Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Dhai Akhar Competition 2024

‘পত্র দিয়ো’—হাতে লেখা চিঠির প্রতিযোগিতা, স্কুলপড়ুয়াদের জন্য অভিনব উদ্যোগ কেন্দ্রের

জাতীয় স্তরের এই প্রতিযোগিতার নাম— “ঢাই অক্ষর”।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সুচেতনা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:১২
Share: Save:

হাতে লেখা চিঠি এখন অতীত। জিয়া নস্টাল হওয়া সেই অভ্যাসকে ডিজিটাল দুনিয়ায় ফিরিয়ে আনতে তাই সমাজমাধ্যমে সম্প্রতি চালু হয়েছে ‘চিঠি’ অ্যাপ। কিন্তু তাতেও হাতে লেখার অভ্যাসকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্কুল পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক। আয়োজন করা হচ্ছে জাতীয় স্তরে চিঠি লেখা প্রতিযোগিতার।

জাতীয় স্তরের এই প্রতিযোগিতার নাম— “ঢাই অক্ষর”। শব্দের পিঠে শব্দ সাজিয়ে মনের ভাব ব্যক্ত করার জন্য চিঠি লেখার এই উদ্যোগ কেন্দ্রের ডাক বিভাগের। যা বাস্তবায়নের দায়ভার রাজ্য সরকারগুলির। এই মর্মে রাজ্যের সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে পড়ুয়াদের এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের সমস্ত স্কুলের প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন যোধপুর পার্ক গার্লস হাই স্কুলের সহ-প্রধানশিক্ষিকা অজন্তা চৌধুরী। বলেছেন, “যে কোনও ভাষার সঙ্গে পরিচিতির জন্য হাতে লেখা অক্ষরের গুরুত্ব রয়েছে। তাই বর্তমানে যাবতীয় কাজকর্ম ডিজিটালি লেখার পাশাপাশি কাগজে কলমে লেখালিখিরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা আমাদের ছাত্রীদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করব।” একই মত যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্যের। তিনি বলেন, “এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আজকালকার হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকের মোবাইল নির্ভর যুগে ছেলেমেয়েরা লিখতে ভুলে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে তাদের সৃজনশীলতাও। তাই মনের ভাব প্রকাশের জন্য, হাতে লেখার আনন্দ উপভোগ করার জন্য এই উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ।

জাতীয় স্তরের চিঠি লেখার এই প্রতিযোগিতার বিষয়—‘দ্য জয় অফ রাইটিং: ইম্পর্ট্যান্স অফ লেটারস ইন এ ডিজিটাল এজ’। অর্থাৎ ডিজিটাল যুগে হাতে চিঠির গুরুত্ব। চিঠি লেখা যাবে ইংরেজি, হিন্দি অথবা যে কোনও আঞ্চলিক ভাষায়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সীরা। দু’টি বিভাগে আয়োজন করা হবে— ১) ৫০০ শব্দের ইনল্যান্ড লেটার কার্ড এবং ২) ১০০০ শব্দের এনভেলপ লেটার। পড়ুয়াদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থাও রয়েছে। রাজ্য স্তরে বা ‘সার্কল’ (পোস্টাল) লেভেল-এ প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে যথাক্রমে ২৫,০০০ টাকা, ১০,০০০ টাকা এবং ৫,০০০ টাকা। অন্য দিকে, জাতীয় স্তরে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধীকারিদের জন্য পুরস্কারমূল্য যথাক্রমে ৫০,০০০ টাকা, ২৫,০০০ টাকা এবং ১০,০০০ টাকা।

যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধানশিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, “কোভিড অতিমারির পর ছাত্রদের হাতের লেখা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লেখাতেও অজস্র ভুল বানান দেখা যায় আজকাল। তাই তাদের মধ্যে লেখার অভ্যাসকে ফিরিয়ে আনার এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই।” একই সুর, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের গলায়। তিনি জানান, এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে এখন ডিজিটাল যুগে ছাত্রছাত্রীরা চিঠি লেখা ভুলে গিয়েছে, যা একসময় যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে বিষয়টা চয়ন করা হয়েছে তা তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর কথায়, “ঢাই অক্ষর কথার অর্থ আড়াই অক্ষর। মানে প্রেম। সমাজে মানুষকে ভালবাসতে শেখানোটা অত্যন্ত জরুরি।বিশেষত এই আত্মকেন্দ্রিক দুনিয়ায়।”

প্রতিযোগিতার জন্য চিঠি লিখে পড়ুয়াদের কলকাতা সার্কলের চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেলকে ডাকযোগে পাঠিয়ে দিতে হবে। চিঠি পাঠানোর শেষ দিন আগামী ১৪ ডিসেম্বর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy