তথ্য এবং তার গভীর বিশ্লেষণের উপরে নির্ভর করেই বরাবর বিজ্ঞানের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ১৮৯৭ সালে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর যন্ত্রে রেডিও তরঙ্গ নির্ধারণে অর্ধপরিবাহী পদার্থের ব্যবহার করেছিলেন। যার ফলাফল স্বরূপ আবিষ্কার হয়েছিল বেতার বা রেডিয়ো। সেই সময়কার রেডিয়ো কেমন দেখতে ছিল, কী ভাবে তা কাজ করত, প্রাক স্বাধীনতা পর্বে বেতার কী ভাবে সাহায্য করত— এই সবেরই পাঠ দিতে বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়াম (বিআইটিএম)-এর তরফে আয়োজন করা হয়েছিল এক বিশেষ অনুষ্ঠানের।

ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় উপস্থিত রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা। ছবি: সংগৃহীত।
তারবিহীন তথ্য আদান প্রদানের তরঙ্গের কার্যকারিতাকে স্বীকৃতি দিতেই ১৩ ফেব্রুয়ারি পালিত হয় বিশ্ব বেতার দিবস (ওয়ার্ল্ড রেডিও ডে)। ২০১১-র ৩ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ৩৬তম কনফারেন্সে ইউনেস্কো ঘোষণা করে প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি এই বিশেষ দিনটি পালন করা হবে। চলতি বছর ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ বা জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন ও সতর্ক করার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেই কর্মসূচির পাশাপাশি ভারতীয় বেতারের জনক হিসাবে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতে বিআইটিএম-এর তরফে ‘ভিনটেজ ভয়েজ: কমিউনিকেশন টেকনোলজি’ শীর্ষক গ্যালারিতে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল।
বিআইটিএমের ডিরেক্টর অর্ণব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং জরুরি অবস্থায় সবচেয়ে সহজলভ্য, সাশ্রয়ী গণমাধ্যমগুলির মধ্যে অন্যতম হল রেডিয়ো। ডিজিটাল যুগেও অনলাইন স্ট্রিমিং এবং পডকাস্টের মাধ্যমে রেডিয়ো এখন আরও উন্নত হয়ে উঠছে। এই দিনটি মুক্ত, স্বাধীন রেডিয়ো স্টেশনগুলির গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই বিশ্বজুড়ে মানুষের জন্য ধারণা এবং জ্ঞানের মধ্যে একটি সেতু হিসেবে রেডিয়োর উদ্যাপন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

বিশ্ব বেতার দিবস এবং রেডিয়োর প্রাসঙ্গিকতা বোঝাচ্ছেন মিউজ়িয়ামের আধিকারিকরা। ছবি: সংগৃহীত।
এ ছাড়াও মিউজ়িয়ামে জগদীশ বোস জাতীয় বিজ্ঞান প্রতিভা অনুসন্ধানের ৭০ জন স্কলারদের নিয়ে একটি ওপেন হাউস ক্যুইজ প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রতিযোগিতায় গণমাধ্যম হিসাবে রেডিয়োর ইতিহাস এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রসঙ্গত, জগদীশ বোস জাতীয় বিজ্ঞান প্রতিভা অনুসন্ধানের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের একাদশ-দ্বাদশ এবং স্নাতক স্তরে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান চর্চার জন্য স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে।