আংশিক সময়ের চাকরির খোঁজ সংগৃহীত ছবি
কলেজজীবন মানেই মুক্তির স্বাদ উপভোগ আর বন্ধুদের সঙ্গে অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠা। ক্লাসের ফাঁকে ক্যান্টিনে আড্ডা বা ক্লাস না করে দলবেঁধে হৈহৈ করে সবাই মিলে সিনেমা দেখতে যাওয়া, সমস্ত কলেজপড়ুয়ারই হয়তো ভীষণ প্রিয়। কিন্তু এই সমস্ত হাসি-মজার বাইরেও ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনো বা ভবিষ্যতে চাকরির জন্যও এই সময়কে যথাযথ ভাবে কাজে লাগানো উচিত।
আজকাল চাকরিক্ষেত্রে অনেক সময়ই কাজের অভিজ্ঞতাকে খুব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। তাই কলেজে পড়াকালীন ফাঁকা সময়ে শুধু আড্ডা মারা ছাড়াও অনেক আংশিক সময়ের কাজ করতে পারেন ছাত্রছাত্রীরা। তবে শুধু স্বপ্নের কেরিয়ার গড়ার জন্য নয়, অনেক সময় বাড়ির বা নিজের জন্য অতিরিক্ত কিছু আয়ের জন্যও ছাত্রছাত্রীরা আংশিক সময়ের কাজ করে থাকেন।
চাকরিক্ষেত্রে যে প্রার্থীদের আংশিক সময়ের কাজের অভিজ্ঞতা আছে, তাঁদেরকে নিয়োগকারী সংস্থা সবসময়ই অতিরিক্ত গুরুত্ব সহকারে বিচার করেন। তাঁদের এই অভিজ্ঞতাকে নিয়োগকর্তারা কাজের প্রতি আগ্রহ হিসাবেও বিবেচনা করেন। এই আংশিক সময়ের কাজে যে দক্ষতা অর্জন করেন তাঁরা, পরবর্তী কালে সেগুলিই খতিয়ে দেখে নিয়োগকারী সংস্থা।
কলেজে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনোর পাশাপাশি যে আংশিক সময়ের চাকরিগুলি করতে পারেন, সেগুলি হল-
১. কনটেন্ট রাইটিং: যে ছাত্রছাত্রীদের লেখালেখির সহজাত দক্ষতা রয়েছে, তাঁরা এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নানা ধরণের লাভজনক ‘কনটেন্ট’ লিখতে পারেন। এই ‘কনটেন্ট লেখার কাজটি পড়াশুনোর ফাঁকে যে কোনও সময়েই করা যায় আর তাই ছাত্রছাত্রীদের কাছে এই কাজের জনপ্রিয়তাও অনেক। কোম্পানিগুলি তাদের ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া পেজের বিভিন্ন ধরনের লেখালেখির জন্য মাঝেমধ্যেই শিক্ষার্থীদের আংশিক সময়ের জন্য নিযুক্ত করেন। এই কাজ করে শিক্ষার্থীরা মাসে সর্বোচ্চ ৫,০০০-৮,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এই কাজে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির জন্য শিক্ষার্থীদের লেখার দক্ষতারও উন্নতি ঘটে।
২. ডেটা এন্ট্রি অপেরাটার: দ্বাদশ পাশ করেই ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন কোম্পানিতে ডেটা এন্ট্রি অপারেটারের কাজ আংশিক সময়ের জন্য করতে পারেন। কোম্পানিগুলি তাদের সমস্ত ডেটা সামলানোর দায়িত্ব কোনও নির্ভরযোগ্য কর্মীর হাতেই দিতে চান। নানা ধরনের ডেটা বুঝে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি বের করে আনতে পারলে ও সেগুলি কম্পিউটারের ডেটাশিটে ঠিক করে সাজাতে জানলেই এই কাজ ছাত্রছাত্রীরা করতে পারবেন। এই কাজ করেও কলেজ শিক্ষার্থীরা উপার্জন করতে পারেন অনায়াসে।
৩. কল সেন্টার কর্মী বা গ্রাহক সেবা কার্যনির্বাহক: শিক্ষার্থীরা কলেজে পড়াশুনোর পাশাপাশি কল সেন্টার কর্মী বা গ্রাহক সেবা কার্যনির্বাহক হিসাবেও কাজ করতে পারেন আংশিক সময়ের জন্য। ছাত্রছাত্রীরা ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির গ্রাহকদের পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যা শুনে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেন বা কোম্পানির নানা পরিষেবার ব্যাপারে গ্রাহকদের জানান। পড়াশুনোর পাশাপাশি এই কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন শিক্ষার্থীরা। এর জন্য শুধু প্রয়োজন ভাষার উপর দখল ও কথা বলার দক্ষতা। এই কাজ থেকেও ছাত্রছাত্রীরা ভাল রকম টাকা উপার্জন করতে পারেন।
৪. রিসেপশনিস্ট: যাঁরা কোনও সংস্থায় ফ্রন্ট ডেস্কে বসে অতিথিদের ব্যবস্থাপনা, অতিথি তালিকা বানানো ও অন্যান্য কাজের হিসাব রাখার মতো দায়িত্ব সামলান, তাঁদেরকেই রিসেপশনিস্ট বলা হয়। বিভিন্ন হোটেল, হাসপাতলে এই কাজ আংশিক সময়ের জন্য শিক্ষার্থীরা করতে পারেন। এর জন্য কোনও বিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতারও প্রয়োজন হয় না।
৫. গৃহশিক্ষক বা অনলাইন শিক্ষক: যাঁরা পড়াশুনোয় মোটামুটি ও যে কোনও বিষয় অন্যদের পড়াতে ভালোবাসেন, তাঁরা নিঃসন্দেহে এই পেশাটি বেছে নিতে পারেন। শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে নিতে চাইলেও এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। অতিমারির পর থেকে কোচিং সেন্টার, নিজের বাড়ি ছাড়াও অনলাইনে টিউটরদের চাহিদা প্রচুর। তাই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যদের পড়িয়েও বেশ কিছু অর্থ উপাৰ্জন করতে পারেন। অনেকের ক্ষেত্রে এই আয়ের পরিমাণ সর্বাধিক ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে!
এই সমস্ত আংশিক সময়ের কাজের অভিজ্ঞতাই ছাত্রছাত্রীদের কিছু না কিছু শেখার সুযোগ দেয়, কাজের জগৎকে চেনার সুযোগ দেয় ও তাঁদের দক্ষতার উন্নতিতেও সাহায্য করে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে কলেজে পড়ার সময় পড়ুয়ারা উপরোক্ত কাজগুলি করে দেখতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy