‘সরস্বতীর বায়না কম, চিন্তায় কুমোরটুলি’ (২০-১) শীর্ষক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে, সরস্বতী পুজোর দিন এগিয়ে এলেও কুমোরটুলিতে তেমন বায়না এখনও আসেনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কারণে বন্ধ রয়েছে, যে কারণে প্রতিষ্ঠানগুলি সরস্বতী পুজোর বিষয়ে এখনই উদ্যোগ করতে পারছে না। ফলে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। যদিও পুজো হবে ধরে নিয়ে মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা গড়ে রাখছেন।
তবে শুধু কুমোরটুলির মৃৎশিল্পরাই নন, রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রতিমাশিল্পীদের কপালে একই রকম চিন্তার ভাঁজ। অনেক টাকা ধারদেনা করে তাঁরা প্রতিমা তৈরির কাজে হাত দেন। দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর পর সরস্বতী পুজোয় তাঁদের রোজগারের আশা সবচেয়ে বেশি। তার কারণ এই পুজোর সংখ্যা অনেক। সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলি বাগ্দেবীর আরাধনায় মেতে ওঠে। প্রচুর বায়না পান তাঁরা। তাঁদের রুজিরোজগারের একটা বড় অংশই আসে সরস্বতী পুজো থেকে।
আমরা জানি, জানুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধ থেকে অনেক বিধিনিষেধ আস্তে আস্তে উঠে গিয়েছে। মূলত মানুষের রোজগারের কথা চিন্তা করেই বিধিনিষেধে শিথিলতা আনা হচ্ছে। সংক্রমণও নিম্নমুখী। এমতাবস্থায় মৃৎশিল্পীদের কথা মাথায় রেখে, করোনাবিধি মেনে সরস্বতী পুজো কী ভাবে করা সম্ভব, সে সম্পর্কে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রদানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নয়তো বছরের শুরুতেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন রাজ্যের মৃৎশিল্পীরা।
ভাস্কর পাল
কলকাতা-১১৩
অ-সুস্থ পরিবেশ
আমাদের গ্রাম অনন্তপুর-এ কিছু ফাঁকা জায়গা রয়েছে। ফাঁকা জায়গা মানে কিছু বাগান। বহু মানুষ বনভোজনের জন্য এই বাগানগুলি বেছে নেন। এক দিকে রান্নার সুগন্ধ, শিশুদের দৌড়োদৌড়ি, বড়দের কথাবার্তা, আর অন্য দিকে আশা-লতা-হেমন্ত-মান্না-আরতি-সন্ধ্যার বাংলা গান— অত্যন্ত সুমধুর হয়ে ওঠে এই বনভোজনগুলি। শীতের সময় এই পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ অভিজ্ঞতার রেশ থেকে যায় বছরের বাকি সময়টা। কিন্তু যে ভাবে হলে সকলের ভাল হয়, সেটা আবার অনেকের অপছন্দ। তাঁদের কাছে পিকনিক মানে ডিজে বক্সের গগনভেদী চিৎকার আর নেশাতুর হয়ে অশ্রাব্য শব্দ প্রয়োগ। এই ভাবে বীভৎস আওয়াজ যে ইচ্ছা হলেই করা যায় না, এ ধরনের প্রচণ্ড শব্দে যে কেবল নিজেদের নয়, আশপাশে থাকা মানুষ ও পশুদেরও নানাবিধ ক্ষতি হয়— এ কথা বলতে গেলে উল্টে দলবলের হাতে মার খাওয়ার আশঙ্কা থাকে। পুলিশ-প্রশাসনকে বলেও ভরসা পাওয়া যায় না। কারণ, এই ‘দামাল’ ছেলেরা ভোটের সময় কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের ‘সেনাপতি’ হিসাবে ময়দানে থাকেন। তাই উপরতলা থেকে ‘খবর’ বা ‘চাপ’ না এলে থানার পুলিশ আধিকারিকরা এই বিষয়টিকে ‘ছোটখাটো’ হিসাবে দেখতেই পছন্দ করেন।
ফলত, পিকনিক পার্টির ডিজে বক্স ও অশ্রাব্য শব্দের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েও চুপচাপ সহ্য করে যেতে হয় এলাকাবাসীকে। অথচ, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই এ ধরনের কাজ পছন্দ করেন না বা কেউ করুক তা চান না। সমাজের ক্ষতি হবে জেনেও মানুষের এই ধরনের কাজ করে যাওয়ার অবাধ স্বাধীনতাই বলে দেয়, সমাজে বিচ্ছিন্ন ভাবে থাকা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আসলে পরিবেশ ও সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর মানুষদের দ্বারা শাসিত হচ্ছেন। এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মধ্যে থেকে একটা ক্ষুদ্র অংশ আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে রাস্তায় নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন, যা দেখে ভরসা জাগে। পরিবেশ সুস্থ না থাকলে মানুষ তথা সমাজ যে সুস্থ থাকতে পারে না, তা যদি পড়াশোনা করে শিক্ষিত হওয়া সরকারি আধিকারিকরা এবং রাজনৈতিক নেতারা বুঝতে পারেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপরতা দেখান, তা হলেই তা দেশ তথা জাতির পক্ষে মঙ্গলময় হবে।
প্রশান্ত দাস
অনন্তপুর, হুগলি
ব্যাঙ্ক প্রতারণা
‘কেওয়াইসি-র নামে ফের প্রতারণা, সতর্ক করল ব্যাঙ্ক’ (১৬-১) খবরে কী করবেন না বা কী খেয়াল রাখবেন, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দিন সরকারি ব্যাঙ্কে কাজ করার অভিজ্ঞতায় জানাচ্ছি, তিনটি বিষয় খেয়াল রাখলে প্রতারণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
এক, ব্যাঙ্ক নিজের লোগো দেওয়া মেসেজে বা এটিএম-এর সংশ্লিষ্ট কাগজে বার বার জানায়, অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বা এটিএম সংক্রান্ত কোনও তথ্য তারা জিজ্ঞাসা করবে না। সব তথ্য ব্যাঙ্কের কাছে আছে। প্রতারণা এড়ানোর এটাই মূলমন্ত্র। পরিচিত কোনও সহকর্মী বা ব্যাঙ্কের কর্মীর নাম করেও যদি কেউ বলে এখনই কেওয়াইসি আপডেটের জন্য অমুক লিঙ্ক খুলুন বা এটিএম-এর ডিটেলস দিন নইলে মাইনে জমা পড়বে না বা অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে, তখনই বুঝতে হবে ওটি ফ্রড কল। সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দিতে হবে। নেটে অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হওয়া রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতারিত অধ্যাপিকা ঠিক এই ভুলটাই করেছিলেন।
দুই, মোবাইলে প্রায়ই মেসেজ আসে, লটারিতে আপনার নম্বর উঠেছে, আপনি এত টাকা পাবেন বা আপনার লোন গ্রান্ট করা হয়েছে বা বিদেশের কোনও নাগরিক আপনাকেই প্রচুর টাকা দিতে চান ইত্যাদি। সেই সঙ্গে বলা হয় লিঙ্ক ওপেন করতে বা অ্যাকাউন্ট ডিটেলস দিতে। এ ক্ষেত্রেও ভুলেও লিঙ্কে হাত দেবেন না বা অ্যাকাউন্টের তথ্য দেবেন না। মনে রাখবেন, কেউ যেচে উপকার করে না।
তিন, কোভিড অতিমারির পরিপ্রেক্ষিতে এখন মেসেজ আসছে, কম টাকায় অমুক প্রাইভেটে সেকেন্ড ডোজ় বা বুস্টার ডোজ়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে, এই লিঙ্ক ওপেন করুন। এটিও আর একটি মারণফাঁদ। শুধুমাত্র সরকারি অ্যাপ ছাড়া আর কোনও লিঙ্কে হাত ছোঁয়াবেন না।
শিখা সেনগুপ্ত
কলকাতা-৫১
পর্যটন বাঁচাতে
প্রতি বারই করোনার বিধিনিষেধের কোপে পড়ে পর্যটন শিল্প। বছর দুয়েক ধরে রাজ্যের পর্যটন শিল্প ধুঁকছে। অথচ, রাজ্য সরকারের তরফে পরিত্রাণের কোনও ব্যবস্থা নেই। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বহু মানুষ যুক্ত। শীতকালই পর্যটনের উৎকৃষ্ট সময়। পর্যটন বন্ধ থাকার জন্য এর সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন। রেস্তরাঁ, শপিং মল, পানশালা, মেলা যেমন চলছে, তেমনই ৫০ শতাংশ পর্যটক নিয়ে পর্যটনও চালু করা যেতে পারে।
এই শিল্পকে বাঁচাতে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলোর সঙ্গে রাজ্য সরকারের একটা সুনির্দিষ্ট পর্যটন নীতি তৈরি করা প্রয়োজন। পর্যটন শিল্প চালু হলে রাজ্যের ভান্ডারেও বিপুল পরিমাণ অর্থ আসবে আর এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক লক্ষ পরিবার বেঁচে থাকার অবলম্বন
খুঁজে পাবে।
রাসমোহন দত্ত
মছলন্দপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
অমানবিক
গত ১৫ ডিসেম্বর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এক নির্দেশে স্টেট জেনারেল ও মহকুমা হাসপাতালে সরবরাহকৃত ওষুধের সংখ্যা ৬৪৪ থেকে কমিয়ে ৩৬১ করেছে। বাদের তালিকায় ক্যানসার, ডায়াবিটিস, হিমোফিলিয়া, নিউমোনিয়া-সহ বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধ রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশ অমানবিক। বর্তমান অতিমারি পরিস্থিতিতে জনজীবন যখন দুর্বিষহ অবস্থার সম্মুখীন, ঠিক তখন এই জীবনদায়ী ওষুধ ছাঁটাই গরিব-মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত-খেটেখাওয়া নাগরিকদের তীব্র সঙ্কটে ফেলবে। স্বাস্থ্য দফতরের এই অমানবিক নির্দেশ অবিলম্বে বাতিল করার
দাবি জানাই।
নারায়ণ চন্দ্র নায়ক
কোলাঘাট, পূর্ব মেদিনীপুর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy