Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
NIRF Ranking 2024

এনআইআরএফ র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথম একশোয় রাজ্যের ৭ কলেজ, রামকৃষ্ণ মিশনেরই ৩, প্রশ্ন অনুদান নিয়ে

জাতীয় স্তরে মোট ১০০টি সেরা কলেজের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কলকাতার যে পাঁচটি কলেজ ওই তালিকায় রয়েছে— তিন র‍্যাঙ্কে রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টিনারি কলেজ, ছ’নম্বরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ-সহ আরও কলেজের নাম রয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ১২:৩২
Share: Save:

প্রকাশিত হয়েছে দ্য ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (এনআইআরএফ)-এর চলতি বছরের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা। রাজ্যের সাতটি কলেজের নাম রয়েছে সেই তালিকায়। এর মধ্যে রয়েছে কলকাতার পাঁচটি কলেজ। জাতীয় স্তরের এই ফল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাজ্যের কলেজগুলির।

২০১৫ থেকে প্রতি বছরই জাতীয় স্তরে সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করে দ্য ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (এনআইআরএফ)। সেই মতো সোমবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দিল্লিতে চলতি বছরের তালিকা প্রকাশ করেছেন।

জাতীয় স্তরে মোট ১০০টি সেরা কলেজের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কলকাতার যে পাঁচটি কলেজ ওই তালিকায় রয়েছে— তৃতীয় স্থানে রহড়ার রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টিনারি কলেজ, ছ’নম্বরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, ১৭ নম্বরে রয়েছে বেলুড়ের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির, ২৪ নম্বরে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ, ৩২ নম্বরে মেদিনীপুর কলেজ, ৮৮ নম্বরে রয়েছে স্কটিশচার্চ কলেজ এবং ৯১ নম্বরে রয়েছে বেথুন কলেজ।

জাতীয় স্তরের তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টিনারি কলেজ। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৭২.৯৭। কলেজের অধ্যক্ষ বোধিসত্ত্ব মহারাজ বলেন, ‘‘প্রত্যেকের চেষ্টার জন্যই এমন ফল হয়েছে। আরও ভাল ফল করার জন্য মাইক্রোবায়োলজি, কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার ডিগ্রি চালু হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট কোর্সও শুরু করেছে প্রতিষ্ঠান।’’

তালিকায় ৭২.১৫ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ। কলেজের অধ্যক্ষ ডমিনিক স্যাভিও জানিয়েছেন তিনি এবং তাঁর প্রতিষ্ঠান এই ফলে খুশি। কলেজের কর্মী, শিক্ষক, অভিভাবক, জেসুইট সম্প্রদায়ের সাহায্যেই তালিকায় এমন স্থান পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘এই র‍্যাঙ্কিং আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ এর ফলে আমরা বুঝতে পারি পরিকল্পনামাফিক কাজ হচ্ছে। পাশাপাশি, পরবর্তী সময়ে আরও ভাল করার উৎসাহ পাওয়া যায়।’’

প্রতি বছরই এই তালিকা প্রকাশ করা হয় থাকে। গত বছর রাজ্যের মোট আটটি কলেজের নাম ছিল। গত বছর ১৯ নম্বরে ছিল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ। এই বছর সেই র‍্যাঙ্ক পিছিয়ে ২৪ হয়েছে। তাদের নম্বর ৬২.৭৮। এই প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ একচিত্তানন্দ বলেন, ‘‘এই ফল খারাপ হওয়ার প্রধান কারণ সে ভাবে অনুদান মিলছে না। ইউজিসি-র অনুদান বহুদিন পাচ্ছি না আমরা। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছেও অনুদানের জন্য আবেদন জানানো রয়েছে। এখনও পাওয়া যায়নি। ফলে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠান। যার ফল চলতি বছরের এই র‍্যাঙ্ক।’’

বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট, ফার্মাসি, মেডিক্যাল, ডেন্টাল, ল, আর্কিটেকচার অ্যান্ড প্ল্যানিং, এগ্রিকালচার অ্যান্ড অ্যালায়েড সেক্টরস, ইনোভেশন, ওপেন ইউনিভার্সিটি, স্কিল ইউনিভার্সিটি এবং স্টেট পাবলিক ইউনিভার্সিটির আলাদা করে তালিকা প্রকাশ করা হয় এনআইআরএফ-এর তরফে। গত বছর ১০০ নম্বরে ছিল কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজ। তবে, বছরভর কঠোর পরিশ্রমে চলতি বছর তালিকায় ৮৮ নম্বরে নাম রেখেছে স্কটিশচার্চ। নম্বর পেয়েছে ৫২.২০। এই সম্পর্কে কলেজ অধ্যক্ষ মধুমঞ্জরী মণ্ডল বলেন, ‘‘এই ধরনের ফল কলেজের আরও উন্নতির স্বার্থে খুবই প্রয়োজনীয়। চলতি বছর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের অনুদান পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি অনুদান পাওয়ার জন্য এই র‍্যাঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও চলতি বছর থেকে আরও অনেক সার্টিফিকেট কোর্স শুরু করা হয়েছে।’’

গত বছর ৭৮-এ র‍্যাঙ্ক থাকলেও চলতি বছর ৯১-এ র‍্যাঙ্ক হয়েছে কলকাতার দেড়শো বছর পুরনো বেথুন কলেজের। এই বিষয়ে কলেজের অফিসার-ইন-চার্জ রীতা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে বেথুনের নাম তালিকায় থাকে। ২০২০ সালে ৮৮তে নাম ছিল। তারপর ৭৮ এসেছিল এবং চলতি বছর ৯১-এ। অর্থাৎ ১০০ এর মধ্যেই থাকে নাম। এই ধরনের ফল প্রেরণা দেয় আরও উন্নতি করার। যদিও অনুদান নিয়ে সমস্যা রয়েছে অনেকটাই। সেই মতো অনুদান পাওয়া যায় না, পাশাপাশি চার বছরের স্নাতক স্তরের কারণে অধিকাংশ পড়ুয়া কলেজমুখী হচ্ছে না। অন্যান্য বিভিন্ন কোর্সের দিকে ঝুঁকছে। সব মিলিয়েই র‍্যাঙ্কে তার প্রভাব পড়েছে।’’

এই সাতটি কলেজের মধ্যে মাত্র দু’টি কলেজ সম্পূর্ণ ভাবে সরকারি। ১০০টি কলেজের তালিকায় রাজ্যের মাত্র সাতটি কলেজের নাম রয়েছে। তা হলে জাতীয় স্তরে শিক্ষার উৎকর্ষের বিচারে কোথায় দাঁড়িয়ে রাজ্য, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE