আলিপুর ও চেতলার সংযোগরক্ষাকারী সেতুটির একদা নামকরণ করা হয়েছিল বাংলার নবজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত ও হিন্দু কলেজের প্রবাদপ্রতিম শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিয়োর নামে— ডিরোজিয়ো সেতু। সিএমডিএ নির্মিত এই সেতুটি ১৯৯২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। আলিপুরের দিক থেকে উঠতে বাঁ দিকে একটি প্রস্তরফলকে ইংরেজিতে লেখা ছিল সেই কথা। পাশে আর একটি ফলকে খোদাই করা ছিল ডিরোজিয়োর লেখা ‘ফ্রিডম টু দ্য স্লেভ’ নামক কবিতার আটটি ছত্র। লজ্জার কথা হচ্ছে বেশ কিছু দিন আগে ব্রিজ সারাইয়ের সুযোগে সেগুলি হাপিশ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সেই উদ্বোধনের সাক্ষ্য হিসেবে এখনও মলিন অবস্থায় রয়ে গিয়েছে চেতলার দিক থেকে সেতুতে ওঠার মুখে বাঁ দিকে বাংলায় লেখা একটি ফলক। আশ্চর্যের কথা হচ্ছে ঠিক তার সামনে দু’পা এগোলেই লোহার খুঁটিতে সিএমডিএ-র লেখা সেতুর নামফলকে লেখা হয়েছে ‘দুর্গাপুর সেতু’। লোকে মুখে মুখে প্রচলিত পুরনো নাম বলতেই পারেন। প্রস্তরফলকে নির্মাতা হিসেবে নিজেদের নাম লিখে যেখানে উদ্বোধনকারীর নাম-সহ লেখা আছে ‘ডিরোজিয়ো সেতু’, সেখানে তারাই কী করে তার অন্য নাম লেখে? এ কি অজ্ঞতাপ্রসূত না উদ্দেশ্যপ্রণোদিত?
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর সেতুর উপর অসম্ভব চাপ পড়েছে। যে কোনও দিন ওটি নতুন করে মেরামত করার দরকার হবে। সেই সুযোগে ডিরোজিয়ো সেতু লেখা নামফলকটি সরিয়ে ফেলা হবে না তো? ঢাকঢোল বাজিয়ে তখন এ কালের মন্ত্রীদের কেউ মা ভবানী টবানী নাম দিয়ে নতুন করে উদ্বোধন করে দেবেন হয়তো। সংবাদপত্রে দেখি সাংবাদিকরাও এখন সেতুটিকে দুর্গাপুর সেতু নামেই লিখছেন। সুতরাং নতুন নামে নতুন করে উদ্বোধনের কাজ সিএমডিএ-র সঙ্গে সংবাদপত্রও খানিকটা এগিয়েই রেখেছে। আশঙ্কা হচ্ছে এখন নবনামে নবরূপে উদ্বোধন শুধু সময়ের অপেক্ষা। পথেঘাটে ডিরোজিয়োর নাম বলতে তো ওইটুকুই আছে। সেটাও কি জলাঞ্জলি যাবে?
শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-৬১
নীলরতনের নামে
পূর্ব রেলওয়ের শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ডায়মন্ড হারবার নিকটবর্তী নেতড়া স্টেশন সংলগ্ন (উত্তর-পূর্ব দিকে) এক ভগ্নপ্রায় জীর্ণ বাগানবাড়ি আছে। চিকিৎসা জগতের প্রবাদপুরুষ ডা. নীলরতন সরকারের বাগানবাড়ি এটি। এখান থেকে কমবেশি এক কিলোমিটার উত্তরে মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম। জন্মভিটারও ভগ্নদশা! ভারতীয় রেলের অন্য শাখার মতোই শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার একাধিক স্টেশনও ভারতমাতার বহু কৃতী সন্তানদের নামের গৌরব বহন করছে। সুভাষগ্রাম, বাঘাযতীন, কৃষ্ণমোহন হল্ট, নরেন্দ্রপুর, স্যর গুরুদাস ব্যানার্জি হল্ট, গুরুদাসনগর ইত্যাদি তেমনই স্টেশন। শেষোক্ত দুই স্টেশন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য (১৮৯০-১৮৯২) শিক্ষাবিদ স্যর গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিবাহী। এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য হল ডা. নীলরতন সরকারও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন (১৯১৯-১৯২১) এবং নেতড়ার অদূরেই ডায়মন্ড হারবারের নিকটতম স্টেশন গুরুদাসনগর যার নিকটবর্তী বড়িয়া গ্রামে স্যর গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের শৈশব কাটে। সুতরাং কিংবদন্তি চিকিৎসাশাস্ত্রী ডা. নীলরতন সরকারের নামাঙ্কিত যদি হয় তাঁর জন্মদাত্রী গ্রামের স্টেশন নেতড়া, তাতে ভারতীয় রেলওয়ের যে আরও গৌরব বাড়বে সন্দেহ নেই। ভারতীয় রেলওয়ে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, ডা. নীলরতন সরকার কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথা প্রাক্তনী সংগঠন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, স্থানীয় প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধি সবার কাছেই এই চিঠির মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা বা উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি। আগামী ১ অক্টোবর তাঁর ১৫৯তম জন্মদিন।
দীপ্তেশ মণ্ডল
চালুয়াড়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
সারানো হোক
শহরকে সুদৃশ্য করতে এলইডি ল্যাম্প সংবলিত সারিবদ্ধ বাতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে বিদ্রুপ করে একে একে বিকল হতে শুরু করল। এক বার বিকল হলে সারানোর নাম নেই। এ দিকে পুরনো স্তম্ভের বাতিগুলিও উধাও। বর্তমানে এগুলির অধিকাংশই গোড়া থেকে বিচ্যুত হয়ে বিপজ্জনক ভাবে ঝুঁকে আছে। বড় বিপদের অপেক্ষায় না থেকে এগুলি সারিয়ে তোলা যায় না?
নরেশ বিশ্বাস
বসিরহাট, উত্তর ২৪ পরগনা
দায় কার
সম্প্রতি গোল পার্ক থেকে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ একটা এস-৫ সরকারি বাসে উঠি। বাস নং ডব্লিউ বি-০৫-২৪৭৩। তার পর যথারীতি বাস আমাদের নিয়ে পৌঁছল স্ট্র্যান্ড রোড। এর মধ্যে, আমরা যখন প্রায় বড়বাজার স্টপের দিকে এগোচ্ছি তখনই প্রায় ১১:৩৫ নাগাদ দু’জন ট্রাফিক ইনস্পেক্টর বাসটিকে আটকালেন এবং ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরকে ডাকলেন। তার পর তাঁদের মধ্যে কী কথা হল জানি না। তার পর কন্ডাক্টর ফিরে এসে বাসের সব যাত্রীদের বললেন— এ বাস আর যাবে না, আপনারা সবাই অন্য বাসে উঠে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে যান। আমরা শুনে, কয়েক জন ট্রাফিক ইনস্পেক্টরের কাছে গিয়ে কারণ জানতে চাইলাম। তখন উনি বললেন যে ‘‘বাসের ড্রাইভারের কাছে বাসের কোনও কাগজ এবং তাঁর নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। আপনারা অন্য গাড়িতে করে চলে যান। এই গাড়ি যাবে না।’’ অগত্যা, আমরা প্রায় ৪০/৪৫ জন আবালবৃদ্ধবনিতা দুপুর রোদে সরকারি ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ সুন্দর ব্যবস্থার শিকার হলাম।
অনিন্দ্য কর
কলকাতা-৩২
এমন হয়নি
বীরভূম জেলার পাতায় প্রকাশিত ‘কৃষক বিক্ষোভে পথে আটকে মন্ত্রী’ (১৮-৮) শীর্ষক খবরে বলা হয়েছে আমাকে কৃষক বিক্ষোভের মুখে পড়ে দীর্ঘ ক্ষণ গাড়িতে বসে থাকতে হয়, আমাকে কালো পতাকা দেখানো হয়। এই সব তথ্য সম্পূর্ণ অসত্য। কারণ শিবপুরে কৃষক বিক্ষোভ হওয়ার অনেক পরে আমি সেই গ্রামে পৌঁছই। সে দিন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি ছিল দুই জায়গায়— কঙ্কালীতলা অঞ্চলে ও শিবপুরে। কঙ্কালীতলায় কর্মসূচি শেষ করে যখন শিবপুরে পৌঁছই তখন প্রশাসন বিক্ষোভ প্রশমিত করেছে ফলে গাড়িতে আটকে থাকা বা কালো পতাকা দেখানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি। এমনকি ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির রাত্রিবাসের পরিকল্পনা বাতিল করার কোনও কারণ ছিল না, কারণ সে দিন কোনও গ্রামেই রাত্রিবাসের কর্মসূচি ছিল না, কারণ তার আগের রাতেই ইলামবাজার থানার ঘুড়িষা গ্রামে রাত কাটাতে হয়েছিল। এই তথ্যটিও মিথ্যা।
চন্দ্রনাথ সিংহ
ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী, মৎস্য বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
প্রতিবেদকের উত্তর: ঘটনার সময় ওই জায়গায় আনন্দবাজার-সহ অন্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। সকলের সামনেই ঘটনাটি ঘটে। সেই ঘটনার ছবি ও ভিডিয়ো প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। জমিদাতারা সাবিরগঞ্জ ঢোকার রাস্তার উপরেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। কিছুটা দূরেই মন্ত্রীর গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। বিক্ষোভের কারণে তাঁরা এগোতে পারছিলেন না। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরানোর পরে মন্ত্রী নির্ধারিত সময়ের অনেকটা পরে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির জন্য সাবিরগঞ্জে পৌঁছন। ওই এলাকায় মন্ত্রীর রাত্রিবাসের খবর পাওয়া গিয়েছিল তৃণমূলের স্থানীয় কর্মী ও গ্রামবাসীদের কাছ থেকেই। মন্ত্রীর আবেগকে ক্ষুণ্ণ করা বা অসত্য সংবাদ পরিবেশন করার কোনও উদ্দেশ্যই ছিল না। তবু, মন্ত্রী কোনও কারণে ক্ষুব্ধ হলে আমরা দুঃখিত।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy