Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Career in Consulting Jobs

কেরিয়ার গড়তে চান পরামর্শদাতা হিসেবে? কী ভাবে শুরু করবেন? রইল বিস্তারিত তথ্য

সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে এই পদে দক্ষ স্নাতকদের চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি, আকর্ষণীয় বেতনক্রমের কারণে বর্তমানে নবীন স্নাতকেরাও সুযোগ খুঁজে নিচ্ছেন।

Consultant

প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ১৪:২৫
Share: Save:

ছোটবেলা থেকেই পরামর্শদাতা হিসেবে বাবা-মাকে পাশে পেয়েছেন। একটু বড় হওয়ার পর শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলে দিতে শুরু করলেন, কী ভাবে পড়লে ভালো নম্বর পাওয়া যাবে। আরও একটু বড় হওয়ার পর বন্ধু-বান্ধবীরা পরামর্শ দিতে শুরু করলেন, যে কী ভাবে পড়াশোনার সঙ্গে একটু খেলেও নেওয়া যেতে পারে। জীবনের প্রতি পদে পদে পরামর্শ দেওয়ার জন্য অভিজ্ঞ মানুষেরা রয়েছেন। এমন পরামর্শ তো পেশাদার মানুষদেরও প্রয়োজন হয়। তাঁদের ক্ষেত্রে কারা দেন সঠিক পথের খোঁজ? পেশাদার পরামর্শদাতারা।

এবার এই পেশাদার পরামর্শদাতা হিসেবে কেরিয়ার শুরু করবেন কী ভাবে? দ্বাদশের পর থেকেই এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা সম্ভব? নাকি যে কোনও বিষয়ে স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শেষ করার পরও পরামর্শদাতা হওয়ার পথ খোলা থাকছে? রইল সেই সমস্ত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য।

পরামর্শদাতা তথা কনসালট্যান্ট কারা?

যে কোনও ক্ষেত্রে, সেটা শিল্প হোক বা বাণিজ্য, কাজের পদ্ধতিকে আরও সরল করে তোলার জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষজ্ঞের পরামর্শের। তাঁর অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানের ভিত্তিতে যাবতীয় পরিবর্তন হয়ে থাকে। এই পদে যাঁরা কাজ করে থাকেন, তাঁদের সাধারনত যে কোনও একটি বিভাগে কাজ করতে হয়।

পড়ুয়ারা এই পেশায় আসবেন কী ভাবে?

পরামর্শদাতা তথা কনসালট্যান্ট হিসেবে পেশা নির্বাচন যাঁরা করতে চান, তাঁদের একটু জেনে নেওয়া প্রয়োজন, কী পড়তে হবে। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে, যা পড়ে নিলে এই পেশায় প্রবেশের পথটা তুলনামূলক ভাবে সহজ হয়ে ওঠে। ভারতে যে ধরণের ডিগ্রি কোর্সের অধীনে এই বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব সেগুলি হল:

১. ‘বিজ়নেস কনসাল্টিং গ্র্যাজুয়েট’

২. ‘ইনফরমেশন টেকনোলজি’-র যে কোনও শাখায় স্নাতক ডিগ্রি

৩. ‘ব্যাচেলর ইন আর্টস’-র যে কোনও শাখায় স্নাতক ডিগ্রি

এর পাশাপাশি, কেউ যদি ডিপ্লোমা করতে চান, তাঁদের কাছে রয়েছে সুযোগ। সে ক্ষেত্রে ‘ইন্টারন্যাশনাল বিজ়নেস’, ‘ফিনান্স অ্যান্ড কনস্যাল্টিং’, ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়গুলিতে সেরে নেওয়া যেতে পারে ডিপ্লোমার পড়াশোনা।

স্নাতকোত্তর স্তরে, ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কনস্যাল্টিং’, ‘বিজ়নেস কনসালট্যান্সি ইন্টারন্যাশনাল’, ‘বিজ়নেস কনসালট্যান্সি’, ‘কনসাল্টিং অ্যান্ড অডিটিং কোয়ালিটি সিস্টেমস অ্যান্ড এক্সিলেন্স’ বিষয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন স্নাতকোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের সমস্ত কেন্দ্রেই এই বিষয়গুলি পড়ানো হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি, সরকারি এবং বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকেও উল্লিখিত বিষয়গুলি ২ থেকে ৪ বছরের ডিগ্রি, ডিপ্লোমা কোর্স করার সুযোগ রয়েছে।

কাজের সুযোগ কেমন?

পরামর্শদাতা হিসেবে পেশাদার কিছু বিভাগ রয়েছে, যার বিস্তারিত রইল নীচে।

পরামর্শদাতাদের রকমফের:

যে কোনও প্রতিষ্ঠানে সাধারনত নিম্নলিখিত বিভাগের জন্য পরামর্শদাতা প্রয়োজন হয়ে থাকে।

১. ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কনসাল্ট্যান্ট’ তথা পরামর্শদাতা, যাঁরা কোনও কারিগরি নকশা, পদ্ধতি, সুরক্ষা নীতি, রক্ষনাবেক্ষণ-সহ অন্যান্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

২. ‘হিউম্যান রিসোর্স কনসালট্যান্ট’ তথা পরামর্শদাতারা কোন প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে, কী ভাবে নিয়োগ করা যেতে পারে, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রার্থী এবং আধিকারিকদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করার কাজগুলি করে থাকেন।

৩. ‘ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালট্যান্ট’ তথা আইটি পরামর্শদাতাদের কাজ হল কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যারের ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি, সেই সমস্ত বস্তু সুরক্ষা সম্পর্কেও সচেতন করে করা।

৪. ‘লিগ্যাল কনসালট্যান্ট’ তথা আইনি পরামর্শদাতারা প্রতিষ্ঠান স্থাপনা থেকে শুরু করে কার্যপদ্ধতি-সহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে থাকা আইন সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

৫. ‘ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট’ তথা ব্যবস্থাপনা পরামর্শদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানকে কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, কী কী বিষয় কর্মীদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন এবং যথাযথ উন্নতি সাধন কী ভাবে সম্ভব, সেই সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ দেওয়াই তাঁর কাজ।

৬. ‘মার্কেটিং কনসালট্যান্ট’ তথা পরামর্শদাতারা কোনও ব্যবসাকে কী ভাবে বাজারে পেশ করতে হবে, সেই সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। ডিজিটাল যুগে এই ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট, ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাজারে ব্যবসার পরিচিতি বাড়ানোর বিষয়েও এই পরামর্শদাতাকেই কাজ করতে হয়।

৭. ‘পাবলিক রিলেশন কনসালট্যান্ট’ তথা জনসংযোগ পরামর্শদাতাদের কাজ হল কোনও ব্যবসার বিষয়ে সাধারন মানুষকে জানানো প্রেস রিলিজ়, ইভেন্টের মাধ্যমে। কী ভাবে কোথায় অনুষ্ঠান করলে ব্যবসার জনপ্রিয়তা বাড়তে পারে, অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ অতিথি থাকা প্রয়োজন কি না, সেই সমস্ত বিষয়েও পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব এই পরামর্শদাতার।

উল্লিখিত পদ ছাড়াও আরও বহু ক্ষেত্রে পরামর্শদাতাদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে নিয়মিত ভাবে। বেতনের অঙ্ক ছয়ের ঘর পেরিয়েও যায়। তাই যাঁরা ঝাঁ চকচকে অফিসে বসে পরামর্শ দেওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁদের একটু ডিগ্রি লাভ করা প্রয়োজন রয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE