চাকরিরত অবস্থায় আমার পরিচিত এক শিক্ষক মারা গেলেন। পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস ছিল ওই শিক্ষকের বেতন। তাঁর পরিবারে স্ত্রী, ছোট ছোট দু’টি সন্তান আছে। তাদের চিন্তা, সংসারটা চলবে কী ভাবে? সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, পরিবার পারিবারিক পেনশন পাবে। তার পর পরিবারের কারও যোগ্যতা থাকলে আবেদনের ভিত্তিতে তিনি চাকরি পাবেন। কিন্তু ফ্যামিলি পেনশন চালু হতে বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে।
আবার সম্প্রতি এক জন শিক্ষিকা অবসর গ্রহণ করেছেন। পাঁচ মাস হয়ে গেলেও পেনশন চালু হচ্ছে না। কত মাস আরও সময় লাগবে, সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে কোনও সদুত্তর নেই। তিনি চাকরির পরীক্ষা দিয়েই ঢুকেছিলেন কাজে। তখন নথিপত্র যাচাই করা হয়েছিল নিশ্চয়ই। তার পরই সরকার নিয়োগপত্র দেয়। তিনি চাকরি করলেন। মাসে মাসে বেতন পেলেন। সব তথ্যই সরকারের কাছে আছে। তা হলে অবসরের পরের মাস থেকেই পেনশন চালু হওয়ার কথা। কিন্তু মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অফিসে চক্কর কাটলেও পেনশন চালু হয় না অনেকেরই।
সার্ভিস বুক বা কাগজপত্রের ত্রুটির কারণে পেনশন আটকে থাকে অনেকের। ত্রুটিগুলো হয় সংশ্লিষ্ট অফিসের আধিকারিক বা বিভাগের ভুলে। অথচ ভুগতে হয় অন্যদের। পেনশন চালুর ব্যবস্থায় সরলীকরণ প্রয়োজন। অবসরের পরের মাস থেকেই পেনশন চালু হয়ে যাওয়া দরকার। তার পরে নাহয় কাগজপত্রের ত্রুটি ধীরে ধীরে অফিস মিটিয়ে নিক।
আব্দুল জলিল সরকার
হলদিবাড়ি, কোচবিহার
বিপন্ন সাংবাদিক
‘সংবাদ-স্বাধীনতার সূচকে আরও মান পড়ল ভারতের’ (৪-৫) শীর্ষক খবরটি সত্যিই খুব উদ্বেগজনক। বিশ্ব জুড়ে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের স্বাধীন ভাবে মতপ্রকাশের অধিকারকে কণ্ঠরোধ করতে আজ আধিপত্যবাদী শাসকবর্গ খড়্গহস্ত। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই চলছে এই দমন-পীড়নের চক্রান্ত-পর্ব। দুঃখের বিষয়, তাতে পিছিয়ে নেই ভারতও।
এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ, ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস’-এর প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম সূচকে ভারতের অবস্থানটি ক্ষয়িষ্ণু সোপানের মতো ক্রমাগত অবনতির পথেই চলেছে। ২০১৬-তে ১৩৩ থেকে নিম্নগামী হতে হতে গত বছর ভারত ছিল ১৪২-এ। এই বছরে ১৮০টি দেশের মধ্যে তা আরও নেমে দাঁড়িয়েছে ১৫০তম স্থানে! অথচ, ২০০২ সালে প্রকাশিত ওই সূচকে ভারতের স্থান ছিল ৮০তম। বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক দেশে কার্যত যা চলছে, সেটাকে কী বলা যেতে পারে— রাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদ? গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ যখন সংবাদমাধ্যম, তখন তার উপরে কর্তৃপক্ষের এমন ক্রমবর্ধিত আক্রমণ ও বিষোদ্গারের বিষয়টি কি গণতন্ত্রের মূলে কুঠারাঘাতের সমতুল্য নয়? গণমাধ্যমের উপর ক্রমবর্ধমান বিধিনিষেধ আরোপ, সাংবাদিকদের মিথ্যা সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার, স্বাধীন সংবাদ-সংস্থাকে আক্রমণ করে তাদের কর্মক্ষেত্রে অভিযান চালানো ও রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীকে কারারুদ্ধ করার মতো ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী দমনমূলক শাসন কবে দেশ থেকে পুরোপুরি বন্ধ হবে? ভারত সরকারের সমালোচক সাংবাদিকদের চিহ্নিত করে হুমকি, হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা প্রায়ই উঠে আসছে। মনে রাখা জরুরি, সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং জম্মু-কাশ্মীরের সাংবাদিকরা বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। কাশ্মীরের কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে প্রমাণ ছাড়াই নির্বিচারে আটক করছে।
২০১৬ সালের ১৩ মে বিহারে এক সাংবাদিক রাজদেব রঞ্জনকে গুলি করে খুন করা হল। ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুতে প্রতিবাদী সাংবাদিক-লেখিকা গৌরী লঙ্কেশকে আততায়ীরা নৃশংস ভাবে হত্যা করে। এ দেশে সাংবাদিক হত্যার তালিকাটি নেহাত ছোট নয়। তাঁদের অপরাধ ছিল, মানবতা ও নীতির পক্ষে তাঁরা জীবনপণ সংগ্রামে শামিল হয়েছিলেন। চিকিৎসক কাফিল খান, সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান, মানবাধিকার কর্মী সুধা ভরদ্বাজ, অশীতিপর কবি ভারাভারা রাও— এমন বহু বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিবাদী মানুষ কেন আজ রাষ্ট্রের প্রতিহিংসার শিকার?
এই প্রসঙ্গে ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’, অর্থাৎ সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা কমিটির রিপোর্টেও উঠে আসে এ দেশের আর এক ভয়াবহ চিত্র। সিপিজে-র গ্লোবাল ইমপিউনিটি ইনডেক্স বা দায়মুক্তির সূচক জানায় সেই সব দেশের কথা, যেখানে সাংবাদিককে হত্যা করার পরে হয় কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় না, নয়তো অপরাধী কোনও ভাবে ছাড়া পেয়ে যায়। সেই সূচক অনুযায়ী, গত দশ বছরে (২০১১-র ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১-এর ৩১ অগস্ট) বিশ্বে মোট যত জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, তার ৮১ শতাংশ মামলায় কাউকে দায়ী করা যায়নি। এই সূচকে ২০২১ সালে ভারতে অমীমাংসিত খুনের সংখ্যা ছিল ২০ এবং তালিকায় তার স্থান ছিল ১২-য়। ওই বছর বিশ্বব্যাপী নিহত ৪৬ জন সাংবাদিকের মধ্যে ভারতের ছিলেন চার জন। তবে কি সাংবাদিকতার জন্য বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক দেশ হয়ে উঠছে ভারত?
এ দেশে সংবাদ-স্বাধীনতার সূচক-সহ বৈশ্বিক দায় মুক্তির সূচকের অবস্থান যখন ক্রমাগত এ রকম ভয়াবহ অধোগতির দিকে, তখন কি মনে হয় না যে, রাষ্ট্রের সরকার বা কর্তৃপক্ষ এখন দেশের আইন রক্ষকের ভূমিকায় অতীব দুর্দশাগ্রস্ত ও অকর্মণ্যতার প্রতীক?
পৃথ্বীশ মজুমদার
কোন্নগর, হুগলি
কেন একই দিনে
দীর্ঘ দিন যাবৎ অতিমারির কারণে এমনিতেই সরকারি চাকরির পরীক্ষা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সেই ভাবে হয়নি। অবশেষে তা আবার শুরু হয়েছে। এ দিকে একই তারিখে দু’টি চাকরির পরীক্ষার দিন নির্ধারিত হয়েছে। আমাদের রাজ্যের পাবলিক সার্ভিস কমিশন আয়োজিত ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস (ইএক্সই) মেন পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখ ২০, ২১, ২২ ও ২৪ মে। আবার পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড আয়োজিত ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ কনস্টেবল মেন পরীক্ষাও হবে ২২ মে।
এর জন্য চাকরিপ্রার্থী, বিশেষ করে আর্থিক ভাবে অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবারের যুবকদের খুব সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমার মতো অনেক চাকরিপ্রার্থীই অনেক কষ্ট করে উভয় প্রাথমিক পরীক্ষায় এবং শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষায় পাশ করে মেন পরীক্ষায় বসতে চায়। কিন্তু একই দিনে দু’টি পরীক্ষা হওয়ায় যে কোনও একটা পরীক্ষার সুযোগ হারাতে হচ্ছে। আমরা কেন দুটো
মেন পরীক্ষাতেই বসতে পারব না? উভয় বোর্ড কি পারস্পরিক আলোচনার দ্বারা পরীক্ষাগুলির আলাদা তারিখ নির্ধারণ করতে পারত না? এতে আমাদের মতো পরীক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে যাবে। তাই আমার বিনীত অনুরোধ, উভয় রিক্রুটমেন্ট বোর্ডই এই বিষয়টি পর্যালোচনা করুক।
গণেশ বাগদি
পাত্রসায়র, বাঁকুড়া
আলুর দাম
কিছু দিন আগে মালদহ, রায়গঞ্জ ও বালুরঘাটে একটা কাজে গিয়েছিলাম। ওখানে বাজারে ভাল আলুর দাম ১৬ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম। আর সাধারণ আলু বিক্রি হচ্ছিল ১০-১৪ টাকায়। জামু প্রজাতির আলু বালুরঘাটে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই আলুর দাম সব সময় বেশি। অন্য দিকে, কলকাতার বাজারে জ্যোতি আলুর দাম কমপক্ষে ৩০ টাকা, চন্দ্রমুখী ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে উত্তরবঙ্গ থেকে আলু এনে এখানকার বাজারে বিক্রি করলে সাধারণ মানুষ বাঁচে। কিন্তু এমন পদক্ষেপ কি করা হবে?
জয়ন্ত রায় কর্মকার
কলকাতা-৩০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy