Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Taruner Swapna

সোমবারের মধ্যেই ট্যাবের টাকা জমা পড়বে ৮৫ জনের অ্যাকাউন্টে! জানালেন শিক্ষাসচিব

সোমবারের মধ্যে ৮৫ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে। ট্যাবের টাকা নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে কেউ যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে, জানিয়েছেন শিক্ষাসচিব।

সংগৃহীত চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৮
Share: Save:

পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে! এই টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে গেল কী করে? কোথায় রয়েছে গাফিলতি, সেই উত্তর খুঁজে বের করার আগেই সোমবারের মধ্যেই রাজ্যের ৮৫ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে চলেছে টাকা। সিআইআই-তে এডুকেশন সামিটের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এ কথা জানালেন শিক্ষাসচিব বিনোদ কুমার। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। এ রকম ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। আগামী সোমবারের মধ্যে প্রত্যেক স্টুডেন্টের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে। ইতিমধ্যে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। এর পেছনে যদি কেউ যুক্ত থাকেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আর যদি সিস্টেমে কোনও সমস্যা থাকে তা হলে সিস্টেম বদলানো হবে। যাতে দ্বিতীয় বার এই সমস্যা না হয়।”

সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা ঘিরে এই অভিযোগ উঠেছে আগেই। টাকা উদ্ধার কী ভাবে হবে বা কী করে এমন ঘটল, মীমাংসার আগেই সরকারের তরফ থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ১০,০০০ টাকা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলার পরিদর্শকদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। পাশাপাশি, ভুল তথ্য দেওয়া, অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হয়ে যাওয়া, এই সমস্ত কারণবশত যাদের টাকা এখন‌ও পৌঁছয়নি তাদেরও তথ্য সংগ্রহ করেছে সরকার।

শুধু টাকা দেওয়া নয়। দফতরের তরফ থেকে তদন্ত করে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্টে ৮৫ জনের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গায় প্রধান শিক্ষকদের গাফলিতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। দফতরের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে অ্যাকাউন্ট নম্বরে গরমিল ছিল পোর্টালে আপলোডের সময়। বহু স্কুল রয়েছে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা যে অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছে সেগুলি যথাযথ ভাবে আপলোড করা হয়নি। বেশকিছু অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে শেষের দিকে ডিজিটে আপলোডের সময় ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আতশ কাচের তলায় স্কুলের কয়েকজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ও শিক্ষকেরাও।

মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘তরুণের স্বপ্ন’র আওতায় পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় পুজোর আগে। রাজ্যের ১৮ লক্ষ পড়ুয়ার মধ্যে বেশ কিছু জেলার পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা ঢোকেনি বলে খবর আসে। কেন এল না এই টাকা? খোঁজ নিতেই জানা যায়, সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে না গিয়ে সে টাকা গিয়েছে ভিন্ন ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। যার ফলেই ওঠে একাধিক প্রশ্ন। তদন্ত শুরু হয়। শিক্ষা দরফতরের তরফে এফআইআর-ও করা হয়।

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “আমাদের তদন্তে উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের চারটি এবং পূর্ব বর্ধমানের দু’টি স্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে না পড়ে ভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। মোট ৮৫ জন পড়ুয়ার সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে। ” শুধু পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে ৬৪ জন পড়ুয়া রয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে রয়েছে ২১ জন। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই পুলিশে এফআইআর করেছি। তদন্তের পরেই বলা যাবে এটা হ্যাকিং, নাকি ভুল কোন‌ও তথ্য দেওয়া হয়েছে, যার ফলে অন্যের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গিয়েছে। প্রযুক্তিগত কোন‌ও ত্রুটি আছে কি না, সে বিষয়ে এনআইসিই-ও বিষয়টি তদন্ত করছে। পাশাপাশি, অন্যান্য জেলায় বিভিন্ন স্কুলেও একই ঘটনা কমবেশি ঘটেছে। সেই তথ্যগুলোই স্কুল পরিদর্শদকদের মাধ্যমে পুনরায় জানতে চাওয়া হয়েছে স্কুলগুলির কাছে, যাতে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে পড়ুয়াদের হাতে ট্যাব কেনার টাকা পৌঁছে দেওয়া যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Taruner Swapna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE