টেট প্রস্তুতি। প্রতীকী ছবি।
আগামী ১১ ডিসেম্বর হতে চলেছে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা। যেখানে বাংলা বিষয়েরও পরীক্ষা হবে। বলা বাহুল্য বাংলার ৩০ নম্বর একজন পরীক্ষার্থীর ইতিবাচক নির্ণায়ক হিসাবেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী পরীক্ষায় বাংলা বিষয় অংশে দুটি ভাগ থাকবে। প্রথমটি হল প্রদত্ত অংশের থেকে নির্বাচিত কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। আর দ্বিতীয়টি হল পেডাগজি। যেহেতু পরীক্ষা একেবারেই সামনে এসে পড়েছে তাই চটজলদি কিছু বিষয় নিয়ে আমরা একটু আলোচনা করে নিই।
যেহেতু বোধপরীক্ষণ থাকছে তাই আলাদা করে বোধপরীক্ষণের নিয়মগুলি অবশ্যই জানা প্রয়োজন। প্রশ্ন হবে বহুধা উত্তরভিত্তিক। সেজন্য স্পষ্ট উত্তর না জানা থাকলে নিঃসন্দেহে অসুবিধা হবে। প্রথমেই আমাদের জানতে হবে প্রশ্ন কেমন আসতে পারে—যেহেতু দুটি অংশ থাকবে, একটি অনুচ্ছেদ ও অন্যটি স্তবক তাই আগে থেকে সতর্ক হতে হবে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে।
বোধপরীক্ষণের নিয়ম (অনুচ্ছেদ):
বোধপরীক্ষণের নিয়ম (স্তবক):
এবার আসা যাক প্রশ্নের ধরনে। যে যে রকমের প্রশ্ন তাই পরীক্ষায় আসতে পারে তা হল—
১. তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন: প্রদত্ত অনুচ্ছেদ/স্তবক থেকে যে প্রশ্নের উত্তর নির্বাচন করে বা খুঁজে নিয়ে লিখতে হবে।
২. তত্ত্বভিত্তিক প্রশ্ন: প্রদত্ত অনুচ্ছেদ/স্তবকের মূল ভাবটির উপর ভিত্তি করে যখন অনুষঙ্গ বিচার করে উত্তর নির্বাচন করতে হয়।
৩. ব্যাকরণগত প্রশ্ন: এই অংশে দু’ধরনের প্রশ্ন হতে পারে। প্রথমটি হল মুখস্থভিত্তিক আর দ্বিতীয়টি হল নির্ণয়জাত। প্রথম অংশে সমার্থক শব্দ, প্রতিশব্দ, বিপরীত শব্দ, সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ, শব্দভাণ্ডার, ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, পদান্তর, পদপরিচয় ইত্যাদি বিষয়গুলি পড়বে, আার দ্বিতীয় অংশে নির্ণয়ভিত্তিক বিষয়গুলি আসবে, যেমন সন্ধি, সমাস, কারক বিভক্তি, প্রত্যয়, বাক্য-বাচ্য ইত্যাদি।
আমরা আশা রাখতে পারি কোনও পরীক্ষার্থী যদি এই ধরনের প্রশ্নগুলি নিয়মিত চর্চা করেন তাহলে টেট পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ের প্রথম অংশে অনায়াস সাফল্য আসবে। হ্যাঁ এটা নিয়ে অবশ্য দ্বিমত নেই যে কবিতা অংশের অর্থ বোঝা বা সেখান থেকে উত্তর করা হয়ত একটু কঠিন, কিন্তু নিয়মিত চর্চা ও অভ্যাসের ফলে তা কাটানো যেতে পারে। পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ হল বিগত বছরের আপার প্রাইমারি পরীক্ষার ও সিটেট পরীক্ষার প্রশ্নগুলি অভ্যাস করতে হবে। সাধারণত অনুচ্ছেদ বা স্তবক যাই হোক না কেন প্রথমে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন আসে। তারপর আসে ব্যাকরণগত প্রশ্ন। চারটে উত্তর (যে কোনও ক্ষেত্রে) যাচাই করে তবেই যেন আমরা উত্তরপত্রে দাগ দিই। মুখস্থ করতে হয় এমন ব্যাকরণের বিষয় কিন্তু যে কোনও ব্যাকরণ বইয়ে বর্ণমালা ক্রমিক দেওয়া থাকে। সেক্ষেত্রে আমরা সবটা তো পড়বই তবে প্রত্যেকটি বর্ণের শুরু যেখান থেকে সেখানের উদাহরণগুলি বেশি ভাল করে পড়ব। সাধারণত কমিশন এই ধরনের উদাহরণকেই প্রশ্ন হিসেবে অধিক পছন্দ করে। বিভিন্ন বৈদ্যুতিন মাধ্যমে বহুধা উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন-উত্তরের আলোচনা চক্র অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই সেই অনুষ্ঠানগুলি থেকে নিজেদের দক্ষতা যাচাই করে নিচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল একটি ব্যাকরণের বা পেডাগজির অধ্যায় থেকে যত ধরনের প্রশ্ন হতে পারে সবগুলোই কি সেখানে আলোচিত হয়েছে, হচ্ছে বা হবে? উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই—কারণ আমরা সবাই জানি উত্তর নেতিবাচক। তাহলে উপায় কী? উপায় হলো যে কোনও বিষয় সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে গেলে মূল থেকে বিষয়টি জানা প্রয়োজন। তবে একথা কখনওই বলা হচ্ছে না যে অনুশীলন বন্ধ করে দিতে হবে—অনুশীলন অবশ্যই করা উচিত তবে প্রাথমিক পাঠ সম্পূর্ণ হওয়ার পর। সন্ধি, সমাস, কারক-বিভক্তি-অনুসর্গ, প্রত্যয়, বাক্য-বাচ্য নিঃসন্দেহে অনুশীলনভিত্তিক। কিন্তু যে বিষয়গুলি শুধুমাত্র মুখস্থনির্ভর সেগুলি চর্চা করতে হবে। কারণ না জেনে ভুল লেখা মূর্খামির পরিচয়।
আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। প্রস্তুতি তুঙ্গে। সকল পরীক্ষার্থী নিজ নিজ দক্ষতার পরিচয় দিতে চলেছেন। বাংলা বিষয় নিয়ে ভয় পাওয়ার কিন্তু একদমই কোনও কারণ নেই। ব্যাকরণের সঠিক জ্ঞান ও পেডাগজির সঠিক বিশ্লেষণ ক্ষমতা যে কোনও পরীক্ষার্থীর জন্যই সর্বোত্তম রসদ। তাই আর দেরি না করে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ি আগামী সাফল্যের দিকে। রাইস এডুকেশনের তরফে রইল আন্তরিক শুভ কামনা ও অটুট আত্মবিশ্বাসের ভরসা। জয় হবেই।
এই প্রতিবেদনটি ‘রাইস এডুকেশন’-এর পক্ষ থেকে টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে সংকলিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy