‘সেলফি’র দিন শেষ, এসে গেল ‘শেলফি’
রাজনীতিবিদ ও তারকারা বাড়ি থেকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, দেখা যাচ্ছে তাঁরা বই সাজানো আলমারির সামনে বসে। ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনকের ভিডিয়োয় তিনি হুডি পরে কম্পিউটারে মগ্ন, পিছনে বুক শেলফ। আর তার পরই ‘শেলফি’ ট্রেন্ড-এর শুরু। অনেকেই বইয়ের তাকের সঙ্গে সেলফি তুলছেন, আর বিখ্যাতদের ছবিতে, তাঁদের বইয়ের সংগ্রহ খুঁটিয়ে দেখছেন। দেখা গিয়েছে জে কে রোওলিং রং অনুযায়ী বই সাজান। কেউ বিষয় অনুযায়ী, কেউ আকার-আয়তন বুঝে তাক গোছান। সমালোচিত হচ্ছেন ব্রিটিশ মন্ত্রী মাইকেল গভ। তাঁর স্ত্রীর দেওয়া বইয়ের তাকের ছবি দেখে বিরক্ত বাম মনোভাবাপন্নরা। সংগ্রহে আছে হলোকস্টকে বাস্তব মানতে নারাজ ইতিহাসবিদ ডেভিড আরভিং-এর বই। আছে বিতর্কিত বই ‘দ্য বেল কার্ভ’, যাতে বুদ্ধিবৃত্তির উপর বর্ণ ও জাতিভেদের প্রভাবের কথা রয়েছে। রয়েছে একনায়ক মুসোলিনি, স্তালিনের একাধিক জীবনী, লৌহমানবী মার্গারেট থ্যাচারের স্মৃতিকথা। প্রবল বিক্ষোভের মুখে মন্ত্রীর স্ত্রী বলেছেন, ‘‘এগুলো বইমাত্র। অনেক কিছু জানতে পারা যায়। পড়ে দেখুন আগে।’’
প্রেক্ষাপট: ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করছেন ঋষি সুনক, পিছনে দেখা যাচ্ছে বইয়ের তাক
যুদ্ধ গ্যালারি কনসার্ট
৮ মে ছিল ইউরোপের ৭৫তম বিজয় দিবস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয়ের এই প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী লন্ডন কাটাল লকডাউনে। ৭৫ বছর আগে এ দিন ট্রাফালগার স্কোয়্যারে জনতা আনন্দে নেচেছিল, আর বন্ধ ছিল ন্যাশনাল গ্যালারি। যুদ্ধ চলাকালীন এক দিনের জন্যও গ্যালারি বন্ধ হয়নি। তবে, ১৯৩৯-এর অগস্টে যখন বিশ্বযুদ্ধের ছায়া ক্রমে ঘনাচ্ছে, লন্ডনের ন্যাশনাল গ্যালারি অনেক সংগ্রহই গুপ্তস্থানে সরিয়ে দিয়েছিল। ছবিগুলো ছিল ওয়েলসের পাহাড়ের মানোড-এর স্লেট পাথরের খনিতে, মাটির ২০০ ফুট নীচের গুহায়। ১৯৪২-এ বোমাবর্ষণ কমলে, প্রতি মাসে মানোড থেকে একটি ছবি লন্ডন এসে পৌঁছাত। সারা দিন বিশেষ বেষ্টনীতে ছবিটি থাকত, তাকে নিয়ে আলোচনা চলত। রাতে আবার মাটির নীচে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে রাখা হত। সেই থেকে গ্যালারির বিখ্যাত ‘পিকচার অব দ্য মান্থ’ রীতির সূত্রপাত। গ্যালারির ফাঁকা ঘরে মধ্যাহ্নভোজের সময় কনসার্ট হত। সেরা সঙ্গীতশিল্পীরা পারফর্ম করতেন। গ্যালারির বাইরে ট্রাফালগার স্কোয়্যার পর্যন্ত পৌঁছে যেত দর্শকের লাইন। সাধারণ মানুষের স্বার্থে টিকিটের দাম ধার্য হয়েছিল মাত্র এক শিলিং। ১৯৪০-এর অক্টোবর থেকে ’৪১-এর এপ্রিল: ন’বার বোমা পড়েছিল গ্যালারিতে। এক বার তো ‘লাঞ্চটাইম কনসার্ট’ চলাকালীনই! বাড়ির অন্য অংশে বোমা ফাটলেও সঙ্গীতবিদরা কনসার্টের তাল কাটতে দেননি!
করোনা জাদুঘর
করোনা-কালে মানুষ কেমন ভাবে যুঝেছিলেন, ভবিষ্যতের স্বার্থে নথি জমিয়ে রাখতে চায় লন্ডন জাদুঘর। তারা মানুষকে এই সময়ের ছবি, লেখালিখি ও অন্যান্য স্মারক পাঠানোর অনুরোধ করেছে। শেষ বিশ্ব-মহামারি ১৯১৮-র স্প্যানিশ ফ্লু-র সময়ের চিঠি, রচনা ও অন্যান্য স্মরণিকার বিশাল সম্ভার জাদুঘরে। করোনা-দলিলের অনেকটাই মিলবে অনলাইনে। জ়ুম মিটিং, ডিজিটাল অনুষ্ঠানগুলিতে। বাড়িতে বানানো মাস্ক, দস্তানা, মোবাইলে রেকর্ড করা গান, ছবি, নানা স্বাদের গল্প নিশ্চয়ই আসবে। আর নির্ঘাত আসবে বহুবিধ রেসিপি!
লিমেরিক ত্রাণ
কবিও: চিকিৎসক সত্যজিৎ ভট্টাচার্য
ব্রিটেনের রাজ-আঙিনার এক মাত্র বাঙালি তথা ভারতীয় সদস্য হলেন রানির চিকিৎসক সত্যজিৎ ভট্টাচার্য। বহু উপাধি, পুরস্কারে সম্মানিত ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস-এর শল্যচিকিৎসক মানুষটি কবিতাপ্রেমী। তিনি ২৬ পাতার মজাদার পদ্য লিখে, ‘লকডাউন লিমেরিক’ নামে অনলাইন পোস্ট করেছেন। উদ্দেশ্য, এই দুর্দিনে মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে, দু’টি ত্রাণ তহবিলের জন্য কিছু অর্থ সংগ্রহ। যাতে ক্ষুধার্তদের খাবার আর গৃহহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু দেওয়া যায়। পদ্যের সঙ্গে রয়েছে নিজস্ব ভঙ্গিতে আঁকিবুকিও। নিজে বলেছেন, টুকরো খুশি, ভীষণ দুশ্চিন্তা, প্রচণ্ড কষ্ট বা ভয়াবহ এক অসুখের কথা রয়েছে কবিতাগুলোয়। তাই সব ক’টা তেমন হালকা মেজাজের নয় হয়তো। 'A confession' কবিতাটা তুলে দিলাম: "Friends, to be utterly frank/ I have a weakness for Sauvignon Blanc/ But to make up for my sins/ When the yoga begins/ For ten minutes I hold the plank."
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy