আলাপ: মিস ইংল্যান্ড ভাষা মুখোপাধ্যায়, দাতব্য সংস্থার প্রতিনিধি রেজ়া বেয়াদ-এর সঙ্গে
মাথায় সেরার মুকুট, হাতে অনেক কাজ
‘মিস ইংল্যান্ড’ খেতাব পাওয়া প্রথম বাঙালি মেয়ে তিনিই। একাধারে ডাক্তার, পাঁচ-পাঁচটা ভাষা জানা মানুষ। স্বাস্থ্য-শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে চান আরও। মিস ইংল্যান্ড খেতাব জয়ের পর দিনই লিঙ্কনশায়ারের এক হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তার হিসেবে কাজে যোগ দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। ষষ্ঠী-সন্ধ্যায় গোলাপি শাড়ি আর ‘মিস ইংল্যান্ড’ মুকুট-পরা, তেইশ বছর বয়সি ভাষা মুখোপাধ্যায় কলকাতার একটি দাতব্য সংস্থার হয়ে ২০ হাজার পাউন্ডেরও বেশি অনুদান ওঠানোর কাজে সাহায্য করলেন। সংস্থাটি কলকাতার পথশিশুদের নিয়ে কাজ করে। ভাষা বাংলা পড়তে ও লিখতে পারেন, নির্ভুল বাংলায় কথাও বললেন। কানপুরে জন্ম তাঁর, ন’বছর বয়স পর্যন্ত ছিলেন কলকাতায়। তাঁর মা-বাবা পরে ইংল্যান্ড চলে আসেন। কলকাতাবাসী দিদা বাংলা খবরের কাগজে নাতনির সাফল্যের সংবাদ পড়ে গর্বে ভরপুর। ভাষা জানালেন, সে দিন অনুষ্ঠানে তাঁর বাংলার শাড়ি পরার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু ডিজ়াইনারদের অনুরোধে তাঁদের তৈরি একটি পোশাকই পরতে হয় শেষমেশ। কলকাতার প্রতি টান থেকেই ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ, জানালেন। ভাষার ইচ্ছে, সাধারণ মানুষকে নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করে ক্ষমতায়নের দিকে তাঁদের এগিয়ে দেওয়া। আগামী মাসে ভাষা যাচ্ছেন ‘মিস ওয়র্ল্ড’ প্রতিযোগিতায়, সেখানে দেখা হবে ‘মিস ইন্ডিয়া’ সুমন রাওয়ের সঙ্গে।
বিপাকে বিবিসি
নিরপেক্ষ খবর প্রকাশের জন্য যার খ্যাতি, সেই বিবিসি খানিক বিপাকে পড়েছে। নাগা মুথুচেটি নামে এক এশীয় উপস্থাপিকা ‘বিবিসি ব্রেকফাস্ট টেলিভিশন’ অনুষ্ঠানে আলোচনা করছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী ভাবে চার জন কৃষ্ণাঙ্গী কংগ্রেস সদস্যকে তাঁদের দেশে ফিরে যেতে বলেছেন। নাগা এ প্রসঙ্গে যোগ করেছিলেন নিজের মন্তব্য: তিনি নিজে যখন ‘ঘরে ফিরে যাও’-এর মতো মন্তব্যের শিকার হয়েছিলেন, তখন বুঝতে পেরেছিলেন এ-হেন নির্দেশের গোড়াটা কোথায়, এই নির্দেশ আসলে বর্ণবিদ্বেষী। নিজের মত প্রকাশ করার জন্য বিবিসি নাগাকে ভর্ৎসনা করেছে। বলেছে, বর্ণবিদ্বেষ সম্পর্কে নাগার নিজের অভিজ্ঞতা বলায় অসুবিধে নেই, কিন্তু ট্রাম্পকে নিয়ে ওঁর মন্তব্য করা উচিত হয়নি। লেখক, অভিনেতা, রাজনীতিবিদরা এই নিয়ে বিবিসিকে এক হাত নিয়েছেন। বিবিসির চেয়ারম্যানও পরে নিজেদের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিয়েছেন। ব্রডকাস্টিং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অফকম’ বিবিসির সমালোচনা করেছে, তাদের নিয়মকানুন ও নির্দেশিকাগুলো ঠিকঠাক নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে রিপোর্টারকে বাধ্যতামূলক ভাবে নিরপেক্ষ হতে হবে না, সে নিয়ে বিবিসির ভাবার আছে। বর্ণবিদ্বেষ, হিংসাশ্রয়ী অপরাধ, লিঙ্গবৈষম্য— তালিকা সুদীর্ঘ।
জীবনের রং
লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এই প্রথম কোনও বাঙালি নারী চিত্রপরিচালক স্ট্যান্ডিং ওভেশন পেলেন। সোনালি বসুর ছবি ‘দ্য স্কাই ইজ় পিঙ্ক’-এর ইউরোপিয়ান প্রিমিয়ারে ঘটল এই ঘটনা। এই ছবি বাস্তবের আয়েশা চৌধুরীর জীবন নিয়ে তৈরি। অল্পবয়সি মেয়েটি এক বিরল অসুস্থতার শিকার হলে তাঁর মা-বাবা চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডন নিয়ে আসেন। স্থানীয় এক রেডিয়ো স্টেশনে আবেদন করে ওঁর জন্য টাকা তোলা হয়। গ্রেট অরমন্ড চিলড্রেনস হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে চোদ্দো বছর বয়সে ভারতে ফিরে যান আয়েশা। ক’বছর পরেই তাঁর পালমোনারি ফাইব্রোসিস ধরা পড়ে, শ্বাস নিতে খুব কষ্ট। ১৮ বছর বয়সে মারা যান তিনি। সিনেমায় মৃত মেয়েটি তাঁর মা অদিতি ও বাবা নীরেনের (ছবিতে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া ও ফারহান আখতার) গল্প বলেন। সোনালি নিজেও ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর ছেলে ইশানকে হারিয়েছেন। এই ছবি ওঁর কাছে জীবনের উদ্যাপন। ওঁর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন আয়েশার মা-বাবা, অদিতি ও নীরেন। ওঁরা জানালেন ওঁদের মেয়েকে এই ছবি বাঁচিয়ে রাখবে, লন্ডনবাসীকে ধন্যবাদ দিলেন ওঁর চিকিৎসায় সাহায্যের জন্য। ছিলেন সাউথঅল রেডিয়োর প্রধান অবতার লিট-ও, যাঁর প্রচারেই আয়েশার চিকিৎসার জন্য ২,৫০,০০০ পাউন্ড উঠে এসেছিল— দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড ও ইউরোপে থাকা ভারতীয়, পাকিস্তানি, শ্রীলঙ্কানরা। এক পাক ট্যাক্সিচালক হাসপাতালে এসে নীরেনের হাতে ৫ পাউন্ড দিয়ে গিয়েছিলেন। ‘আপনি ভারতীয় না পাকিস্তানি?’ প্রশ্নে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানি, তাতে তফাত কোথায়?’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy