শীর্ষ আদালতের নির্দেশে চাকরি বাতিল প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর। যার জেরে স্কুলে স্কুলে দেখা দিয়েছে শিক্ষক সঙ্কট। এই আবহেই স্কুলে এল সরকারি নির্দেশ। পড়ুয়াদের নিয়ে সামার প্রজেক্ট করাতে হবে। কিন্তু যেখানে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে এই সামার প্রজেক্ট করাবেন কারা! এই চিন্তাতেই শিক্ষকমহলের একাংশ।
পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে স্কুলের প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সামার প্রজেক্টের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘চাকরি বাতিলের ফলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর প্রবল ঘাটতি স্কুলগুলিতে। গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৭০% স্কুলে শিক্ষক ঘাটতি। তা হলে এই সামার প্রজেক্ট করাবেন কারা? বিকাশভবন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আধিকারিকেরা সমস্ত বিষয় জেনেও কিছুই জানেন না এমন আচরণ করছেন!’’
আরও পড়ুন:
সরকারের সামার প্রজেক্টের বিজ্ঞপ্তিতে বেঁধে দেওয়া হয়েছে একাধিক গাইডলাইন। উল্লেখ রয়েছে, রিসার্চও ইনোভেশনে উৎসাহ বৃদ্ধি, হলিস্টিক ডেভেলপমেন্ট, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞানের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় পড়ার আগ্রহ তৈরি করতে হবে এই সামার প্রজেক্ট এর মাধ্যমে। এ ছাড়াও প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মধ্যে সাক্ষরতা এবং সংখ্যা চেনার উপর জোর দিতে হবে। পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ের উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মধ্যে স্থানীয় এলাকার ইতিহাস, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য সচেতনতা, সমস্ত সরকারি দফতরের কাজে দক্ষতা কেমন থাকা উচিত তা নিয়ে প্রজেক্ট তৈরি করতে হবে। আবার, নবম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের লাইব্রেরি, কলেজ, হাসপাতাল, বস্ত্রবয়ন শিল্পকেন্দ্র, স্থাপত্য ভাস্কর্য শিল্পকেন্দ্র, পুরসভা এবং গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রজেক্ট বানাতে হবে। উঁচু ক্লাস অর্থাৎ একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তার উপর প্রজেক্ট করতে হবে। এ ছাড়াও আদালত, পুলিশ স্টেশন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ব্যাঙ্কের মত জায়গায় পরিদর্শন করে সেই সমস্ত পেশা সম্পর্কে প্রজেক্ট তৈরি করতে হবে পড়ুয়াদের।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস ‘‘বিগত বছর গুলির অভিজ্ঞতার নিরিখে বলা যায়, বেশিরভাগ স্কুল এ সব নিয়ে ভাবেই না। আর গরমের ছুটিতে বিদ্যালয় প্রধান কোনও শিক্ষককে দিয়েই এ সব করাতে পারেন না। সবার আগে অপরিকল্পিত ভাবে ছুটি দেওয়া বন্ধ করতে হবে।’’