Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Adenovirus

মুক্তি নেই

এমতাবস্থায় সচেতনতা এবং প্রতিরোধের উপায়গুলিকে আরও এক বার আত্মস্থ করে নেওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে আছে পরিত্রাণের পথ।

অ্যাডিনোভাইরাসের আক্রমণে সর্বাধিক আক্রান্ত দশ বছরের কম বয়সি শিশুরা।

অ্যাডিনোভাইরাসের আক্রমণে সর্বাধিক আক্রান্ত দশ বছরের কম বয়সি শিশুরা।

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:২৩
Share: Save:

ঋতু পরিবর্তনের সময় ভাইরাসঘটিত অসুখের হানা নতুন নয়। প্রায় প্রতি বছরই সে নিয়ম করে আসে, ব্যতিব্যস্ত করে জনস্বাস্থ্যকে, চাপ তৈরি করে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উপর, আবার নির্দিষ্ট সময় পর স্তিমিত হয়ে যায়। এই বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে অ্যাডিনোভাইরাসের প্রকোপ বেশ তীব্র ভাবেই অনুভূত হয়েছে। এই অসুখে সর্বাধিক আক্রান্ত দশ বছরের কম বয়সি শিশুরা। শিশু হাসপাতালগুলিতেও রোগীর ভিড়ের চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। অতিমারি-পরবর্তী সময়ে মরসুমি অসুখের এই বাড়বাড়ন্ত অপ্রত্যাশিত নয়। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা বিশ্বেই ফ্লু-এর প্রকোপ আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিমারির আঘাতে এক বৃহৎ সংখ্যক জনগোষ্ঠীর দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে হয়তো অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানবশরীর।

এমতাবস্থায় সচেতনতা এবং প্রতিরোধের উপায়গুলিকে আরও এক বার আত্মস্থ করে নেওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে আছে পরিত্রাণের পথ। সময় এসেছে অতিমারিতে যে নিয়মগুলি ক্রমশ জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠেছিল, সেইগুলিকে দৈনন্দিনতার মধ্যে মিশিয়ে দেওয়ার। অতিমারির একেবারে গোড়ার দিকে, যখন ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি, এই অতি সংক্রামক ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে কিছু সাধারণ নিয়মাবলি পালনের পরামর্শ দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। নিয়মিত হাত ধোয়া, জনবহুল স্থানে গেলে মাস্ক পরিধান করা, এবং জ্বর-সর্দি-কাশি হলে নিজেকে কিছু দিন বিচ্ছিন্ন রাখা যার অন্যতম। অতিমারির প্রকোপ কমে আসায় সেই নিয়মগুলি প্রায় ভুলতে বসেছে মানুষ। অথচ, এই নিয়ম শুধুমাত্র কোভিডের জন্যই নির্দিষ্ট নয়, যে কোনও সংক্রামক রোগ ঠেকাতে এই সাধারণ নিয়মগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। তা ছাড়া মাস্ক শুধুমাত্র জীবাণু থেকেই নয়, ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের হাত থেকেও কিছুটা সুরক্ষা দেয়, দূষিত নগরীতে যা উপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। মনে রাখা প্রয়োজন, সম্প্রতি ফুসফুসের অসুখের যে মাত্রা বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে, তার কারণ শুধুই ভাইরাসের আক্রমণ নয়, দূষণও সমান ভাবে দায়ী। সুতরাং, সতর্কতা প্রয়োজন উভয় ক্ষেত্রেই।

যে ঋতুতে অসুখবিসুখ তুলনায় বৃদ্ধি পায়, সেই সময় গোড়াতেই সচেতন ভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন করে চললে পরবর্তী কালে রোগের তীব্রতা ঠেকানোর কাজটি অনেকাংশেই সহজ হয়। একই সঙ্গে প্রয়োজন দায়িত্ববোধও। নিজের প্রতি দায়িত্ব, অন্যদের প্রতিও। অসুখ নিয়েই অবাধ যাতায়াত, মাস্ক না পরেই জনবহুল স্থানে যাওয়া থেকে যেমন নিজেকে বিরত রাখা উচিত, একই ভাবে সর্দি-কাশি-জ্বরকে সাধারণ ঠান্ডা লাগা ভেবে এড়িয়ে চলা, অথবা ইচ্ছেমতো ওষুধ খাওয়া— সংক্রমণকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। বিশেষত শেষোক্তটি নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা সত্ত্বেও যথেচ্ছ ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতায় লাগাম পরানো সম্ভব হয়নি। ক্ষেত্রবিশেষে এই ভুল এবং অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবহার পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। সর্বোপরি, পরিবর্তিত জলবায়ুর কল্যাণে আগামী দিনে অ-সুস্থতার সংখ্যা এবং মাত্রা দুই-ই বৃদ্ধি পাবে বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। সুতরাং, সচেতনতা এবং বাস্তববোধ ভিন্ন মুক্তির পথ নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Adenovirus COVID19 Viral fever flu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy