Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

দিল্লি ডায়েরি: কাপড়ের ফাইল আর আইপ্যাডের গল্প

সীতারাম ইয়েচুরি রাজ্যসভা থেকে বিদায় নেওয়ার পর মাঝেমধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন হত, কিন্তু বাদ গিয়েছিল মিষ্টি। ইয়েচুরির হস্তক্ষেপে অবশ্য তা ফিরেও এসেছিল। এ বার নতুন লোকসভায় সাংবাদিক সম্মেলনই বন্ধ।

তফাত: বাজেট নথির কাপড়ের ফাইল হাতে নির্মলা সীতারামন। ডান দিকে, পি চিদম্বরম

তফাত: বাজেট নথির কাপড়ের ফাইল হাতে নির্মলা সীতারামন। ডান দিকে, পি চিদম্বরম

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

রাজ্যসভায় বিতর্কের ফাঁকে বা অফিসে তাঁকে দেখা যায় আইপ্যাড হাতে। নিজের কলাম লেখা, গবেষণা, অন্য সব কাজও আইপ্যাডেই করেন পি চিদম্বরম। বাজেটের পরে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর কাঁধেই কংগ্রেসের অবস্থান ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব পড়েছিল। নির্মলা সীতারামন এ বার লাল ঝোলায় কাপড়ের ফাইলে বাজেট বক্তৃতা নিয়ে এসেছিলেন। শুনে চিদম্বরমের জবাব, ভবিষ্যতে কংগ্রেসের এক অর্থমন্ত্রী আইপ্যাড হাতে বাজেট পেশ করতে আসবেন। রাজনীতিতে নামার আগে স্বামীর চাকরির সুবাদে ব্রিটেনে কাটিয়েছেন নির্মলা। সেখানে চাকরিও করেছেন। ব্রিফকেস ছেড়ে ঝোলা হাতে তোলার পিছনে তাঁর যুক্তি, তিনি ব্রিটিশ প্রথা থেকে বার হতে চান।

অগত্যা

ট্র্যাডিশন সেই কবে থেকে চলছে। সংসদ অধিবেশন চলাকালীন সিপিএম নেতারা সপ্তাহে দু’দিন সাংবাদিক সম্মেলন করতেন। নানান বিষয়ে বামপন্থী বিশ্লেষণ তো হতই, সঙ্গে সাংবাদিকদের জন্য থাকত চা, এ ছাড়াও একটা নোনতা আর একটা মিষ্টি পদ। প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে বামেদের রমরমা ছিল। সে দিন গিয়েছে। সীতারাম ইয়েচুরি রাজ্যসভা থেকে বিদায় নেওয়ার পর মাঝেমধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন হত, কিন্তু বাদ গিয়েছিল মিষ্টি। ইয়েচুরির হস্তক্ষেপে অবশ্য তা ফিরেও এসেছিল। এ বার নতুন লোকসভায় সাংবাদিক সম্মেলনই বন্ধ। লোকসভায় বামেদের যে তিন জন জিতে এসেছেন, তাঁরা নতুন। রাজ্যসভায় প্রবীণ নেতারা রয়েছেন, কিন্তু সংখ্যার জোর না থাকলে আর সাংবাদিক ডেকে কী লাভ!

ওবেরয়!

প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ডাকছেন ‘ওবেরয়’ বলে। সম্ভবত তারই অনুসরণে লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও তাঁকে বললেন ‘ওবেরয়’। স্বাভাবিক ভাবেই এর পর সংসদে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতাকে ঠাট্টার ছলে এই পদবি ধরেই ডাকা শুরু হয়ে গিয়েছে! ডেরেক ও’ব্রায়েন নিজেও বিষয়টিকে হালকা ভাবেই নিয়েছেন। দেখে তৃণমূলের এক নেতার সরস মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর অবচেতনে আসলে বিবেক ওবেরয় নামটা ঘুরছে। তিনিই সিনেমায় মোদী সেজেছিলেন। এই কারণেই বুঝি প্রধানমন্ত্রীর এই ‘অনিচ্ছাকৃত’ ভ্রান্তি!

শশীবাবুর শায়েরি

তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগকে মিথ্যে প্রচার বলতে গিয়ে শশী তারুর ‘এগজ়াস্পারেটিং ফ্যারাগো অব ডিসটর্শনস’ শব্দগুলো ব্যবহার করেছিলেন। অনেকেই মাথা চুলকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এর মানে কী? সেই শশী এখন মজেছেন শের ও শায়েরিতে। লোকসভায় বাজেটের সমালোচনায় টেনে এনেছেন গালিব, ‘বুঝ জাতে হ্যায় দিয়ে কভি তেল কি কমি সে ভি, হর বার কসুর হাওয়া কে ঝোঁকো কা নহি হোতা।’ শায়েরি জুড়েছেন বাজেটের প্রতিটি বিষয়ে। বিজেপি সাংসদদের মনে করিয়ে দিতে হয়েছে, এ কবি সম্মেলন নয়। তাতে না থেমে শশীর বক্তব্য, ‘হায়াত লে কে চলো, কায়নাত লে কে চলো, চলো তো সারে জমানে কো সাথ লে কর চলো।’

স্কোয়াশেও আছেন

হাত বা পা দিয়ে মেরে বোতলের ঢাকনার প্যাঁচ খুলতে হবে। ‘বটল ক্যাপ চ্যালেঞ্জ’-এ দুনিয়া আচ্ছন্ন। রাজনীতিকরাও বাদ নেই। মোদী সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে চ্যালেঞ্জ নিলেন যুব কল্যাণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বছর সাতচল্লিশের কিরেণ নিয়মিত জিম করেন, সাইকেল চালান। চৌষট্টিতে পা দেওয়া বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও কম যান না। গত বিশ বছর ধরে স্কোয়াশ খেলছেন তিনি। টুইটারে ছবিও দিয়েছেন।

আম-কথা

রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু খাদ্যরসিক। সম্ভবত তিনিই দিল্লিতে একমাত্র বিজেপি নেতা, যাঁর নিমন্ত্রণে থাকে অঢেল চিংড়ি! নায়ডুর ঘরে সম্প্রতি আম নিয়ে কথা বলছিলেন নানান দলের নেতা। পশ্চিমবঙ্গের এক সাংসদের দাবি, মালদহের মতো স্বাদু আম ভূভারতে নেই। তাঁর দাবি নস্যাৎ করে উত্তরপ্রদেশের সাংসদ রামগোপাল যাদব বললেন, তাঁর রাজ্যের চৌসা সাক্ষাৎ অমৃত! এর পর বৈঠকে পড়তে লাগল বিভিন্ন রাজ্যের ‘আম’ মন্তব্য। এনসিপি-র মজিদ মেনন শেষ রায় দেওয়ার মতো করে বললেন, মহারাষ্ট্রের আলফানসোই আমের রাজা!

প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায়

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy