কলকাতায় ছ’হাজারের অধিক মানুষ আক্রান্ত। মৃত্যুর সংখ্যাও যথেষ্ট। ফাইল চিত্র।
কলকাতার যে কোনও সংবাদপত্রে প্রায়শই চোখে পড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার ও মৃত্যুর খবর। মশকবাহিত এই রোগ কোভিডের থেকেও যেন বেশি আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ, রাস্তাঘাট আবর্জনামুক্ত করা, জল জমতে না দেওয়া, মশার বংশবৃদ্ধিরোধক কীটনাশক প্রয়োগ করার মতো প্রাথমিক কাজগুলো কলকাতা বা হাওড়া পুরসভার সব অঞ্চলে সঠিক ভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে না। উল্টে, কলকাতা পুরসভার মেয়র বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে মানুষের অসচেতনতাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন। তাঁর মতে, সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, মানুষ নিজের বাড়ির ভিতরে গাছের টব ইত্যাদির জমা জল পরিষ্কার করছেন না। ফলে মশককুল সেখানে নির্দ্বিধায় ডেঙ্গির বীজ বুনছে। এটাই নাকি ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ। ইতিমধ্যেই, কলকাতায় ছ’হাজারের অধিক মানুষ আক্রান্ত। মৃত্যুর সংখ্যাও যথেষ্ট।
তাও, প্রশাসনের হাবভাব এবং ডেঙ্গি দমন কর্মসূচি দেখে মনে হয়নি কলকাতার ডেঙ্গি পরিস্থিতি আদৌ উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছেছে। কিছু কাল আগে পুরসভা হিসাব দিয়ে জানিয়েছিল, কলকাতার জনসংখ্যার এক শতাংশও ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়নি। তাই পরিস্থিতি ততটা উদ্বেগজনক নয়। যত দূর জানি, কলকাতার মোট জনসংখ্যা প্রায় দেড় কোটির কাছাকাছি। তার এক শতাংশ আক্রান্ত হলে, সেই সংখ্যাটা প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজারের আশেপাশে দাঁড়ায়। তা হলে কি আক্রান্তের সীমা ওই সংখ্যা ছাড়ালে, তার পর সরকারের টনক নড়বে? অবাক লাগে, পুরসভার উচ্চ পদাধিকারীরা নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে ও নিজপক্ষ সমর্থনের জন্য কী করে যা খুশি তাই মন্তব্য করে বসেন, যার বেশির ভাগই বাস্তবের থেকে বহু যোজন দূরে থাকে। এমন মন্তব্যের কোনও গঠনমূলক প্রতিবাদও হয় না। শুধু চলে সরকার আর বিরোধী পক্ষের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি। আর, নিরীহ সাধারণ মানুষ হন তার শিকার। তাঁদের প্রাণের মূল্য এঁদের কাছে বিন্দুমাত্র আছে বলে মনে হয় না।
প্রশ্ন জাগে যে, সরকার পুজোর সময় ক্লাবগুলিকে ষাট হাজার টাকা অনুদান দিতে সক্ষম, কিন্তু ডেঙ্গির প্রকোপ কমানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে প্রয়োজনীয় অর্থ সঠিক ভাবে খরচ করতে এত অক্ষমতা বা ঔদাসীন্য প্রকাশ পায় কেন? কিছু ট্যাবলো বার করে আর ফ্লেক্স টাঙিয়ে জনগণকে সতর্ক করার চেষ্টাই কি মশা মারার একমাত্র উপায়? কড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও তীক্ষ্ণ নজরদারির ভিত্তিতে ওয়ার্ডভিত্তিক সঠিক ও নিয়মিত কাজের মূল্যায়নের মাধ্যমে ডেঙ্গি দমন করা কি এতটাই অসম্ভব কাজ? সমস্ত রাজনৈতিক ভেদাভেদ ও বিরোধিতা ভুলে অবিলম্বে সরকার ও বিরোধী পক্ষের মানুষজনকে যৌথ উদ্যোগে ডেঙ্গি সচেতনতা বৃদ্ধি ও ডেঙ্গি আক্রান্তের হার কমিয়ে আনার কাজে ব্রতী হওয়া প্রয়োজন।
শান্তনু ঘোষ, শিবপুর, হাওড়া পুরনো প্রথা
‘লাইফ সার্টিফিকেট জমা অ্যাপেও’ (২৪-১১) প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। প্রতি বছর এই নভেম্বর মাসে আমাকে বেঁচে থাকার প্রমাণ পোস্ট অফিসে দিতে হয়। না হলে পেনশন বন্ধ হয়ে যাবে। এ দিকে আমার বয়স নব্বইয়ের কাছাকাছি। শারীরিক সামর্থ্য কমে আসছে। ফলে, পোস্ট অফিসে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আগে পোস্ট অফিসের কোনও কর্মচারীকে বাড়িতে ডেকে সামনে সই করলে হয়ে যেত। শুনলাম, সেটা নাকি উঠে গিয়েছে। বারুইপুর পোস্ট অফিস বলেছে, এ বার বাড়ি বসে নিজে নিজে অনলাইনে প্রমাণপত্র দাখিল করা যাবে মোবাইল থেকেই। এতে আঙুলের ছাপ না দিতে পারলেও মুখের ছবি দিলেও হবে। কিন্তু আমার মতো মোবাইলের অ-আ-ক-খ না জানা প্রবীণ নাগরিকদের পক্ষে কি তা সম্ভব? শুনেছি, অনেক ডাক-সেবকরা নাকি বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজটি করছেন। কিন্তু পোস্ট অফিসের কাছ থেকে তেমন কোনও খবর পাইনি। পেনশনারদের জন্য পুরনো প্রথা চালু করলে শেষের দিনগুলো একটু শান্তিতে কাটাতে পারতাম।
অন্নপূর্ণা খাঁ, সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
হোর্ডিং জট
মাস দুয়েক আগে দুর্গাপুজো মিটে গেলেও তার তোরণ, হোর্ডিং, এখনও খুঁজলে টালা থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত চোখে পড়বেই। এই সংবাদপত্রে ‘বহাল তবিয়তে’ শীর্ষক দু’টি ছবি এবং ‘দু’মাস পরেও রাস্তা জুড়ে রয়ে গিয়েছে পুজোর হোর্ডিং, তোরণ’ (১০-১২) শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ে আশ্চর্য হয়ে গেলাম। কেন পুজো মিটে গেলে সেগুলি তড়িঘড়ি খুলে ফেলা হবে না? এ ব্যাপারে মাননীয় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যদিও প্রতিবেদনে পড়লাম, মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার বলেছেন যে, শহরের মূল রাস্তাগুলিতে কোনও হোর্ডিং নেই। যেগুলি রয়েছে, সেগুলির সংখ্যা খুবই নগণ্য। এবং দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে। তা সত্ত্বেও প্রশ্ন থেকে যায়, পুরসভার এত দিনের উদাসীনতা নিয়ে।
গৌতম মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-১০১
কিসের সমস্যা
গত কয়েক বছরে ভারতীয় রেলের সৌজন্যে আমাদের শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বজবজ লাইনের অনেক উন্নতি হয়েছে। বজবজ পর্যন্ত ডবল লাইনের সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে সুন্দর প্ল্যাটফর্ম, বসার ব্যবস্থা, টিকিট কাটার যন্ত্র, ওভারব্রিজ, টয়লেট এবং জলের ব্যবস্থা— সবই অনেক সুন্দর হয়েছে। কিন্তু করোনা পর্ব থেকে কমেছে ট্রেনের সংখ্যা, যা আজ পর্যন্ত আর বাড়ল না! শুধু তা-ই নয়, এখনও সকালের ব্যস্ত সময়ে ন’বগির ‘বজবজ নৈহাটি’ লোকাল চলে ভিড়ে ঠাসা অবস্থায়। ওটাকে আর বারো বগির করা গেল না! মনে হয় না, শিয়ালদহ ও হাওড়ায় আর কোনও ন’বগির লোকাল ট্রেন আছে।
আরও দুর্ভাগ্যজনক, প্রতি দিন সকালের ব্যস্ত সময়ে আমাদের বজবজ লোকাল বালিগঞ্জ স্টেশনে প্রবেশের আগে পাঁচ থেকে পনেরো মিনিট পর্যন্ত সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকে। নিত্যযাত্রীদের দেরি হওয়া অবধারিত। জানি না, বেলার দিকে পরবর্তী ট্রেনের যাত্রীদেরও একই রকম দুর্ভোগ পোহাতে হয় কি না। এ যেন একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। সিগন্যাল ব্যবস্থার কত উন্নতির কথা শুনেছি। বুঝি না, বালিগঞ্জ স্টেশনে সমস্যা কোথায়? কে এর জন্য দায়ী?
শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-১৪১
স্বপ্নভঙ্গ
‘স্বাস্থ্যসাথীর অপব্যবহার রুখতে কঠোর হতে, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর’ (২২-১১) প্রসঙ্গে এক জন সাধারণ নাগরিক হিসাবে বলতে চাই, মুখ্যমন্ত্রী যা-ই বলুন, বেশির ভাগ গরিব মানুষ, যাঁদের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তেমন ওঠাবসা বা জানাশোনা নেই, তাঁদের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ সম্বন্ধে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা খুবই হতাশাজনক। বেশির ভাগ নার্সিংহোম বলে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ভর্তি করা যাবে, তবে সরকার এত কম টাকা দেয় ও টাকা দিতে দেরি করে যে, কিছু অতিরিক্ত টাকা পেলে আমাদের সঠিক পরিষেবা দিতে সুবিধা হয়। এই অতিরিক্ত টাকার পরিমাণ পাঁচ থেকে কুড়ি হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। অগত্যা রোগীরা তাতেই রাজি হয়ে যান। কলকাতার বড় বেসরকারি হাসপাতাল সরাসরি রোগী ফেরত না দিয়ে বলে ‘বেড নেই’। সম্প্রতি এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য সচিবকে বলেছেন, শীত পড়ে গিয়েছে, চাদর মুড়ি দিয়ে রোগী সেজে লাইনে দাঁড়ান। সত্যিই এ রকম করা প্রয়োজন, যদিও তিনি একা পারবেন না। জেলায় জনা দশেক অফিসারকে এমন নির্দেশ দিলে কাজ হতে পারে। সরকারি প্রকল্প সার্থক করতে পুরস্কার তিরস্কার এবং চাটুকার-বিহীন নীতি অবিলম্বে চালু করা প্রয়োজন। অন্যথায়, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
মুসা আলি শেখ, কৃষ্ণনগর, নদিয়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy