প্রতীকী চিত্র।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে সিবিএসই দশম এবং দ্বাদশের পরীক্ষা। এই পরীক্ষার প্রস্তুতি ভাল হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীদের মনে একটি চোরা ভয় কাজ করছে। এমনকি পরীক্ষার হলে ঢোকার আগের মুহূর্তে সেই ভয় এতটাই বেড়ে যায়, যার ফলে পরীক্ষার উত্তরপত্রে তার প্রভাব ফেলে। সেই কারণে যতটা ভাল পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন, অত্যাধিক দুশ্চিন্তার কারণে তা হয়ে ওঠে না। এই সমস্যার সমাধান পরীক্ষার্থীদের মনেই লুকিয়ে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞের মতে, প্রতি দিন পড়াশোনার পাশাপাশি, অন্তত কিছু ক্ষণ দীর্ঘ নিশ্বাস নিতে হবে। নিজেকে শান্ত রাখার জন্য যোগ অভ্যাসও করা যেতে পারে। পরীক্ষার আগে নেতিবাচক চিন্তা ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই পরীক্ষায় ভাল ফল করার সুযোগ বৃদ্ধি পায়। পড়াশোনার সময় ঘড়ি ধরে লেখার অভ্যাস, ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক টানা পড়ার বদলে বিষয় ভিত্তিক প্রশ্নের সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। এতে পরীক্ষা সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
প্রশ্ন এবং সময় বুঝে লেখা: পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর চেনা শব্দ দেখেই লিখতে শুরু করলে চলবে না। প্রতিটি প্রশ্ন ভাল করে পড়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর লিখে পরীক্ষা শেষ করতে পারাটাই আসল দক্ষতার পরিচয়। প্রশ্নপত্র দেখে প্রতিটি প্রশ্ন অনুযায়ী সময় ভাগ করে নিতে হবে। কোন প্রশ্নের জন্য কতটা সময় দেওয়া দরকার, তা দ্রুত হিসাব করে নিতে পারলেই শেষ মুহূর্তে তাড়াতাড়ি শেষ করার দুশ্চিন্তা থাকবে না। কোনও প্রশ্ন অচেনা মনে হলে, সেই সময়ের জন্য অন্য প্রশ্নের উত্তর লেখাই শ্রেয়। অচেনা প্রশ্নের জন্য বেশি সময় ব্যয় করলে চেনা প্রশ্নগুলি হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়, যা পরীক্ষার ফলাফলের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
স্বাস্থ্যকর অভ্যাস: পরীক্ষার সময় দৈনিক স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে জল পান করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হবে। কারণ বেশি রাত জেগে পড়াশোনার ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। জল বা খাবার— কোনওটাই কম খাওয়া চলবে না। এতে শারীরিক ভাবে পরীক্ষার্থী দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যার সরাসরি প্রভাব গিয়ে পড়তে পারে পরীক্ষার উত্তরপত্রে। ইতিবাচক ভাবনা মাথায় রেখেই উত্তরপত্রে উত্তর লেখার চেষ্টা করতে হবে।
বুলেটিং ব্যবহারের অভ্যাস: সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)-এর তরফে দক্ষতাভিত্তিক প্রশ্ন বেশি রাখা হয়, পরীক্ষার্থীদের মেধা যাচাই করার স্বার্থে। তাই তারা বড় প্রশ্নের ক্ষেত্রে বুলেটিং ব্যবহার করে যত বেশি পয়েন্টের উল্লেখ করতে পারবে, ততই উত্তরপত্র আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এতে যিনি পরবর্তীকালে উত্তরপত্র দেখবেন, তিনি পরীক্ষার্থীদের মেধা সহজেই যাচাই করে নিতে পারবেন। এর জন্য পরীক্ষার্থী প্রয়োজনে গ্রাফিক অর্গানাইজ়ারও ব্যবহার করে নিতে পারেন, এতে কোনও পয়েন্ট ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
মাথা ঠান্ডা রেখে চোখ বুলিয়ে নেওয়া: পরীক্ষার হলে বসে উত্তরপত্রের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর এক বার অন্তত পড়ে নেওয়া উচিত। এতে উত্তর লেখার সময় কোনও ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধনের সুযোগ থাকবে। মাথা ঠান্ডা রেখে প্রশ্নের সঙ্গে উত্তর মিলিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি, পরীক্ষকের নির্দেশিকাও মনে রাখতে হবে। কোনও কারণে কোনও প্রশ্নের উত্তরে বড়সড় কোনও ভুল চোখে পড়লে দ্রুত তা সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে, কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, একটি প্রশ্নের জন্য বাকি উত্তরগুলিতে যেন কোনও নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।
সব মিলিয়ে ‘আমি পারব’, এমন মনোভাব রেখেই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রয়োজনে মক টেস্টের সাহায্যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষার উত্তর লেখার অভ্যাস করে নিতে হবে। এতে পরীক্ষার্থীদের মনে আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং ফলাফলে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy