্তক নেওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক চাকরিজীবী মহিলাকেই সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। তাই সমাজে দত্তক নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।”

২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে অর্থ দফতরের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি হয় যে, সরকারি, সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীরা এই মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। এই অনুমোদন শিক্ষা দফতরে যাওয়ার পরে তা এত দিন ধরে কেন আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে শিক্ষক সংগঠনগুলি।

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “নবান্নের অর্থ দফতর থেকে নোটিস জারি হওয়ার পরে শিক্ষা দফতর থেকে তার ‘ম্যাচিং অর্ডার’ প্রকাশ করতে সাত বছর সময় লেগে গেল! এর ফলে বহু শিক্ষিকা বা মহিলা শিক্ষাকর্মী তাঁদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হলেন এত কাল। পর্ষদে কোনও শিক্ষক প্রতিনিধি না থাকার ফলে এই ধরনের বহু অসঙ্গতি দেখতে পাচ্ছি আমরা। অবিলম্বে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষক প্রতিনিধি গ্রহণ করা হোক।”

শিক্ষা দফতরে সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে দফতরের কাজের চাপ তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তার ফলেও এই ধরনের অনুমোদনপ্রাপ্ত বিজ্ঞপ্তি পড়ে থাকা উচিত নয় বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ, এতে অনেক শিক্ষিকাই তাদের প্রাপ্য ছুটি থেকে বঞ্চিত হলেন। এ প্রসঙ্গে, নারায়ণ দাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “অন্যান্য দফতরের তুলনায় শিক্ষা দফতরের এই দেরি করার কারণে বহু শিক্ষিকা যাঁরা এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা প্রাপ্য ছুটি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কী কারণে ‘ম্যাচিং অর্ডার’ দিতে দেরি হল, তা বিবেচনা করে দেখা উচিত শিক্ষা দফতরের।”

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য দত্তক সন্তানের বয়স ১৮ বছরের মধ্যে হতে হবে। ২০১৭ সালের অনুমোদিত বিজ্ঞপ্তি স্কুলের শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীদের জন্য আট বছর বাদে কার্যকর করা হচ্ছে। যাঁদের অনেকেরই সন্তানের বয়স ইতিমধ্যেই ১৮ অতিক্রান্ত।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “২০১৭ সালে অর্থ দফতর যে অর্ডার বার করেছিল, তার ‘ম্যাচিং অর্ডার’ বার করতে শিক্ষা দফতর সাত বছর নিল। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে শিক্ষা দফতর কী ভাবে চলছে। অতীতে পিতৃত্বকালীন ছুটির ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। আমরা তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অনুরোধ করে ‘ম্যাচিং অর্ডার’ বার করতে বাধ্য করেছিলাম। এই সাত বছর দেরির ফলে অনেক শিক্ষিকা ও মহিলা শিক্ষাকর্মী তাঁদের প্রাপ্ত ছুটি থেকে বঞ্চিত হলেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Adoption Maternity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy