চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষা। তাই হাতে খুব বেশি সময় আর নেই। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছে অঙ্ক অনেক সময়েই ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেই ভয়ের প্রভাবেই তাদের কাছে চেনা প্রশ্নও অচেনা বলে মনে হয়। কিন্তু জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় এমন পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত নয়। তাই পরীক্ষা ভাল ভাবে দেওয়ার জন্য সবার আগে সঠিক খাবার খেতে হবে আর ঘুমোতে হবে সময় মতো। শরীর আর মন যদি সুস্থ না থাকে, যদি অযথা চিন্তা করে করে ক্লান্তি বাড়তে থাকে, সে ক্ষেত্রে অঙ্কের উত্তর মেলাতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে। তাই শেষ মুহূর্তের জন্য মাথা ঠান্ডা রেখে বেশ কিছু কাজ করে নিতে হবে।
- প্রতিটি অধ্যায় থেকে একটি করে অঙ্ক করতে হবে। একই সঙ্গে দেখে নিতে হবে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই অঙ্কগুলো করে ফেলা যাচ্ছে কি না।
- যদি কাঙ্ক্ষিত সময়ের মধ্যে অঙ্ক শেষ না হয়, সে ক্ষেত্রে ঘাবড়ালে চলবে না। বরং মাথা ঠান্ডা করে অঙ্কটা সম্পূর্ণ করে ফেলতে হবে। কারণ অঙ্কের ক্ষেত্রে সঠিক উত্তর লেখার পাশাপাশি, প্রতিটি ধাপ সম্পূর্ণ করার নিরিখেও নম্বর পাওয়া যায়। তাড়াহুড়ো করলে সেই নম্বর হাতছাড়া হতে পারে।
- সমীকরণ, সমাধানের মতো অঙ্কের ক্ষেত্রে প্রশ্ন বুঝে সূত্রের প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি, এ ক্ষেত্রেও সময়টা মাথায় রাখতে হবে।
- পরীক্ষার আগে এক বার পাঠ্যবইয়ের নম্বর বিভাজনের তথ্যটা ভাল করে বুঝে নিতে হবে। কোন কোন অধ্যায় থেকে কী ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে, সেই বিষয়টি মাথায় রাখতে পারলেই পরীক্ষার হলে বসে প্রশ্নপত্র পেলেই অঙ্ক করার ছকটা তৈরি করা সহজ হয়ে যাবে।
- প্রশ্নপত্রে পাই এবং বর্গমূলের মান ব্যবহারের উল্লেখ করা থাকলে, সেই মান ব্যবহার করেই উত্তর লিখতে হবে। কিছু কিছু প্রশ্নের ক্ষেত্রে বিকল্প হিসাবেও এই মান ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রেও পরীক্ষার্থীরা ওই মান ব্যবহার করে ফেলতেই পারে।
- জ্যামিতির উপপাদ্যের ক্ষেত্রে ছবি পরিষ্কার করে আঁকতে হবে এবং পাশে প্রমাণ লিখতে হবে। এক বার আঁকা হয়ে গেল, দ্বিতীয় বার ওই আঁকায় পেন্সিল বোলানো যাবে না।
- সম্পাদ্য আঁকার ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিয়ে এবং সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি সঠিক ভাবে ব্যবহার করে ছবি তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপ সম্পূর্ণ করার ভিত্তিতেই নম্বর পাওয়ার সুযোগ থাকছে।
- ত্রিকোণমিতির ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন ছবি আঁকার উপর নম্বর দেওয়া হয়। তাই প্রতিটি কোণ সঠিক ভাবে চিহ্নিত করতে হবে।
- অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন এবং শূন্যস্থান পূরণের ক্ষেত্রে শুধু মাত্র উত্তরটাই লিখতে হবে। অতিরিক্ত বাক্য বা শব্দ লেখার কোনও প্রয়োজন নেই।
- পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি, টেস্ট পেপারের নমুনা প্রশ্নগুলিতেও এক বার চোখ বুলিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। এতে পরীক্ষার্থীরা যে প্রশ্নগুলি আগেই অভ্যাস করে ফেলেছে, সেই প্রশ্নের সমাধানের ছকটা মাথায় থেকে যাবে।
তবে পরীক্ষার হলে প্রশ্ন দেখে উত্তর লেখার সময় কোন অঙ্কের উত্তর মিলছে আর কোন অঙ্কের উত্তর মিলছে না, তা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করা যাবে না। এতে অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর লিখতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে। নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টাটা পরীক্ষার শেষ ঘন্টা পড়ার আগে পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে। নিজেকে মনে করিয়ে দিতে হবে, আমি পারবই। তবেই সামগ্রিক ভাবে পরীক্ষা ভাল হবে।