‘অস্ট্রেলিয়ায় উট নিধন নিয়ে নিন্দা’ (৯-১) শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ে আরও এক বার অসহায় পশুদের হত্যালীলায় স্তম্ভিত হলাম। ‘গাধা কি লুপ্ত হবে?’ (১৩-১২) শীর্ষক চিঠিতে পড়েছিলাম, ঔষধ তৈরির জন্য চিন দেশ কর্তৃক অবলীলায় অতি নিরীহ প্রাণী ‘গাধা’দের হত্যা করার কথা। এ বারে অস্ট্রেলিয়ায় দশ হাজার উটকে গুলি করে মারার কথা জেনে অবাক হয়ে গেলাম। বলা হচ্ছে, তারা অনেক বেশি জল খেয়ে নেয় বলে, দাবানল-কবলিত অঞ্চলে খরার আশঙ্কা কমাতে তাদের মেরে ফেলা ছাড়া গত্যন্তর নেই। জলপান তো সব প্রাণীর ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক নিয়ম। অথচ এই নিরীহ প্রাণীর ক্ষেত্রে সেটা চরম অপরাধ! সমস্যা সমাধানের জন্য বিকল্প কোনও পন্থার আবিষ্কার না করে নিরীহ প্রাণীদের নিধনই তবে শেষ পথ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে? পশুপ্রেমী সংগঠনগুলোও তো চুপ।
উজ্জ্বল গুপ্ত
কলকাতা-১৫৭
মৃত্যুমিছিল
বিদ্যালয় যাওয়ার পথের পাশে দেখলাম একটা মরা শেয়াল পড়ে রয়েছে। তার পর দেখি, অনেকগুলো শেয়ালই মরে পড়ে রয়েছে, সঙ্গে কিছু মেঠো ইঁদুরও। এই সময় আদিবাসী সমাজের বাঁধনা পরব চলে, তাই এই সম্প্রদায়ের কিছু লোক তির-ধনুক নিয়ে মেঠো জীবজন্তু শিকার করেন। কিন্তু তাঁরা তো জন্তুগুলোর মাংস খান, রাস্তায় মেরে ফেলে রাখেন না।
পরে এই মৃত্যুমিছিলের প্রকৃত খবর জানলাম। মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি এলাকায় রবিশস্য চাষের এখন ভরা মরসুম। বন্য পশুদের মুখ থেকে ফসল বাঁচাতে চাষি তাঁর জমিতে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রাখেন, যাতে এই প্রাণীগুলো খেতের ফসল খেতে না পারে। এতে ফসল না-হয় বাঁচল, কিন্তু এই পশুগুলো মরে গেল, কে এর দায় নেবে?
ভাস্কর দেবনাথ
নবপল্লি, বহরমপুর
ছুটি বলে?
৩১ ডিসেম্বর জব্বলপুর থেকে ডাউন শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেসে ফেরার সময় দেখলাম, নতুন বছরের প্রথম দিন— এই অজুহাতে গোটা ট্রেনের কোনও এসি কামরা পরিষ্কার করা হল না, সবাই নাকি ছুটিতে! দু’রাত ধরে আসা যাত্রী-ঠাসা ওই ট্রেনের বাথরুমের অবস্থা কী ছিল তা সহজেই বোঝা যায়, স্লিপার কোচের অবস্থা তো কহতব্য নয়। হাজার অনুরোধ, নালিশের ভয় দেখানোতেও অবস্থা পাল্টায়নি। সাকুল্যে এক জন কোচ অ্যাটেন্ড্যান্ট ছাড়া কোনও রেল বা সুরক্ষা কর্মীরও দেখা মেলেনি। ভাড়া বাড়ছে, কিন্তু রেল পরিষেবার হাল কবে পাল্টাবে?
অরিত্র মুখোপাধ্যায়
চাতরা, হুগলি
‘দুরন্ত’ যাত্রা
কিছু দিন আগে মুম্বই থেকে কলকাতা ফেরার সময় মুম্বই-হাওড়া দুরন্ত-র বাতানুকূল প্রথম শ্রেণির টিকিট কেটে ফেললাম। লটবহর নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করে আমাদের নির্দিষ্ট বগির সামনে এসে হকচকিয়ে গেলাম। অতি পুরাতন, শুরুর সেই জবরজং রঙে রঞ্জিত একটি বগি। বাতানুকূল প্রথম শ্রেণি বা ওই ধরনের কোনও কিছুই লেখা নেই। যাত্রী সহায়ক কোনও রেলকর্মীও নেই।
চার বার্থের কামরা। ঢুকে আলো জ্বালাতেই এক ঝাঁক মশা উড়ে গেল। আমাদের দু’জনেরই লোয়ার বার্থ। অতি পুরনো মলিন তেল চিটচিটে মেরুন রঙের কাপড়ে মোড়া। সিলিঙে ছোপ ছোপ ময়লা। দেওয়ালের অবস্থাও তথৈবচ। মেঝের এখানে ওখানে জমাট বাঁধা ধুলোর আস্তরণ।
উপরে ওঠার জন্য রয়েছে ভিক্টরি স্ট্যান্ডের মতো কাঠের অপ্রশস্ত সিঁড়ি। দেওয়াল ও বার্থের আট-দশ ইঞ্চি ফাঁক দিয়ে শরীর গলিয়ে উপরে উঠতে হবে। দুবলা পাতলা বালক-বালিকা বা তরুণ-তরুণীদের পক্ষে তা সম্ভব হলেও, অন্যদের পক্ষে একক প্রচেষ্টায় এই দোতলায় ওঠা খুবই কষ্টকর বিষয়।
শৌচালয়ের প্রসঙ্গে আসি। তথাকথিত বায়ো-টয়লেটে প্রবেশ দুঃসাধ্য। ঝাঁকুনিতে ভেতরের সঞ্চিত বর্জ্য পদার্থ মাঝে মাঝে মেঝেতে উঠে আসে, স্বাভাবিক অবস্থায় যা প্যানের জলে ভাসমান। বগিতে একটি স্নানাগারও আছে। মাথার উপর ভাঙা শাওয়ার। অনবরত জল পড়ছে। জলপ্রবাহ ঠেকিয়ে রাখার জন্য শাওয়ার প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়ে মুড়ে রাখা হলেও এ দিক ও দিক দিয়ে জল ছিটকে পড়ছে। মেঝে একেবারে জলময়।
শৌচালয় ভিন্ন আট কামরার বগিতে কোথাও কোনও ওয়াশ বেসিন নেই। হাতমুখ ধুতেও সেই অপরিচ্ছন্ন শৌচালয়ে প্রবেশ করতে হবে। যে সব জায়গায় ওয়াশ বেসিন থাকার কথা, সেখানে বড় বড় বস্তায় ডাঁই করে রাখা আছে বিভিন্ন বগির পরিত্যক্ত কাপ-প্লেট, প্যাকেট, জলের বোতল ইত্যাদি।
কৃষ্ণদাস সাহা
কলকাতা-৫২
পৃথক লাইন
কৃষিকাজে ব্যবহৃত সরকারি গভীর নলকূপ কেন্দ্রের ট্রান্সফর্মার পৃথক ও স্বতন্ত্র হওয়াই বাঞ্ছনীয়। যার সঙ্গে গ্রামের হাজার হাজার কৃষকের রুজি-রোজগার জড়িয়ে আছে, তার সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের লাইন জুড়ে দিলে, কৃষি সেচের জন্য ধারাবাহিক বিদ্যুৎ সংযোগে বিঘ্নের সৃষ্টি হতে পারে, বিষয়টি ডিসিএল কর্তৃপক্ষ একটু ভেবে দেখবেন।
দিলীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
বলাগড়, হুগলি
টিকিট কাটতে
পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখায় কল্যাণী সীমান্ত স্টেশনে একটি মাত্র টিকিট কাউন্টার রয়েছে। সেই কাউন্টারের বুকিং ক্লার্ক প্রতিটি ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকার পর কাউন্টার খোলেন। ফলে অধিকাংশ যাত্রী টিকিট কাটতে পারেন না। টিকিটের লাইন শেষ হওয়ার আগেই ট্রেন ছেড়ে চলে যায়। এ নিয়ে প্রতি দিন গোলমাল লেগেই থাকে। ওই স্টেশনে তিনটি বুকিং কাউন্টার, তবু রোজ একটি মাত্র কাউন্টারই খোলা হয়।
সুরজিৎ বিশ্বাস
কল্যাণী, নদিয়া
শিশু শ্রমিক
‘স্বাধীন দেশের আশি লক্ষ দাস’ (২৯-১২) শীর্ষক নিবন্ধ ও ‘শিশুশ্রম চলছে দেখলে ভিডিয়ো করার নির্দেশ’ (৪-১২) খবরের প্রেক্ষিতে জানাই, শিশু শ্রমিকদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় এনসিএলপি (ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার প্রজেক্ট) গড়ে উঠেছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রতিটি পুরসভায় ও কয়েকটি ব্লক মিলে মোট ৪৩টি স্কুল চালু আছে। ছাত্রদের মাসিক ভাতা ৪৫০ টাকা-সহ মিড-ডে মিল, পঠনপাঠনের সুব্যবস্থা, পোশাক-পরিচ্ছদ, নিজস্ব ব্যাঙ্ক পাশবই প্রভৃতি চালু আছে।
কিন্তু প্রশাসনিক ও অর্থ মন্ত্রকের উদাসীনতায় প্রকল্পটি ধীর গতিতে চলছে। শিশু শ্রমিক সার্ভে করে, শিশুদের স্কুলমুখী করে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে, শিক্ষকদের খুবই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। ছাত্রদের এবং শিক্ষকদের সুযোগসুবিধা সবই অনিয়মিত।
কিশোর কুমার সামন্ত
ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর
পিকনিক?
হাওড়া জেলার বলুহাটি গ্রামের শিবতলার মধ্যে কিছুটা জায়গা বড় পাঁচিল ও গেট দিয়ে আলাদা করে, বাগানবাড়ি তথা পিকনিক স্পট তৈরি হয়েছে। গত তিন-চার বছর ধরে নভেম্বর থেকে মার্চ অবধি প্রায় প্রতিটি রবিবার সেখানে দূর থেকে মানুষ এসে পিকনিক করেন। পিকনিকে আপত্তি নেই, কিন্তু প্রায় সকলেই এমন ভয়ানক জোরে গান বাজান সকাল ৮:৩০ থেকে বিকেল ৫:৩০ পর্যন্ত, আমরা শব্দ-শোষিত হয়ে দিন কাটাচ্ছি।
শম্পা শেঠ
বলুহাটি, হাওড়া
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy