Advertisement
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Healthcare

নিট না পাশ করেই চিকিৎসাক্ষেত্রে যুক্ত হতে পারেন কী করে?

এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রি কোর্সগুলি পড়ার জন্য নিট পরীক্ষায় পাশ করার দরকার পড়ে। কিন্তু নিট পরীক্ষা ছাড়াও চিকিৎসাক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত নানা ধরনের কোর্স করা যায়।

চিকিৎসাক্ষেত্রে যুক্ত হতে পারেন কী করে?

চিকিৎসাক্ষেত্রে যুক্ত হতে পারেন কী করে? সংগৃহীত ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২ ২০:৩১
Share: Save:

'বড় হয়ে কি হতে চাও?'-- এই গতে বাঁধা প্রশ্নের উত্তরে অনেক বাচ্চাকেই বড় হয়ে 'চিকিৎসক' হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে দেখা যায়। কিন্তু চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার সৌভাগ্য অনেকেরই হয় না। বহু আকাঙ্ক্ষিত এই পেশাতে যেতে গেলে শুধু মেধা থাকলেই হয় না, দরকার পড়ে ন্যাশনাল এন্ট্রান্স কাম এলিজিবিলিটি টেস্ট (নিট) পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার। নিট-এর মতো সর্বভারতীয় পরীক্ষাটিতে পাশ করাও যে যথেষ্ট কঠিন, তা-ও আন্দাজ করা যায়। তা হলে কি নিট পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা না থাকলে বা নিট পরীক্ষা পাশ করতে না পারলে চিকিৎসা বা চিকিৎসার সঙ্গে সংযুক্ত কোনও ক্ষেত্রকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া যাবে না? সেই খোঁজই দেওয়া হল এই প্রতিবেদনে।

এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রি কোর্সগুলি পড়ার জন্য নিট পরীক্ষায় পাশ করার দরকার পড়ে। কিন্তু নিট পরীক্ষা ছাড়াও চিকিৎসাক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত যে যে কোর্সগুলি করা যায়, সেগুলি হল-- নার্সিং, ফার্মেসি, ফিজিওথেরাপি, সাইকোলজি, ভেটেরিনারি সায়েন্স, হোমিওপ্যাথি ইত্যাদি। তবে নিট না দিতে হলেও, এই কোর্সগুলিতে ভর্তির জন্য সর্বভারতীয় ও রাজ্যস্তরে জিপমার, এজেইই, এইউএটি ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে হয়।

কেন এই কোর্সগুলি করবেন?

বিগত বছরগুলিতে নিট পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নিট পরীক্ষা পাশ করাটাই ভীষণ মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে যাঁরা নিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, তাঁরা এই কোর্সগুলিকে বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন। নিট পরীক্ষার পাশাপাশি এই পরীক্ষাগুলিতেও যদি পরীক্ষার্থীরা বসেন, তা হলে তাঁদের কেরিয়ারের মূল্যবান বছরগুলি নষ্ট হবে না। এ ছাড়া, প্রতিটি কোর্সেরই বর্তমানে চাহিদা প্রচুর, তাই চাকরিরও অভাব ঘটবে না।

যোগ্যতা

এই সমস্ত কোর্সের স্নাতক স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে যে যে যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, সেগুলি হল:

১. দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর নিয়ে কৃতকার্য হতে হবে।

২. দ্বাদশ শ্রেণিতে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা/ পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত-- এই বিষয়গুলি থাকতে হবে।

৩. চিকিৎসাক্ষেত্রে উন্নতি করার জন্য কঠোর পরিশ্রমের ক্ষমতা থাকতে হবে।

৪. কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোর্সগুলি করার জন্য রাজ্য বা জাতীয় স্তরে বেশ কিছু এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে হবে।

এ বার এই কোর্সগুলির ব্যাপারে সবিস্তার আলোচনা করা হবে।

নার্সিং

নার্সিং পেশাটি এমন একটি মহান পেশা, যা মানুষকে পথ্য ছাড়াই সেবা-শুশ্রূষার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলে। নার্সিংয়ের বিএসসি কোর্সে তাই শিক্ষার্থীদের যত্ন ছাড়াও, ভালোবাসা, ধৈর্য ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কী ভাবে রোগীকে সুস্থ করা যায়, তার পাঠ দেওয়া হয়। নার্সিংয়ের স্নাতক ডিগ্রি কোর্সটি ৪ বছরের একটি কোর্স। শিক্ষার্থীরা স্টাফ নার্স, রেজিস্টার্ড নার্স, নার্স এডুকেটর, মেডিক্যাল কোডার্স ইত্যাদি নানা রকম পদে এই কোর্সটি পড়ে চাকরি পেতে পারেন। চিকিৎসাক্ষেত্রে এই কোর্সটির চাহিদা এখন প্রচুর। নার্সিংয়ের আলাদা পরীক্ষা ছাড়াও এখন নিট ইউজি পরীক্ষায় পাশ করলেও নার্সিং পড়া যায়।

ফার্মেসি

ফার্মাসিউটিকাল সায়েন্সের একটি শাখা হল ফার্মেসি। এই কোর্সে নানা ধরনের ওষুধ তৈরি করা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফার্মেসি, ওষুধের রাসায়নিক সংমিশ্রণ ইত্যাদি নানা ধরনের বিষয় পড়ানো হয়। বিফার্মা ডিগ্রিটির জন্য অন্যান্য যোগ্যতার প্রয়োজন হলেও, নিট পরীক্ষা পাশের প্রয়োজনীতা নেই। এই ডিগ্রি কোর্সটি করে শিক্ষার্থীরা সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে কেমিক্যাল টেকনিশিয়ান, ড্রাগ ইন্সপেক্টর, হেলথ ইন্সপেক্টর, ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি নানা পদে চাকরি করতে পারেন।

ফিজিওথেরাপি

ফিজিওথেরাপি কোর্সটিকে সার্জারি চিকিৎসার একটি অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই কোর্সটিতে উত্তাপ, বিদ্যুৎ, মেকানিক্যাল প্রেশার ও মেকানিক্যাল বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রোগীর শরীরকে বিশেষ ভাবে পরিচালিত করে কী ভাবে সুস্থ করা যায়, সেই বিষয়গুলি পড়ানো হয়। এর স্নাতক স্তরের কোর্সটির নাম বিপিটি। এই কোর্সটি পড়ে শিক্ষার্থীরা ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে বিভিন্ন স্পেশাল স্কুল, স্বাস্থ্য ও ফিটনেস স্টুডিওগুলিতে ও অন্যান্য জায়গায় চাকরি করতে পারেন।

সাইকোলজি

মানুষের মন ও ব্যবহারগত দিক নিয়ে যে পড়াশুনো হয়, সেই বিষয়টিই হল সাইকোলজি। এই কোর্সে মানুষের বিকাশ, সামাজিক ব্যবহার, কগনিটিভ আচরণপদ্ধতি ইত্যাদি অনেক কিছু বিষয় পড়ানো হয়। সাইকোলজিতে স্নাতক কোর্সটি তিন বছরের একটি কোর্স। এই কোর্সটি করে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে, ক্লিনিকে, স্কুল বা হাসপাতালে কাউন্সেলর, অ্যাডভাইসর, মেডিটেটর ইত্যাদি পদে চাকরি করতে পারেন।

ভেটেরিনারি সায়েন্স

পশুপাখিদের অসুস্থতার চিকিৎসাকেই ভেটেরিনারি সাইয়েন্স বা পশুচিকিৎসা বিজ্ঞান বলা হয়। এই বিষয়ের স্নাতক স্তরের ডিগ্রি কোর্সটি বা বিবিএসসি কোর্সটি সাড়ে পাঁচ বছরের একটি কোর্স। ডিগ্রি প্রোগ্রামের শেষ ৬ মাস শিক্ষার্থীদের একটি ইন্টার্নশিপও করতে হয়। কোর্সটি করে শিক্ষার্থীরা ভেটেরিনারি সার্জেন, অ্যাসোসিয়েট ভেটেরিনারি, ভেটেরিনারি ফার্মাকোলজিস্ট, ভেটেরিনারি নিউরোলজিস্ট ইত্যাদি নানা পদে চাকরি করতে পারেন।

বেতন কাঠামো

প্রতিটি কোর্স পড়েই উচ্চশিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি ক্ষেত্রে পদমর্যাদা ও বেতনক্রমের উন্নতি হয়।

এই ডিগ্রি কোর্সগুলি ছাড়াও, নিট পরীক্ষা না দিয়ে, চিকিৎসাক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত যে যে বিষয়গুলি নিয়ে পড়া যায়, সেগুলি হল-- অ্যানাটমি, ক্লিনিক্যাল সোশ্যাল ওয়ার্কার, ইকোলোজিস্ট, ফরেনসিক সায়েন্স টেকনলোজিস্ট, মেন্টাল হেলথ সাপোর্ট ওয়ার্কার্স ইত্যাদি।

তাই, নিট-এ কৃতকার্য না হতে পেরে চিকিৎসক হওয়ার বাসনাকে মুছে না ফেলেই উপরে উল্লিখিত বিকল্প কোর্সগুলি পড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দি্তেই পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Healthcare Medical Course Nursing Pharmacy Physiotherapy Psychology Veterinary Doctor Profession career Education Jobs Recruitment Employment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy