সমাজে আমরা বারবার দেখেছি যে মেয়েরা শুধু ভোগ্যপণ্য হয়ে উঠেছে। বারবার আহত হয়েছে তাদের আত্মমর্যাদা। আমরা পথের উন্মাদিনীকে মা হতে দেখেছি যে সন্তানের বাবা কেউ হতে চায় না।! নির্ভয়া একটি উদাহরণ মাত্র। আমাদের সমাজে প্রতি দিন প্রতি মুহূর্তে নির্ভয়ার মত হাজার হাজার নির্ভয়া হারিয়ে যাচ্ছে লুকিয়ে যাচ্ছে। যেমন ভাবে অচেনা অজানা ফুলগুলো তার পাপড়ি নিয়ে কোথাও মুছড়ে পড়ে থাকে তেমনই। বছরের পর বছর নির্ভয়ার মা-বাবা বিচারের জন্য মাথা ঠুকে কেঁদে মরছে কিন্তু কোনও সুরাহা পাননি। বিচার ব্যবস্থা যদি সুদৃঢ় না হয়ে ওঠে এমন ঘটনা সমাজে মাথা চারা দিয়ে উঠবে। প্রয়োজনে বিচারব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন করতে হবে। প্রতি দিন প্রতি মুহুর্তের এই ধরনের পাশবিক ঘটনার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হোক যা সমাজের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকতে পারে। আর কোন নির্ভয়ার মা কে যেন কাঁদতে না হয়। ধর্ষকের কাছে সেই শাস্তি, তা যাই হোক না কেন, যেন দুঃস্বপ্নের মত হয়ে থাকে।
মধুরিমা রায়
জুনিয়র চিকিৎসক, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল
নির্ভয়ার ধর্ষকের ফাঁসির দিন ধার্য হয়েও বারবার বদলে গিয়েছে। আমার মনে হয়, ধর্ষণের অপরাধে শাস্তির আইনটাই বদলের প্রয়োজন। যদি মৃত্যুই ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি হয়, তা হলে এ রাজ্যে ধনঞ্জয়ের ফাঁসির পরে আর কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটত না। তা কি হয়েছে? প্রতি দিন সংবাদপত্র খুললে চোখে পড়ে এমনই কদর্য খবরের ছড়াছড়ি। কিছু দিন আগে হায়দরাবাদে প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রমাণ করে ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যতে এ রোগ সারার নয়। ২০১২ সালে যে মর্মান্তিক ঘটনা দিল্লিতে ঘটেছিল বিচার ব্যবস্থার দৌলতে সেই নির্যাতিতার বিচার পেতেই কেটে গেল আট বছর। অবশেষে ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে এখনও টালবাহানা। তা হলে কি ফাঁসির হুকুম দিয়েও আইনের জটিলতায় বিচারকেরা এমনকি রাষ্ট্রপতি সেই শাস্তি চুড়ান্ত করতে দ্বিধাগ্রস্ত? তা না হলে বারবার দিন কেন বদলাবে। এই পরিস্থিতি বিচার করে আমার মনে হয় ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড না হয়ে এমন হওয়া উচিৎ যেখানে পরবর্তীকালে কোনও অপরাধী সেই সাজা শুনে ওই অপরাধের কথা ভাবতেই পারবে না।
সোমা মণ্ডল
বিএ দ্বিতীয় বর্ষ, বহরমপুর গার্লস কলেজ
ভারতীয় সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থার ওপর সম্মান রেখে আশাদেবীকে আর কত দিন আদালতে ঘুরতে হবে বলতে পারেন? চার অপরাধী আর কত দিন এ ভাবে আইনের ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করবে? এই প্রশ্নগুলো ভাবাচ্ছে। কথায় আছে জাস্টিস ডিলে জাস্টিস ডিনাই। এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ঘুরতে ঘুরতে আট বছর কেটে গিয়েছে। যে মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের পরে গোটা দেশ মুখর হয়েছিল, যে প্রতিবাদের আগুন এখনও ধিক ধিক করে জ্বলছে সেই অপরাধে যুক্ত অপরাধীদের ফাঁসির ঘটনায় হাসি ফুটেছিল প্রতিবাদীদের। মেয়ের খুনের ঘটনার উপযুক্ত শাস্তি মৃত্যূদণ্ড শুনে হাসি ফুটেছিল নির্ভয়ার মায়েরও। সেই হাসি মিলিয়ে গেল ফাঁসির দিন বদলে যেতে দেখে। এই যদি অবস্থা হয়, অপরাধীদের কাছে মৃত্যুদণ্ডের মত হাতিয়ারও ভোঁতা হয়ে যাবে।
পাপিয়া মণ্ডল
স্নাতকোত্তর, দ্বিতীয় বর্ষ, বহরমপুর গার্লস কলেজ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy