গত ২২ জুন আমার ভগ্নিপতি মাত্র ৪৯ বছর বয়সে মারা যান। স্বভাবতই তাঁর নামে ল্যান্ডলাইন ও মোবাইল লাইনের সংযোগগুলি বন্ধ করার উদ্দেশ্যে আমার বোন টেলিফোন পরিষেবা প্রদানকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থার সল্টলেক ও দমদম এক্সচেঞ্জ অফিসে যায়। কিন্তু দু’টি অফিসেই তার অভিজ্ঞতা তিক্ত ও বেদনাদায়ক। এমনিতেই আমাদের মতো দেশে উপভোক্তাদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। রেল স্টেশন, এয়ারপোর্ট, ডাকঘর, ব্যাঙ্ক— সর্বত্র নাগরিকরা এই ব্যবহার পেতে অভ্যস্ত। আমার বোনও সেই একই প্রবণতার শিকার হয়। বিভিন্ন কাউন্টারে তাকে রুক্ষ ভাবে বলা হয়, ‘জানি না’, ‘বলতে পারব না’, ‘এটা আমার দেখার কথা নয়’, ‘অন্য কাউন্টারে দেখুন’ ইত্যাদি। শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট কাজটি না করেই বোনকে ফিরে আসতে হয়।
টেলিফোনের মতো জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থা যখন সাধারণ মানুষের সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করে, তখন মনে হয়, এমন আচরণ ইচ্ছাকৃত নয় তো? এর ফলেই হয়তো বেসরকারি সংস্থাগুলির দিকে মানুষ ঝুঁকছে বেশি। প্রশাসনও কি সেই রকমই চায়?
সন্দীপ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৯১
অসাধু প্রোমোটার
মধ্যবিত্তদের ফ্ল্যাট কেনাবেচা নিয়ে বিভিন্ন সতর্কবার্তা এবং উপদেশ দিয়ে মাঝেমধ্যেই লেখা ছাপানো হয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। বহু মানুষ তাঁদের জীবনের বেশির ভাগ সঞ্চয় থেকে ফ্ল্যাট কেনেন। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু প্রোমোটারের পাল্লায় পড়ে ফ্ল্যাটের জমির নকশা এবং তার যাবতীয় কাগজপত্রের অনিয়মের কারণে তাঁরা না পারেন ফ্ল্যাটের কমপ্লিশন সার্টিফিকেট বার করাতে, না পারেন বিভিন্ন পুরসভাতে মিউটেশন করে পুরসভাকে তার প্রাপ্য ট্যাক্স জমা দিতে। অবশ্য বহু বছর ধরেই জমির এই রিভিশনাল সার্ভে খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, খতিয়ান, পড়চা সাধারণ মানুষের কাছে খুবই জটিল করে রাখা আছে, যা তাঁদের বোধগম্য হওয়ার বাইরে। কোনও সরকারই এগুলি সহজবোধ্য করে তুলতে আজও ব্যর্থ।
আবার এটাও বাস্তব যে, ফ্ল্যাট কেনার আগে জমির দলিল, পড়চা, ফ্ল্যাটের কমপ্লিশন সার্টিফিকেট, সেখানে ন্যূনতম জলের ব্যবস্থা, লিফট (যদি দলিলে থাকে), অন্তত সাইকেল, বাইক রাখার মতো জায়গা, প্রোমোটারের লাইসেন্স ইত্যাদি রেজিস্ট্রেশনের আগে সব কিছু দেখে কোনও ক্রেতা যদি ফ্ল্যাট কিনতে যান, তবে রাজ্যের কোনও ডেভলপারই ফ্ল্যাট বিক্রি করতে পারবেন না। আর ক্রেতা সে ক্ষেত্রে অ্যাডভান্স বুকিং করার কথাও ভাববেন না।
অন্য দিকে, লোন দিতে মুখিয়ে থাকা ব্যাঙ্কগুলো এক বার লোন পাশ করে দেওয়ার পরে আর কোনও জটিলতাতেই ঋণ নেওয়া গ্রাহকের পাশে দাঁড়ায় না। দিল্লিতে যে বহুতল ফ্ল্যাট আইনের সহায়তায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হল, সেই উচ্চ দরের আইনি সহায়তা নেওয়া মধ্যবিত্ত সমাজের কাছে স্বপ্ন। তাই বিভিন্ন সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, বেশ কিছু অসাধু প্রোমোটারের জন্য ভাল প্রোমোটারদেরও যাতে বদনামের ভাগীদার হতে না হয়, তার কিছু একটা ব্যবস্থা করা হোক বা কড়া আইন প্রণয়ন করা হোক। তাতেও যদি কাজ না হয়, তবে যাঁরা এই বিষয়গুলিতে দিনের পর দিন ঠকে আসছেন, তাঁরা সমবেত ভাবে রাজ্যে জোরালো ফোরাম তৈরি করুন।
প্রসেনজিৎ দত্ত, কলকাতা-৩৫
আবর্জনাময়
ভিন্ন প্রদেশ, রাজ্যের ভিন্ন জেলা থেকে যাঁরা কলকাতায় আসেন, তাঁদের অনেককেই হাওড়া স্টেশন দিয়ে আসতে হয়। যাঁরা ট্যাক্সি বা গাড়িতে ওঠেন, সুড়ঙ্গ পেরিয়ে হাওড়া ব্রিজে ওঠার জন্য ইউ টার্ন নেওয়ার আগে তাঁদের নরক দর্শন করতে হবে। ব্রিজে ওঠার আগেই পাঁচিলের গা ঘেঁষে দীর্ঘ অঞ্চল জুড়ে দেখা যায় আবর্জনার পাহাড়। যাঁরা বাসে যাতায়াত করেন, তাঁরা অন্য দিক থেকে আসেন বলে জঞ্জালের পাহাড় দেখতে পান না। কিন্তু দুর্গন্ধ থেকে তাঁদেরও রেহাই মেলে না। এর কিছু দূরেই হাওড়া পুরনিগমের ডেঙ্গি সচেতনতা শিবির চলছিল কিছু দিন আগে। সারা ক্ষণ মাইক বাজিয়ে জনগণকে সচেতন করার প্রয়াস চলছিল। যে জায়গাটার কথা বলছি, সেখানে বহু মানুষ গাড়ি করে গেলেও, সাধারণত আবর্জনা কুড়ানিরা ছাড়া কেউ হেঁটে যান না। ফলে সাধারণ মানুষের সেখানে আবর্জনা ফেলার কোনও সুযোগ নেই। তা হলে ফেলে কে? বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হাওড়া পুরনিগমের কর্মীরা? তাঁরাও নিশ্চয় নিজেরা সেখানে আবর্জনা জমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে, পুরনিগমের পরিচালকদের সচেতন সিদ্ধান্তেই এই খোলা রাস্তায় আবর্জনা জমিয়ে এবং মাঝে মাঝে তা তুলে আরও বড় আবর্জনা স্তূপে পরিণত করার ব্যবস্থা চলে দিনের পর দিন।
আবার, শিয়ালদহ স্টেশন থেকে উত্তর দিকে একটু হাঁটলেই ফ্লাইওভার যেখানে শেষ হচ্ছে, সেখানে রাস্তার ডান দিকে আবর্জনার পাহাড়। উৎস থেকে আবর্জনা নিয়ে এসে মধ্যবর্তী কোথাও খোলা অবস্থায় মাটিতে বা রাস্তায় ফেলে জমিয়ে রাখা আইনত নিষিদ্ধ। তবুও অসংখ্য পুরনিগম, পুরসভা বা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এ রকম করেই চলেছে।
আইনে তো কত কিছুই লেখা থাকে। কিন্তু মানে কে? বিশেষ করে পরিবেশ সম্পর্কিত আইনের ক্ষেত্রে না মানাটাই দস্তুর। শহরের প্রবেশদ্বারে এ রকম খোলা আবর্জনার স্তূপ না রাখলেই নয়? রাজ্যের প্রবেশপথ একটু পরিচ্ছন্ন রাখা তো যে কোনও প্রশাসনের কর্তব্য। এই নিঃস্পৃহতা একটা ইঙ্গিত বহন করে— জমিয়ে রাখা আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ, স্বাস্থ্যহানি, দৃশ্যদূষণ কোনও কিছুই তাদের পীড়া দেয় না।
শশাঙ্ক শেখর দেব, কলকাতা-৩১
দ্বিচারিতা
২০১৯ সালের মেট্রো রেলপথ নির্মাণ বিপর্যয়ে ১/৪, দুর্গা পিথুরি লেনের বাড়ির সব ভাড়াটিয়াকে বিকল্প থাকার ব্যবস্থা এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও কোনও এক অজানা কারণে আমাকে সব দিক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। গত মে মাসে আবার বিপর্যয়ের সময় অন্যান্য সকল ভাড়াটিয়ার সঙ্গে আমাকেও হোটেলে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু আবারও কোনও এক অজানা কারণে কেবলমাত্র দশ দিন পর মেট্রোরেলের তরফ থেকে হোটেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং মৌখিক ভাবে বলা হয়, যে-হেতু আমার বিকল্প থাকার ব্যবস্থা আছে, সেই জন্যই হোটেল ছাড়তে হবে। উল্লেখ্য, হোটেলে অস্থায়ী ভাবে স্থানান্তরিত অনেকেরই বিকল্প থাকার ব্যবস্থা ছিল বা এখনও আছে। বারংবার মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
বিপ্লব সিংহ, কলকাতা-১২
থাকুক গার্ডরেল
টালা সেতু নতুন করে তৈরি হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, বি টি রোড ও মন্মথ নাথ গাঙ্গুলি রোডের সংযোগ স্থলে মাঝেমধ্যে গার্ডরেল সরিয়ে রাখা হয়। কার নির্দেশে এ রকম ঘটে জানা নেই। বি টি রোডের উত্তর প্রান্ত থেকে যে সব গাড়ি মন্মথ নাথ গাঙ্গুলি রোড দিয়ে আর জি করের দিকে যায়, সেই গাড়িগুলির চালকেরা কোনও অবস্থায় গতি কম রাখেন না। ফলে, অঞ্চলের অধিবাসী, বিশেষত বয়স্ক মানুষ এবং রোগীরা যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন। ট্র্যাফিক বা সিভিক পুলিশরাও দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন। অবিলম্বে সুরাহার জন্য আবেদন করছি।
শেখর নাথ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-২
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy