Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: এঁরা বিদায় নিলেন

‘ভূতবিদ্যা পড়াতে তৈরি বিএইচইউ’ (২৮-১২) শীর্ষক সংবাদ পড়ে, একই সঙ্গে বিস্মিত ও আতঙ্কিত বোধ করছি। সাইকোথেরাপির অংশ হিসেবে এই ডিপ্লোমা কোর্সটি পড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০০:০২
Share: Save:

‘বিদায়’ (৩১-১২) প্রসঙ্গে বলি, ২০১৯-এ আরও যাঁরা চলে গেলেন, তাঁরা হলেন অভিনেত্রী কণিকা মজুমদার, সবিতা চট্টোপাধ্যায় (বসু), গীতা সিদ্ধার্থ, অভিনেতা রমেন রায়চৌধুরী, নিমু ভৌমিক, লোকসঙ্গীত শিল্পী অমর পাল (ছবিতে), সুরকার খৈয়াম, প্রযোজক পরিচালক জে ওমপ্রকাশ, প্রযোজক রাজকুমার বরজাতিয়া, অশোক সুরানা, পাকিস্তানের লেগস্পিনার আব্দুল কাদির।

হীরালাল শীল

কলকাতা-১২

ভূতবিদ্যা

‘ভূতবিদ্যা পড়াতে তৈরি বিএইচইউ’ (২৮-১২) শীর্ষক সংবাদ পড়ে, একই সঙ্গে বিস্মিত ও আতঙ্কিত বোধ করছি। সাইকোথেরাপির অংশ হিসেবে এই ডিপ্লোমা কোর্সটি পড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘‘যে সমস্ত মানসিক রোগের কারণ জানা যায় না,... সেই সব ক্ষেত্রে ভূতবিদ্যা আয়ুর্বেদিক উপায়ে সমাধানের পথ দেখাবে’’, জানিয়েছেন আয়ুর্বেদ বিভাগের ডিন। এক হাতে সেলফোন, অন্য দিকে তন্ত্র-মন্ত্র-মারণ-উচাটন-জ্যোতিষ বিশ্বাস নিয়ে ঘর করা ভারতবাসী সরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় ভূতবিদ্যা চর্চায় উৎসাহিত হবে বইকি! এই ভূতবিদ্যা কি প্যারাসাইকোলজি? যদি তা হয়, নির্দ্বিধায় বলা চলে তার সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনও সম্পর্ক নেই। কেননা পঞ্চেন্দ্রিয়ের বাইরে ষষ্ঠেন্দ্রিয় (extra-sensory perception, সংক্ষেপে E.S.P)-র অস্তিত্ব বিজ্ঞান স্বীকার করে না। যেমন ঘোড়ার ডিমের অমলেটের গুণাগুণ নিয়ে কেউ দিস্তা দিস্তা লিখলেও তা গবেষণা হয়ে ওঠে না।

সরিৎশেখর দাস

নোনা চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর

বিবিসি বিতর্ক

বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এই জানুয়ারি মাস থেকে ছ’মাসের ভূতবিজ্ঞান শিক্ষাক্রম চালু করতে চলেছে। এই প্রসঙ্গে বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত একটি নিবেদন নিয়ে বিতর্কের অবতারণা হয়েছে। নিবেদনের শীর্ষনামে বলা হয়েছে: “ভূতবিদ্যা: ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ডাক্তারদের সেই সব রোগীর চিকিৎসা করবে, যাঁরা প্রেতাত্মা দেখেছেন বলে জানাবেন এবং যাঁদের উপর প্রেতাত্মা ভর করেছে”। সংস্কৃত থেকে ভূতবিদ্যা কথার বিকৃত অনুবাদ হয়েছে বলে প্রতিবাদ করেছেন ব্রিটিশ হিন্দু প্রেস অ্যাসোসিয়েশন। তাঁরা জানিয়েছেন, মনোরোগের চিকিৎসার সঙ্গে প্রেতাত্মাবিদ্যাকে বিবিসি গুলিয়ে ফেলেছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব হিন্দু টেম্পলস, ইউকে-র সাধারণ সম্পাদক সতীশ শর্মা অভিযোগ করেছেন, ভূতবিদ্যার অযথাযথ এবং চাঞ্চল্যকর অনুবাদ করে বিবিসি ভারত এবং হিন্দুত্বকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিদ্রুপ করার প্রয়াস করেছে। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ুর্বেদ বিভাগের ডিন জানিয়েছেন, ভূতবিদ্যা কোনও ভৌতিক বিষয় নয়। তিনি আরও বলেছেন, মানুষের সমস্ত রোগের শতকরা ৬৬ ভাগ স্বীকৃত অপকর্মের ফল। ভূতবিদ্যা অনুযায়ী মণি(রত্ন), মন্ত্র এবং ঔষধি—এই তিনের সমন্বয়ে চিকিৎসা করা হয়।

ভূতবিদ্যা বা ভূতবিজ্ঞান শব্দ দু’টি সংস্কৃত থেকে বাংলা ভাষায় এসেছে। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ অনুযায়ী সমার্থক এই দু’টি শব্দের অর্থ লেখা আছে ‘পিশাচাদিনিবারণার্থ বিদ্যা’। ঝালুকবাড়ি, অসম-স্থিত সরকারি আয়ুর্বেদ কলেজের অধ্যাপক এবং সংহিতা ও সিদ্ধান্ত বিভাগের প্রধান খগেন বসুমাতারি এবং আরও অনেকে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব আয়ুর্বেদ-এ একটি নিবন্ধে ভূতবিদ্যার সংজ্ঞা দিয়েছেন, “আয়ুর্বেদের যে শাখা দেব, দৈত্য, গন্ধর্ব,যক্ষ, রাক্ষস, পিশাচ, নাগ ইত্যাদির কারণে যে-সব রোগ হয় তার চিকিৎসা সম্বন্ধে শিক্ষা দেয় তাকে ভূতবিদ্যা বলে”। “এবং চিকিৎসার জন্য কৃত শান্তিপথ, বলিপ্রদান, হবন ইত্যাদিকেও ভূতবিদ্যা বলে” (সুশ্রুত/বেদোৎপত্তি)। শস্ত্রকর্ম (চিকিৎসা)-র আগে রোগীকে ভূত থেকে রক্ষা করতে হবে। এর জন্য রোগীর গায়ে মন্ত্র পড়ে জলের ছিটে দিতে হবে।

এই রকম আরও অনেক প্রকার চিকিৎসার নিদান আছে যা আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে মেনে নেওয়া কঠিন।

আভিধানিক এবং আয়ুর্বেদ শাস্ত্রানুযায়ী ভূত শব্দের যে অর্থ আমরা পেলাম, তাতে কি মনে হয়, বিবিসি অনলাইনের ব্যাখ্যা খুবই অন্যায্য হয়েছে! আর ডিন-মহাশয়ের দেওয়া ব্যাখ্যাও কি বিজ্ঞানসম্মত! আয়ুর্বেদ আমাদের দেশের একটি স্বীকৃত শিক্ষাক্রম। তাকে পরিশীলিত করে না তুলে, অন্ধ হিন্দুত্বের বাঁধনে রেখে এবং হঠাৎ ‘ভূতবিদ্যা’ চালু করে কি মনোরোগীদের কি ঠিক চিকিৎসা করা যাবে”? অন্ধ হিন্দুত্ববাদীরা মনে রাখুন, হিন্দুত্ববাদের অর্থ পিছিয়ে যাওয়া নয়।

পঙ্কজ কুমার চট্টোপাধ্যায়

খড়দহ, উত্তর ২৪ পরগনা

কাটমানি

কিছু দিন বন্ধ থাকার পর আবার কাটমানি এবং তোলাবাজির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। অতি সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের একটি স্কিমে দু’বার টেন্ডার নোটিস করা সত্ত্বেও স্থানীয় নেতাদের কাটমানি চাইবার ভয়ে কেউ টেন্ডারে অংশ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। আবার বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়রে একটি কারখানার মালিকের থেকে তোলা চেয়ে, তা না পেয়ে, কারখানার মূল প্রবেশপথ বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছিল তোলাবাজরা। পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও ফল না হওয়ায়, নিজে বেড়া খুলতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে কারখানা মালিক মার খান। বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক উদাসীনতার সমালোচনা করা হয়। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। অবশেষে পুলিশ নড়েচড়ে বসে। তাদের উদ্যোগে বেড়া সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সর্বশেষ খবর। যদিও তোলাবাজদের গ্রেফতারির কোনও খবর নেই।

দু’টি ঘটনা থেকে প্রশ্ন জাগে, গত লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খেয়ে শাসক দলের সর্বোচ্চ স্তর থেকে কাটমানি এবং তোলাবাজি বন্ধ করার জন্য যে ভাবে প্রচার শুরু হয়েছিল, এমনকি কাটমানির টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা সত্যিই কি বন্ধ হয়েছে? মনে হচ্ছে, পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে তোলাবাজি সাময়িক সুপ্ত অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে শাসক দল ভাল ফল করায় আবার তা মাথা তোলার চেষ্টা করছে। তোলাবাজরা তাদের চালু অভ্যাস ত্যাগ করবে না। এমনকি আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করাও তাদের কাছে ভীষণ কষ্টদায়ক।

কৃষ্ণা কারফা

বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া

কেন পয়লা?

নববর্ষের প্রথম দিনে ভারত তথা গোটা বিশ্বে শিশু জন্মানোর মাত্রাতিরিক্ত হার চোখে পড়ার মতো। এ বছর তাতে নতুন সংযোজন, চিনকে হারিয়ে ভারতের প্রথম হওয়া (‘নববর্ষের দিন শিশুর জন্মে চিনকে ছাপিয়ে গেল ভারত’, ৩-১)। লক্ষণীয়, পয়লা জানুয়ারি সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সন্তানসম্ভবা মা, তাঁর পরিবার থেকে শুরু করে গাইনোকলজিস্টদের ব্যস্ততা তুঙ্গে থাকে। পয়লা জানুয়ারি সিজ়ারিয়ানের জন্য আগে থেকেই বিভিন্ন হাসপাতালের বেড ভর্তি হয়ে যায়। যে শিশুর জন্ম নেওয়ার স্বাভাবিক তারিখ ছিল জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কিংবা ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে, তাকে এক প্রকার জোর করে জন্মাতে বাধ্য করা হয় নববর্ষের প্রথম দিনে। সন্তানটিকে ধরেবেঁধে পয়লা জানুয়ারিতে কেক কাটানোর জন্য প্রস্তুত করে কার কী লাভ হল?

আরও একটা ব্যাপার অাছে। জ্যোতিষীরা তো মানুষের ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে জন্মের দিনক্ষণকে খুব গুরুত্ব দেন, তার ভিত্তিতেই ‘ছক’ তৈরি করেন। যে শিশুর স্বাভাবিক জন্ম জানুয়ারির মাঝামাঝি বা ডিসেম্বরের শেষে হওয়ার কথা ছিল, কাগজে-কলমে তার জন্ম যদি হয় ১ জানুয়ারি, জ্যোতিষ গুলিয়ে যাবে না?

প্রণয় ঘোষ

কালনা, পূর্ব বর্ধমান

অন্য বিষয়গুলি:

Letter to the Editor Benaras Hindu University Amar Pal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy