রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ‘‘নাটবল্টু’’র অ্যাখা দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। পাল্টা অন্তর্বর্তী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় বলেন ‘‘আন্দোলনের নামে যে ভাবে ঘরে তালা দেওয়া, সিকিয়োরিউটি অফিসারকে হেনস্থা ও মারধর করা হয়েছে তার উত্তর আমি আইনের মাধ্যমেই দেব। অন্য কোনও কথার জবাব আমি দেব না।’’
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে গত তিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠন সারা বাংলা শিক্ষা বন্ধু সমিতি। গত মঙ্গলবার জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে উপাচার্যের ঘরের দরজায় তালা ঝোলানো হয়। শেষমেশ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশি নিরাপত্তা সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকেন উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার।
আরও পড়ুন:
আর এই ঘটনায় আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ালেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘‘সমস্যা কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বিয়েবাড়ি হিসাবে ভাড়া দিয়েছে বলে ভয়? উচ্চ শিক্ষা দফতরের অনুমোদন ছাড়া পর পর ইসি মিটিং করছে বলে ভয়? অম্বেডকরের নামে কথা বলে এ সব নাটবল্টুরা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তো কথা বললেই মিটে যায়, কেন কোর্ট পর্যন্ত দৌড়তে হচ্ছে?’’
প্রসঙ্গত, কর্নাটক হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমলকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের দাবি, উপাচার্য হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) যে মানদণ্ড বেঁধে দিয়েছে, তা পূরণ করতে পারেননি শুভ্রকমল। তা সত্ত্বেও প্রাক্তন বিচারপতিকে উপাচার্য পদে বসানো হয়েছে। অথচ, অন্তর্বর্তিকালীন মেয়াদে ছ’মাসের বেশি তাঁর পদে থাকার কথা নয়। অভিযোগ, ২০২৩ সালে রাজ্যপাল তাঁকে উপাচার্য পদে নিযুক্ত করার পর থেকে পদ আঁকড়ে রয়েছেন তিনি।
বুধবার বেশ কিছু শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী বলপূর্বক উপাচার্যের ঘরে ঢুকে পড়েন। সিকিয়োরিটি অফিসার-সহ নিরাপত্তারক্ষীদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ শুভ্রকমলের। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় সিকিয়োরিটি অফিসারকে থানায় এফআইআর করার কথা বলেছি। আন্দোলনের নামে হেনস্থা যাঁরা করছেন তাঁদের অনেকেরই চাকরি চলে গিয়েছে। তাই বলে মারধর করা ঠিক নয়।’’ শিক্ষামন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করেই উপাচার্য বলেন, ‘‘যে যা খুশি মন্তব্য করুক, আমার যা করার আমি করব।’’
মঙ্গলবার বিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উপাচার্য। সেই মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু আন্দলনকারীদের উদ্দেশে জানিয়েছিলেন শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ করতে। না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে আদালত। আর এই নির্দেশের পরই জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে যাতে বিনা বাধায় যাতায়াত করতে পারেন উপাচার্য তা নিশ্চিত করে গিরিশ পার্ক থানা। আর বুধবার এই নির্দেশের মাঝেই উপাচার্যের ঘরে সিকিয়োরিটি অফিসার-সহ নিরাপত্তারক্ষীর উপর হেনস্থার অভিযোগ উঠল।