Advertisement
E-Paper

বাড়ছে স্কুলছুট! উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে ৫ লক্ষ

একাদশ শ্রেণিতে প্রথম সিমেস্টারে যত ছাত্র ভর্তি হয়েছিল, তত জন পরীক্ষাও দিয়েছিল। পুজোর পরে অ্যাকাউন্টে ট্যাব বা মোবাইলের টাকা ঢুকতেই পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকে স্কুলগুলিতে।

প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:১২
Share
Save

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নাম নথিভুক্ত (এনরোলমেন্ট) করল না ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পড়ুয়া। অর্থাৎ স্কুলছুট বৃদ্ধি পাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও। ফলে, অন্যান্য বারের তুলনায় এক লাফে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমল বেশ খানিকটা। এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ-র বেশি। যা গত বছর ছিল প্রায় আট লক্ষ মতো। শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক জানান,

মূলত যে সমস্ত পড়ুয়া ২০২৩ সালে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁরা চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে। ২০২৩-এ মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন ৫,৬৫,৪২৮ জন। অর্থাৎ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিও হয়েছিলেন সেই মতো অনেক কম শিক্ষার্থী। তাই চলতি বছর নাম নথিভুক্তকরণে কম পড়ুয়া থাকাটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছে শিক্ষা সংসদ।

অন্যদিকে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের ১০ হাজার টাকা হাতে পাওয়ার পরেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা ছেড়ে দেয় বহু ছাত্র-ছাত্রী। একই ছবি একাদশের ক্ষেত্রেও। মূলত উপযুক্ত পঠনপাঠনের পরিকাঠামো না থাকায় পড়ুয়ারা আগ্রহ হারাচ্ছে পড়াশোনার প্রতি।

একাদশ শ্রেণিতে প্রথম সিমেস্টারে যত ছাত্র ভর্তি হয়েছিল, তত জন পরীক্ষাও দিয়েছিল। অভিযোগ, পুজোর পরে অ্যাকাউন্টে ট্যাব বা মোবাইলের টাকা ঢুকতেই পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকে স্কুলগুলিতে। স্কুলের তরফ থেকে বিভিন্ন পড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা বলে, আর পড়াশোনা করবে না। পড়ুয়াদের বক্তব্য, পারিবারিক সমস্যা ও আর্থিক সচ্ছলতার অভাবেই তারা পড়াশোনা ছেড়েছে।

বাঙুর স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র দেবা প্রামাণিক বলেন, ‘‘পারিবারিক কারণে আমি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন করিনি। বর্তমানে আমি চাকরি করছি। ট্যাবের টাকা পড়েছে কি না, তা আমার দেখা হয়নি।’’

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের মতে, যত সময় যাচ্ছে, ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে স্কুলছুটের ঘটনা। যত ক্ষণ পর্যন্ত ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা না পাচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত পড়ুয়ারা স্কুলে উপস্থিত থাকছে। তার পরেই রাজ্যের প্রত্যেকটি স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে শুরু করছে।

শিক্ষা সংসদের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে সেশনের শুরুতে ৩-৪ মাস যত সংখ্যক পড়ুয়া স্কুলে আসছে, ১০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করলে সেই সংখ্যা অনেকটাই কমে যাচ্ছে। বহু ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা নকল বিল জমা দিয়ে তার পরে স্কুলে আর আসে না, নাম নথিভুক্তির প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ করে না। গত বছর প্রায় নয় শতাংশ পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করেছিল। এ বার সেই সংখ্যাটা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তার কারণ, একাদশ শ্রেণিতেও ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের।

সূত্র, বিভিন্ন জেলা থেকে ডি-আইদের দেওয়া তথ্য বিকাশ ভবনে যা এসেছে, তাতে নকল বিল জমা দিয়ে স্কুল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও ১০ শতাংশ, আবার কোথাও ২০ শতাংশ পড়ুয়া পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে।

শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা, ফেব্রুয়ারি মাসে একাদশের প্রথম সিমেস্টারের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা আছে, সেখানেও বহু পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করবে না। তার কারণ ইতিমধ্যে পড়ুয়া অনেকটাই কমেছে একাদশ শ্রেণিতে। প্রধানশিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া-সহ বিভিন্ন জেলায় দ্বাদশ শ্রেণিতে স্কুলছুটের সংখ্যা কোথাও ১৫, কোথাও ২০ শতাংশ। এর প্রধান কারণ বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকা, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের রাজনীতি। এর জন্য সরকারের তরফে শীঘ্রই এডুকেশন কমিশন গঠন করে সঠিক ভাবে সার্ভে করা দরকার।’’

কলকাতার নারকেলডাঙা হাইস্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১০ শতাংশ পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করেনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের এই সংখ্যা ২০ শতাংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক ছাত্র-ছাত্রীর কাছে ট্যাবের টাকা নেওয়া এখন মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়াশোনা গৌণ। টাকা নিয়ে অনেকে যেমন স্কুলে আসছে না, তেমনই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও বসছে না। আমরা বার বার বলছি, এ ভাবে অর্থের অপচয় না করে, এই বিপুল পরিমাণ টাকা শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহার করা হোক।’’

উল্লেখ্য, চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে ৩ মার্চ। চলবে ১৮ মার্চ পর্যন্ত। এ বছর প্রায় ৫ লক্ষ ৪ হাজার পড়ুয়া পরীক্ষা দিচ্ছে।

Higher Secondary WBCHSE school dropouts

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।