ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। রাজ্য সরকার চার দিনের জন্য স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে ইতিমধ্যেই। তবে বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল এখনই সেই পথে হাঁটতে চায় না। ঝড়ের গতি প্রকৃতির উপর নজর রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী তারা।
রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, “ঝড়ের গতিপ্রকৃতির উপরে আমরা নজর রাখছি। বাংলায় এর প্রভাব বেশি হলে আমরা স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেব কয়েক ঘণ্টার নোটিসে। তবে পাশাপাশি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হবে, অতিরিক্ত ঝড়-বৃষ্টিতে তারা যেন স্কুলে না আসে।”
আরও পড়ুন:
ডেনা-র প্রভাবে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাসহ কলকাতায় তুমুল ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ন’টি জেলায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বুধবার, ২৩ অক্টোবর থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, আইসিডিএস সেন্টারগুলিও বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসরকারি স্কুলগুলিকেও অনুরোধ করা হয়েছে তারা যেন দুর্যোগের সময়ে স্কুল বন্ধ রাখে।
আরও পড়ুন:
তবে আসন্ন দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বেসরকারি স্কুল অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে অন্যতম লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লস। স্কুলের অধ্যক্ষ রূপকথা সরকার বলেন, “ঘূর্ণিঝড় এবং সর্বোপরি পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে ২৪ এবং ২৫ অক্টোবর অনলাইন ক্লাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। যাতে ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষা বজায় থাকে এবং পড়াশোনারও ক্ষতি না হয়।”
রামমোহন মিশন স্কুলের মতো ডিপিএস হাওড়া-ও পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। অধ্যক্ষ সুনীতা অরোরা বলেন, “আমরা অনলাইন ক্লাস নেওয়ার সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেব।”
দক্ষিণ কলকাতা অন্যতম স্কুল লক্ষ্মীপত সিংহানিয়া অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর মিনা কাক বলেন , "আমরা ২৪ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করেছি। পরিস্থিতির বিচার করে অনলাইনেও ক্লাস করানো হতে পারে।"
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়টি মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে অবস্থান করছে। রয়েছে ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৫২০ কিলোমিটার দূরে, পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড় আরও শক্তি বৃদ্ধি করবে বলেই আশঙ্কা। এর পরে ২৪ তারিখ সন্ধ্যা থেকে ২৫ তারিখ সকালের মধ্যে উত্তর ওডিশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যবর্তী উপকূলে ল্যান্ডফল হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পুরী এবং সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী কোনও একটি অংশে, সম্ভবত ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামরা বন্দরের মাঝে কোথাও এই ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে।