যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথম উদ্যোগ এবং উদ্ভাবন (ইনোভেশন অ্যান্ড অন্তেপ্রেনিওরশিপ)-এর উপর একটি কর্মশালার আয়োজন করা হবে। কেন্দ্রের উদ্যোগে পূর্ব ভারতের এই প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই এই কর্মশালার উদ্যোক্তা হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। কর্মশালায় রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
রাজ্যের শিক্ষকদের উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী কেন্দ্রীয় মন্ত্রক। তাই কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রকের ইনোভেশন কাউন্সিল সেল (এমআইসি) এবং অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই)-এর যৌথ উদ্যোগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে একটি ‘ফ্যাকাল্টি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’। বিষয়— উদ্যোগ এবং উদ্ভাবন। যা আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ইনোভেশন কাউন্সিল (আইআইসি)। চলতি মাসের ২৪, ২৫, ২৬, ২৮ এবং ২৯ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসেই হবে এই কর্মশালা।
স্বাধীনতার বহু আগেই ১৯০৬ সালে স্বদেশী আন্দোলনের উত্তাল সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ বেঙ্গল। যা পরবর্তী কালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একেবারে গোড়ার দিন থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবন, নয়া উদ্যোগ বা স্টার্ট আপ তৈরি, প্রযুক্তিগত উন্নতি, গবেষণার উপর বিশেষ নজর দেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্যের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখতে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনোলজি ভবনে উদ্ভাবন এবং স্টার্ট আপ কার্যক্রমের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ইনস্টিটিউট ইনোভেশন কাউন্সিল (আইআইসি)। সেখানে এই বিশেষ কর্মশালার আয়োজন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতের শিক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে পূর্ব ভারতের স্কুল ইনোভেশন নোডাল কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির মধ্যে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা সংস্কৃতি প্রচারের অনুমোদন দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই আমাদের শিক্ষকেরা বিভিন্ন স্কুলে এই উদ্যোগ শুরু করেছেন। এখন এই ‘ফ্যাকাল্টি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’-এর মাধ্যমে আমরা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করব। এই কর্মসূচি ‘মাইটি বেঙ্গল’ এবং আত্মনির্ভর ভারতের নির্মাণের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
উল্লেখ্য, উদ্ভাবন এবং উদ্যোগী কার্যকলাপের প্রসারের এই বিশেষ কর্মশালায় কোনও রেজিস্ট্রেশন ফি ছাড়াই অংশগ্রহণ করতে পারবেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। বরং অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াত খরচ এবং সাম্মানিক বাবদ কিছু অর্থ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগ্রহীরা iicju@jadavpuruniversity.in মেল আইডি-র মাধ্যমে কর্মশালায় যোগদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শিক্ষকদের পাশাপাশি কর্মশালায় যোগ দেবেন দেশের বিভিন্ন খ্যাতনামী শিক্ষাবিদ, শিল্প বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। আলোচনা হবে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম, ফান্ডিং, মেধাস্বত্ব অধিকার, গবেষণার বাণিজ্যকরণ-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নিয়ে অভিজ্ঞরা তাঁদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবেন শিক্ষকদের সঙ্গে।
কর্মশালার সামগ্রিক সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকবেন অধ্যাপক শময়ন মজুমদার। পরিচালন কমিটিতে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অধ্যাপকেরা। কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী ভাবনার প্রসারে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা যাবে বলেই আশাবাদী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।