Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Editorial News

দলনেত্রীর হুঁশিয়ারিও কেবল কথার কথা!

এই শতকের প্রথম দিকে এমনটাই তো দেখা যেত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের মধ্যে। দলের নিচু স্তরের সেনানীদের দিনের পর দিন এমন বার্তা তাঁরা দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু, কাজের কাজ কী হয়েছে, তা এ রাজ্য দেখেছে।

দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে যা যা হল তাতে প্রশ্ন জাগছে, তৃণমূল নেত্রী কাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন? —নিজস্ব চিত্র।

দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে যা যা হল তাতে প্রশ্ন জাগছে, তৃণমূল নেত্রী কাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন? —নিজস্ব চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০০:৫৮
Share: Save:

২৪ ঘণ্টা আগেই তৃণমূল নেত্রী দলের বর্ধিত কোর কমিটির সভায় অনেক কিছুই ঘোষণা করেছিলেন। জানিয়ে ছিলেন, ছাত্র সংগঠনগুলিকে সংযত হতে হবে। টাকা তোলা যাবে না। সংঘর্ষ করা যাবে না। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একেবারে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। এমন নানানতর বার্তা তাঁকে দিতে শোনা গিয়েছিল। মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি দলীয় কর্মীদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কিন্তু, সে সব যে কেবলই কথার কথা, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রমাণ করে দিল দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজ।

ছাত্র-ছাত্রীদের কাউন্সেলিংয়ের দিন সেখানে যা যা হল তাতে প্রশ্ন জাগছে, তৃণমূল নেত্রী কাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন? খোদ দলনেত্রীর কথাকেই গুরুত্ব দেওয়া হল না, বরং যেমনটা হচ্ছিল গত পরশু, গত কাল, আজও তেমনটাই হল। বদলানোর কোনও লক্ষণই দৃশ্যত চোখে পড়ল না। বরং চোখে পড়ল মারামারি, হাতাহাতি, সং‌ঘর্ষ— যার নেপথ্যে রয়েছে আসলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার নির্দেশই তো দিয়েছিলেন দলনেত্রী। খোদ দলনেত্রী যা যা বললেন, যা যা নির্দেশ দিলেন, ঠিক তার উল্টো ঘটনাটাই ঘটে গেল দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে।

যে ছাত্র সংগঠনকে সংযত হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছিল, ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছিল, সেখানে এ কোন দৃশ্য দেখা গেল আজ! বার্তা কি তা হলে ঠিক মতো পৌঁছয়নি? দলনেত্রীর বার্তাই যদি না পৌঁছয়, তা হলে কার কথায় চলছে এই দল? দলনেত্রী জানেন কি?

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

এই শতকের প্রথম দিকে এমনটাই তো দেখা যেত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের মধ্যে। দলের নিচু স্তরের সেনানীদের দিনের পর দিন এমন বার্তা তাঁরা দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু, কাজের কাজ কী হয়েছে, তা এ রাজ্য দেখেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কার্যত তাঁদের দলের ছাত্র সংগঠনের ‘দাদাগিরি’ ফলানোর জায়গা হয়ে উঠেছিল। দলের শীর্ষনেতাদের সংযত হওয়ার বার্তা শুধু বার্তাই থেকে গিয়েছে। বদলায়নি বিন্দুমাত্রও। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের পতনের প্রধান কারণগুলির মধ্যে এটাও ছিল অন্যতম। পালা বদল হয়েছে ঠিকই। কিন্তু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সেই ট্র্যাডিশন এখনও অপরিবর্তিত।

আরও পড়ুন
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিই সার গড়িয়ার অ্যান্ড্রুজ কলেজে

দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের ঘটনা, এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বিচ্ছিন্ন যে কোনও ঘটনা নয়, তা খোদ দলনেত্রীও হয়তো জানেন। সে কারণেই গত কাল দলীয় কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সাবধান করেছিলেন। কিন্তু, তাঁর কথা কেবল কথার কথা হয়েই রয়ে গেল। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের পতনের কারণগুলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন নিশ্চিত। তবুও দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের মতো ঘটনা ঘটেই যায়।

সংযোগের ভাষাগুলো কোথাও গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে, দলনেত্রী বুঝতে পারছেন তো!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE