Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Pass-Fail system in School

স্কুলস্তরেও পরীক্ষা নেবে সিআইএসসিই, ফিরছে না পাশ ফেল প্রথা

পাশ ফেল যদি না থাকে তা হলে কাউন্সিল এই পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে কোন কোন দিকে নজর দেবে— এই প্রশ্নে উঠে আসে পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নতির অনেকগুলি দিক।

মঙ্গলবার কলকাতার হেরিটেজ স্কুলে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনা।

মঙ্গলবার কলকাতার হেরিটেজ স্কুলে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র।

অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩০
Share: Save:

রাজ্যের সামেটিভ ইভেলুয়েশনের মতোই কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজ়ামিনেশন (সিআইএসসিই)-ও চালু করতে চলেছে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন পরীক্ষা ব্যবস্থা। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু করার ভাবনা সিআইএসসিই-র। মঙ্গলবার কলকাতার হেরিটেজ স্কুলে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে কাউন্সিলের চিফ এগজিকিউটিভ অ্যান্ড সেক্রেটারি জোসেফ ইমানুয়েলের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপূর্ব ভারতের সিআইএসসিই অধীনস্থ প্রায় ২০০ স্কুলের প্রধান অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন। ওই আলোচনা সভাতেই আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে এই ব্যবস্থা চালু করার কথা জানিয়েছেন কাউন্সিল প্রধান। জোসেফ ইমানুয়েল বলেন, ‘‘ এই পরীক্ষা ব্যবস্থায় পাশ ফেল থাকবে না। আমরা দেখতে চাই কাউন্সিলের অধীনে পড়াশোনা করে পড়ুয়াদের মেধার বিকাশ হচ্ছে কি না’’।

স্কুলস্তরে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সিআইএসসিই-র কোনও পাশ ফেল প্রথা যেমন নেই তেমন আলদা ভাবে কোনও পরীক্ষাও নেওয়া হত না কাউন্সিলের তরফে। শুধুমাত্র স্কুলই পরীক্ষা নিত। এ বার এই ব্যবস্থাতেই বড় বদল আনতে চলেছে কাউন্সিল। তৃতীয়-পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষা নেবে সিআইএসসিই। পড়ুয়াদের কতটা উন্নতি হচ্ছে সে বিষয়ে অবগত থাকার জন্যই নেওয়া হবে পরীক্ষা। এই ব্যবস্থায় থাকছে না পাশ ফেল প্রথা। তবে গ্রেডের মধ্যে দিয়ে মূল্যায়ন করা হবে।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে পাশ ফেল যদি না থাকে তা হলে কাউন্সিল এই পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে কোন কোন দিকে নজর দেবে— এই প্রশ্নে উঠে আসে পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নতির অনেকগুলি দিক। বছরভর পড়ুয়ারা কী পড়ছে, সিলেবাসে কোনও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন কি না, পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপের ফলে পড়ুয়াদের মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা। কোনও শিক্ষার্থী পিছিয়ে থাকলে তাকে বিশেষ নজর দেবে কাউন্সিল।

অনেক সময় দেখা যায়, দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা অন্য বোর্ডের আওতায় স্কুল বদল করে। পড়ুয়াদের অন্য বোর্ডে চলে যাওয়ার প্রবণতা এড়াতে স্কুলগুলিকে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়ার বার্তা দিয়েছে কাউন্সিল। শুধু তাই নয়, অহেতুক ক্লাস লম্বা করা যাবে না। এমন কী কেউ যদি স্কুলের বাইরে অতিরিক্ত টিউশন ক্লাস করে তাদের আলাদা ভাবে চিহ্নিত করবে স্কুল। ক্লাসের নির্ধারিত সময়ের পর ওই পড়ুয়াকে আলাদা ভাবে সময় দেবে স্কুল।

এ ছাড়াও, আইএসসি-তে ইংরেজি ও অঙ্ক বিষয় বেশ কঠিন। এই নিয়েও ভেবেছে কাউন্সিল। সব ধরনের ছাত্রছাত্রীর কথা মাথায় রেখে বিষয় ভিত্তিক সরলীকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয় মঙ্গলবারের আলোচনা সভায়। ‘ইংরেজি এ’, ‘ইংরেজি বি’ এবং ‘অঙ্ক এ’, ‘অঙ্ক বি’ এই দু’টি ভাগে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে ইংরেজি ও অঙ্ক বিষয়কে। যদি কোনও পড়ুয়া শুধুমাত্র বিজ্ঞান নিয়েও পড়তে চায় তা হলে সে ‘অঙ্ক এ’ নিয়ে পড়বে। আবার কেউ যদি ডাক্তারি পড়তে চায় সে ক্ষেত্রে তাকে ‘অঙ্ক বি’ নিয়ে পড়লেই হবে। একই ভাবে ইংরেজির ক্ষেত্রেও ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরি রাখা হবে।

মূলত কাউন্সিলের উদ্দেশ, আইসিএসই উত্তীর্ণরা সিআইএসসিই থেকেই স্কুল শিক্ষা সম্পূর্ণ করুক। পাশাপাশি, পড়ুয়ারা নিজেদের মেধাও বৃদ্ধি করুক আইএসসিতে পড়েই। পড়ুয়ারা সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির দোহাই দিয়ে অন্য কোনও বোর্ডে না গিয়ে কাউন্সিলের অধীনেই পড়তে জোর দিতে চান সিআইএসসিই প্রধান।

অন্য বিষয়গুলি:

CISCE NEP State Education Policy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE