বিরোধী শাসককে পিছু হঠতে বাধ্য করতে পারেন, এমন দৃষ্টান্ত মোদী-জমানা শুরু হওয়া ইস্তক নেই। ছবি: সংগৃহীত।
গর্জনের সময় এখন।
রাহুল গাঁধীর হুঙ্কার, মুদ্রারহিতকরণ নিয়ে তাঁকে যদি সংসদে বলতে দেওয়া হয়, তা হলে ভূকম্প হবে। সেই আতঙ্কেই বলতে দিচ্ছে না সরকার।
সরকারও ততোধিক বুক ফুলিয়ে বলছে, নরেন্দ্র মোদী টাইম ম্যাগাজিনের ‘বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব’ প্রায় হয়েই গিয়েছিলেন (যদিও শেষ পর্যন্ত হতে পারেননি), বিভিন্ন রাজ্যে উপনির্বাচন এবং স্থানীয় স্তরের নির্বাচনগুলিতে বিজেপির ফলাফলও বলে দিচ্ছে, মুদ্রারহিতকরণের সিদ্ধান্তকে উদ্বাহু সমর্থন জানাচ্ছেন দেশবাসী।
মুদ্রারহিত দেশটায় নাগরিকের প্রাপ্তি এখন এই হুঙ্কার আর তর্জনই। শাসক কোথাও নিজের বিন্দুমাত্র ত্রুটির অস্তিত্ব খুঁজে পান না, শুধু গরিমার সন্ধানই পান। আর বিরোধী শাসককে পিছু হঠতে বাধ্য করতে পারেন, এমন দৃষ্টান্ত মোদী-জমানা শুরু হওয়া ইস্তক নেই।
নাগরিক কিন্তু বিভ্রান্ত বেশ। আশু সুদিনের সরকারি তত্ত্বে প্রত্যয় হচ্ছে না ঠিক। বিরোধীর কণ্ঠে সাধারণের সমব্যথী হওয়ার যে বার্তা নিয়ত, তাকেও আপন মনে হচ্ছে না বড়। বিভ্রান্তি আর হতাশার অন্ধকারটা ঘন হচ্ছে যেন আরও।
অন্ধকারে রুপোলি বিন্দু একটা দেখা গেল আবার, যখন সরকার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জানাল, আর দিন ষোলো বড়জোর। তার পরই সম্পূর্ণ অন্তর্হিত হবে মুদ্রাজনিত যাবতীয় সঙ্কট।
সুনির্দিষ্ট সময়বিন্দু সরকার এই প্রথম বার উল্লেখ করল, তা কিন্তু নয়। পঞ্চাশ দিনের কৃচ্ছ্রসাধন শেষে সত্তর বছরের শোষণমুক্তি অপেক্ষায়— এমন উচ্চারণ প্রধানমন্ত্রীর মুখে আগেই শোনা গিয়েছে। কিন্তু তিরিশ দিনেরও বেশি কাটিয়ে এসে অন্ধকারকে গাঢ় বই লঘু হতে দেখা যাচ্ছে না যখন, তখন বিশ্বাসে স্বাভাবিক ভাবেই ঘাটতি এসেছে।
আগে চেয়ে নেওয়া পঞ্চাশ দিন এবং তার পর থেকে এ যাবৎ অতিবাহিত সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কিন্তু এ দিন সঙ্কটমুক্তির চূড়ান্ত সময়সীমা সর্বোচ্চ আদালতকে জানিয়েছে সরকার। তাই সরকারি বয়ানে বিশ্বাস রাখতে পারা সর্বৈব অসম্ভব, এমনটা বলা যাচ্ছে না এখনই। কিন্তু গোড়া থেকে এ পর্যন্ত এত বার সিদ্ধান্ত বদলেছে সরকার, এত বার কথা আর কাজে অমিল দেখিয়েছে, এবং যে ভাবে মূল লক্ষ্যই যেন খানিক বদলে ফেলেছে, তাতে সংশয়ের পরিমণ্ডল থাকছেই।
অন্ধকারের মধ্যে রুপোলি যে রেখাটা আবার একটু ফুটিয়ে তুলল সরকার, নিস্তার পেতে আকুল নাগরিক সে রেখাকে মরীচিকা ভাবতে চায় না আর। কিন্তু ষোলো দিনের ও প্রান্তে যা রয়েছে, তা যে মরূদ্যানই, মরীচিকা যে নয়, এ বিশ্বাসও আর রাখতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy