দিল্লির ভোটে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছে ঠিকই, কিন্তু প্রশ্ন হল, বিজেপির আদর্শ কি অচ্ছুত বলে গণ্য হয়েছে?
দিল্লিতে মূলত শাহিন বাগের আন্দোলনকে ভোট প্রচারের কৌশল করে বিজেপির ভরাডুবি হলেও, গোটা ভারত জুড়ে ক্রমবর্ধমান হিন্দুত্বের যে-নিশান তারা উড়িয়েছে, তা দিল্লিতে আপ জেতার পরেও অক্ষত রইল। বিজেপি জিতলে তাদের সদর দফতর থেকে তিন বারের বদলে ন’বার উচ্চারিত হত ‘জয় শ্রীরাম’, আর আপ জেতায় উচ্চারিত হল ‘জয় হনুমান’। এমনকি জেতা নিশ্চিত হতেই অরবিন্দ কেজরীবাল হনুমান মন্দিরে গিয়ে পুজোও দিয়েছেন। এ বার হয়তো কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সুপরামর্শ মেনে দিল্লির সমস্ত স্কুল-কলেজে হনুমান চালিশা পড়া বাধ্যতামূলক হবে!
লক্ষণীয়, ভোট প্রচারেও শাহিন বাগের আন্দোলন সম্পর্কে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছিলেন কেজরী। শোনা যাচ্ছে, পিকের পরামর্শেই নাকি শাহিন বাগ নিয়ে কথা না বলে, পাঁচ বছরের উন্নয়নের কথা বলে গিয়েছেন কেজরীবাল। এত সব জটিল অঙ্কের মধ্যে না গিয়েও জানতে ইচ্ছে করে, ভোটের শেষে শাহিন বাগ কী পেল? উগ্র হিন্দুত্বের বদলে মৃদু হিন্দুত্ব?
রামের না হোক, রামের ভক্তের তো জয় হয়েছে— এটাই বা বিজেপি দলের পক্ষে কী এমন কম কথা!
প্রণয় ঘোষ
কালনা, পূর্ব বর্ধমান
চিলি চিকেন
পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ স্কুলেই সরস্বতী পুজো হয়। সেই উপলক্ষে ছাত্রছাত্রীদের জন্য আনন্দভোজনের ব্যবস্থা থাকে। আগে বেশির ভাগ স্কুলেই খিচুড়ি-আলুরদম জাতীয় খাবার হত। ইদানীং কিছু বিদ্যালয়ে ফ্রায়েড রাইসের সঙ্গে চিলি চিকেন বা কষা মাংস খাওয়ানো হচ্ছে।
সরস্বতী দেবীর শ্বেত বসনটি পবিত্রতা, জ্ঞান ও শান্তির প্রতীকও বটে। দেবীর বাহন হংস। সর্বজীবে অভয়দানই তো তাঁর উদ্দেশ্য। সরস্বতী পুজো উপলক্ষেই নিরীহ প্রাণী হত্যা করে তাদের মাংস খাওয়ালে কী বার্তা যাবে? কী শিখবে শিশুরা? এর পরের দিন শ্রেণিকক্ষে গিয়ে কেমন করে এক জন শিক্ষক পড়াবেন, ‘‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’’?
সে দিন বিশেষ কাজে বারাসতের এক নামকরা বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি, নীচতলার একটি ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি মেরে, ভিতরে কী যেন দেখছে বাচ্চারা। দেখি, ঘরের মধ্যে গিজগিজ করছে জ্যান্ত মুরগি। কী ব্যাপার? পরের দিন ছেলেদের সরস্বতী পুজো উপলক্ষে খাওয়ানো হবে।
ছাত্রদের চার পিরিয়ডের পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হল, কারণ কিছু ক্ষণ পর থেকেই প্রস্তুতি শুরু হবে কালকের খাওয়া-দাওয়ার, কাটা শুরু হবে মুরগিগুলোকে। কাজ মিটিয়ে আমি যখন ওই বিদ্যালয় ছেড়ে বেরোলাম, শুরু হয়ে গিয়েছে মুরগি কাটা।
সুমন ভট্টাচার্য
মধ্যমগ্রাম বাজার, উত্তর ২৪ পরগনা
পেনশন, সম্মান
ভারতীয় সংবিধান অনুসারে ‘সামাজিক সুরক্ষা’, ‘অক্ষম’ ও ‘বার্ধক্য পেনশন’ যুগ্ম তালিকাভুক্ত। অর্থাৎ কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়েই এই বিষয়ে দায়বদ্ধ। ১৯৯৫ সালে জাতীয় সামাজিক সহায়তা প্রোগ্রামের সূচনায় মাসিক ৭৫ টাকা বার্ধক্য পেনশন চালু হয়। ২০০৭ সালে বার্ধক্য পেনশন নাম পরিবর্তন করে ‘ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় বার্ধক্য পেনশন’ করা হয়। ২০০৯-এ বিধবা ও অক্ষমদের জন্যেও পেনশন চালু হয়। পরে ২০০৬ ও ২০১১-তে পেনশন বাড়ে ২০০ ও ৫০০ টাকা। সেই থেকে বাড়-বৃদ্ধিহীন পেনশন আজও চলছে।
দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী নাগরিকদের পেনশন পুনর্বিবেচনার উদ্দেশ্যে রুরাল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রক নভেম্বর ২০১২-তে টাস্ক ফোর্স গঠন করে। তাদের সুপারিশ ছিল ৬০-৭৯ বয়স্কদের পেনশন ১০০ টাকা বৃদ্ধি এবং মাসিক পেনশনকে মূল্যবৃদ্ধি সূচকের সঙ্গে যুক্ত করা। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রধানমন্ত্রী সামাজিক সুরক্ষা যোজনা’ করার প্রস্তাবও ছিল।
১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে জনস্বার্থ মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, প্রবীণ মানুষের অধিকার স্বীকার ও অধিকার রক্ষায় এবং বার্ধক্য পেনশনের বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়কে অর্থনৈতিক ক্ষমতা অনুসারে অবিলম্বে বাস্তবানুগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
তিন কোটি বিপিএল প্রবীণদের সুরক্ষা বলতে প্রথমেই মনে আসে আর্থিক সুরক্ষার ভাবনা, অর্থাৎ সম্মানজনক ভাবে বেঁচে থাকার পেনশন। কিন্তু বছরের পর বছর বরাদ্দকৃত অর্থে পেনশন বৃদ্ধির কোনও গল্প থাকে না। প্রতি বছর এই স্কিমে বরাদ্দ কমছে। ২০১৪-১৫’য় বাজেট বরাদ্দ ১০,৬৩৫ কোটি, ২০১৬-১৭’য় ৮৮৫১কোটি, ২০১৭-১৮’য় ৮৬৭৯ কোটি, ২০১৮-১৯’এ ৮৪০৮কোটি এবং ২০১৯-২০’তে ৪৮১৫ কোটি (নভেম্বর পর্যন্ত)। এই বছরে এই প্রথম নিয়মিত বরাদ্দের বাইরে ৯৫০০ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ হয়েছে প্রবীণ ও বিকলাঙ্গদের জন্যে। প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল অর্থে কার সম্মান রক্ষা হবে, কেন্দ্রীয় সরকারই বলতে পারে।
অতীশ ঘোষ
মাখলা, হুগলি
নতুন হারে
যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারির আগে অবসর নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অপশন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে অফিশিয়ালি হিসেব করে নতুন হারে পেনশন দেওয়ার কথা। তা সত্ত্বেও কেন তাঁরা জানুয়ারির পেনশন পুরনো হারেই পেলেন? এটা কি সরকারি ব্যর্থতা নয়? দাবি জানাব, দ্রুত নতুন হারে পেনশন দানের ব্যবস্থা করা হোক।
কার্তিক সাহা
কলকাতা-১২
এঁদের কী হবে
গত ২৪ জানুয়ারি রাজ্য প্যারামেডিক্যাল কাউন্সিলে নাম নথিভুক্ত করা শুরু হয়েছে। শুধুমাত্র রাজ্য স্টেট ফ্যাকাল্টি ও রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যাঁরা পাশ করেছেন কেবলমাত্র তাঁরাই নাম নথিভুক্তির সুযোগ পাবেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী, এ রাজ্যের বা অন্য রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে প্যারামেডিক্যাল পাশ করেছেন, তাঁরা যদি নাম নথিভুক্তির সুযোগ না পান, তা হলে হাজার হাজার প্যারামেডিক ছাত্রছাত্রী, যাঁরা নানা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন ধরে কর্মরত, কাজ হারাবেন। শুধু তা-ই নয়, হাজার হাজার পাঠরত ছাত্রছাত্রী যাঁরা অন্যান্য রাজ্যে প্যারামেডিক পাঠরত, তাঁরাও অথৈ জলে পড়বেন।
প্রিয়ব্রত ভদ্র
শান্তিপুর, নদিয়া
টস ভাগ্য
যদিও ক্রীড়ানৈপুণ্যই শেষ কথা, তবে ক্রিকেটের সামগ্রিক ফলাফলে পিচ ও আউটফিল্ডের চরিত্র, হাওয়ার গতিবেগ ও অভিমুখ, বাতাসের আর্দ্রতা ইত্যাদি খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। অনেক ক্ষেত্রেই ম্যাচ হারার জন্য টসে হারাকে দায়ী করতে শোনা গিয়েছে।
কিন্তু একটি সিরিজ়ে একাধিক ম্যাচের ক্ষেত্রে যদি এই ‘টস-ভাগ্য’কে দু’দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া যায়, হয়তো কিছুটা সুবিচার করা যেতে পারে। সিরিজ়ের প্রথম ম্যাচে টস হোক। যিনি জিতবেন, ঠিক করুন, ব্যাটিং নেবেন না ফিল্ডিং। পরের ম্যাচে, আগের ম্যাচের টসে হারা অধিনায়ককে ঠিক করতে দেওয়া হোক, তিনি ব্যাটিং নেবেন না ফিল্ডিং। তৃতীয় ম্যাচে আবার প্রথম ম্যাচের টস-জয়ী অধিনায়ক ঠিক করুন। এই নিয়ম সিরিজ় শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে। অবশ্য, সিরিজ়ে যদি বিজোড় সংখ্যক ম্যাচ থাকে, তা হলে টস-ভাগ্যকে দু’দলের মধ্যে নিখুঁত ভাবে ভাগ করা যাবে না। তবে সে ক্ষেত্রে প্রথম ম্যাচে টস-জয়ী দল একটিমাত্র বেশি সুযোগ পাবে, যা বর্তমান নিয়মের চেয়ে ভাল।
চঞ্চল পাল
কলকাতা-৪
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy